কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং-বললেন ইমিগ্র্যান্টদের স্বপ্নযাত্রা নিয়ে মঈন চৌধুরীর বইটি প্রকৃত অর্থে একটি প্রেমপত্র

gbn

হাকিকুল ইসলাম খোকন, 

ইমিগ্র্যান্টদের স্বপ্নযাত্রা নিয়ে  এটর্নি মঈন চৌধুরীর বইটি প্রকৃত অর্থে একটি প্রেমপত্র ।

দীর্ঘ দুই দশক যাবত আমেরিকায় ইমিগ্র্যান্টদের অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে নিরন্তরভাবে কর্মরত এটর্নী মঈন চৌধুরীর লেখা ‘দ্য রোড টু আমেরিকা : ইমিগ্রেশন হার্ডশিপ’ বইটি হচ্ছে ইমিগ্র্যান্টদের প্রতি সত্যিকারের ভালবাসার একটি পত্র (লাভ লেটার)। এটি হচ্ছে লাভ লেটার। এমন অভিমত পোষণ করেন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে বাংলাদেশী তথা এশিয়ানদের অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে পরিচিত কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং। গত ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫,সন্ধ্যা ৭টায় নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে নবান্ন পার্টি হলে গ্রন্থটির মোড়ক উম্মোচনী সমাবেশে বিশেষ সম্মানীত অতিথির বক্তব্যে গ্রেস মেং আরো উল্লেখ করেন, কুইন্স হচ্ছে সবচেয়ে বেশী ভাষা-ভাষি আর বর্ণ ও গোত্রের মানুষের আবাস ভ’মি সমগ্র আমেরিকায়। এই বহুজাতিক সমাজে বাংলাদেশীরা বিশেষ এক অবস্থানে উন্নীত হয়েছেন সততা-নিষ্ঠা আর দক্ষতার মাধ্যমে। এমন চমৎকার শান্তিপ্রিয় কম্যুনিটির একজন হলেন এটর্নি মঈন চৌধুরী। আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ এটর্নি মঈন চৌধুরীর বইয়ের প্রতি। কারণ এটি শুধুমাত্র একটি বই নয়, এটি এমন এক সময়ে প্রকাশিত হলো যখোন এই দেশের বহু মানুষ জটিল সংকটে নিপতিত এবং তাদের ধারণা থাকা উচিত কীভাবে তারা এহেন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন এবং সে সব বিষয়কেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে এই গ্রন্থে। আসলে এটি হচ্ছে ইমিগ্র্যান্ট কম্যুনিটির প্রতি ভালবাসার একটি পত্র-যা অনেকের বিপদ মুক্তির সহায়ক হতে পারে। আমি এই বইয়ের তথ্যসমূহ নিয়ে ওয়াশিংটন ডিসিতে আমার সহকর্মীগণের সাথে কথা বলবো-যাতে তারাও ইমিগ্র্যান্টদের সজাগ রাখতে সক্ষম হন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের চলমান দমন-পীড়নের প্রতি ইঙ্গিত করে ডেমক্র্যাটিক পার্টির এই কংগ্রেসওম্যান আরো বলেন, এখোন প্রকৃত অর্থেই বহু ইমিগ্র্যান্টের জন্যে কঠিন সময়, আপনি সাম্প্রতিক সময়ে তথা কয়েক মাস আগে এসে থাকুন অথবা ৩ প্রজন্মের পরিবারের সদস্য হউন, আমরা একটি প্রশাসনের অধীনে পড়েছি যখোন মনে হচ্ছে যে, আমরা এখনো আমেরিকান হতে পারিনি। এমনকি আমাদের পরিবারের কোন কোন সদস্য কিংবা বন্ধুরা এখনো আমেরিকান হতে পারেননি। এটর্নি মঈন চৌধুরী লিখেছেন কঠোর পরিশ্রমী ইমিগ্র্যান্টদের আমেরিকান হয়ে উঠার পথ-পরিক্রমার ধারাবিবরণী-যে অভিজ্ঞতা তিনি আইনী লড়াইয়ে অর্জন করেছেন। কুইন্সের ফ্লাশিং ও জ্যামাইকার অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত নিউইয়র্ক কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট ৬ এর কংগ্রেসওম্যা গ্রেস মেং আরো বলেন, কয়েকমাস আগে আমার এলাকার একজন আফ্রিকান আমেরিকান মুসলমান টেক্সাসে তার পুত্রের সাথে সাক্ষাতের পর নিউইয়র্কে ফেরার সময় জেএফকে এয়ারপোর্টে তাকে ইমিগ্রেশনের লোকজন আটক করে আইসের নিকট সোপর্দ করে এবং পাঠানো হয় লুইঝিয়ানায় ডিটেনশন সেন্টারে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, তিনি কোন ধরনের অপরাধে কখনো লিপ্ত হননি এবং বৈধভাবেই বসবাস করছেন। হিজাব পরিহিত সেই মুসলমান নারীর মত প্রতিদিনই অগণিত ইমিগ্র্যান্ট অযথা হয়রানি-নাজেহালের শিকার হচ্ছেন।

 

গ্রেস মেং বলেন, বড়দিনের প্রাক্কালে এবং ইংরেজী নতুন বছরকে বরণে অপেক্ষমান কম্যুনিটিকে নিয়ে এটর্নি মঈন চৌধুরীর এই প্রকাশনা উৎসব সত্যি অনুপ্রেরণাদায়ক এবং আমি গ্রন্থটি রচনার জন্যে এটর্নি মঈন চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এর আগে সূচনা বক্তব্যে ইউএস সুপ্রিম কোর্টে সর্বপ্রথম বাংলাদেশী আমেরিকান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত এটর্নী মঈন চৌধুরী উল্লেখ করেন, এর আগে আমি মিশিগান স্টেটে তালিকাভুক্ত হই আইনজীবী হিসেবে। ইমিগ্রেশন আইন, ব্যক্তিগত দুর্ঘটনা এবং অপরাধ আইনে দুই দশকেরও অধিক সময় আদালতে লড়াইয়ের অভিজ্ঞতার পাশাপাশি কম্যুনিটির নানা কর্মকান্ডেও জড়িত রয়েছি ২০১৬ সাল থেকে কুইন্স কাউন্টি ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার এ্যাট লার্জ হিসেবে। আমি সচেষ্ট রয়েছি ইমিগ্র্যান্টদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার আইনী লড়াইয়ে। প্রশাসনের সর্বস্তরে ইমিগ্র্যান্টদের দুর্দশার কাহিনী উপস্থাপনের মধ্যদিয়ে তা সুরাহার জন্যে কাজ করছি। বলতে দ্বিধা নেই যে, আমার এই দীর্ঘ চলার পথে অকৃত্রিম সাথী হিসেবে ছিলেন এবং আছেন এই কম্যুনিটির সকল গণমাধ্যম কর্মী, এ্যাক্টিভিস্ট এবং সহজ-সরল ইমিগ্র্যান্টরা। আমি সকলের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এ আয়োজনে সাড়া দেয়ার জন্যে। মঈন বলেন, একজন এটর্নী এবং একজন ইমিগ্র্যান্ট হিসেবে আমার এই চলার পথে অসংখ্য মানুষের সান্নিধ্যে এসেছি, অনেকের জন্যে আইনী লড়াই করেছি, সর্বত্র একধরনের আবেগ রয়েছে। আইনজীবী হিসেবে মানবিকতায় উজ্জীবিত হয়ে দায়িত্ব পালনের বিবরণও রয়েছে এই গ্রন্থে। তিনি বলেন, আমেরিকায় ইমিগ্র্যান্ট হয়ে আসার পথ-পরিক্রমা অত্যন্ত দীর্ঘ ও সমস্যাসংকুল হলেও দিনশেষে যদি মর্যাদা পাওয়া যায়, সম্মানের সাথে বসবাসের সুযোগ অবারিত থাকে তাহলেই তা স্বপ্নে পরিণত হয়। কিন্তু বর্তমানে যে পরিস্থিতি তৈরী করা হয়েছে তা যুক্তরাষ্ট্রের নীতি-নৈতিকতার পরিপন্থিই শুধু নয়, সংবিধানকেও চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে। যা গোটা ইমিগ্র্যান্ট কম্যুনিটিকে বিতশ্রদ্ধ করে তোলেছে।খবর আইবিএননিউজ।

বৈধভাবে আমেরিকায় আসতে কেন এত ঝক্কি-ঝামেলা-এ প্রশ্ন প্রতিটি ইমিগ্র্যান্টের। সামগ্রিক পরিস্থিতি, বাস্তবতা এবং কোর্টে আইনী লড়াইয়ের অভিজ্ঞতার আলোকে লিখিত এই গ্রন্থটি যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন ব্যবস্থার অন্তরাত্মা উম্মোচিত করেছে বলে বিদগ্ধ পাঠকেরা মনে করছেন। যেখানে ফুটে উঠেছে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচল, ধৈর্য আর সাহসের পরীক্ষা। যুদ্ধ ফেরৎ সৈনিক তথা বীর মুক্তিযোদ্ধা থেকে নির্যাতন-নীপিড়নের শিকার রাজনৈতিক কর্মীগণের আমেরিকায় স্থায়ীভাবে বসবাসের পথ-পরিক্রমায় আইনগত সহযোগিতার মধ্যেও ছিল এটর্নি মঈন চৌধুরীর উদারতাপূর্ণ মানসিকতা এবং বিবেকতাড়িত উদ্দীপনা। এটর্নি মঈন চৌধুরী এটি রচনা করেছেন নিতান্তই একজন মানবিক গুণে গুনান্বিত একজন বাঙালি হিসেবে।

এটর্নী হিসেবে দুই দশক পূর্তির এই শুভক্ষণে মঈণ চৌধুরী তার অঙ্গিকারের পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে জানাতে চাই যে আজীবন আমি নিজেকে নিবেদিত রাখবো প্রতিটি ইমিগ্র্যান্টের ন্যায় বিচারের প্রত্যাশা পূরণে এবং তাদের সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার জন্যে।

শারমিন সোনিয়া সিরাজের সাবলির উপস্থাপনায় এই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য দেন স্টেট এ্যাসেম্বলীম্যান ডেভিড ওয়েপ্রিন এবং স্টিভ রাঘা, কুইন্স কাউন্টি কোর্টের বিচারপতি ক্যাসেন্দ্রা এ জনসন এবং স্টেট সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কারম্যান ভেলেস্কুয়েজ এবং বিচারপতি সান্দ্রা এম মুনজ, এটর্নী মাইকেল তৌব এবং মঈন চৌধুরীর বড়ভাই রব চৌধুরী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মুকিত চৌধুরী।

অ্যামাজন কর্তৃক প্রকাশিত ইংরেজী ভাষায় ১৪৮ পাতার বইটির মূল্য মাত্র ১১.৯৯ ডলার। এই সাইটে (https://www.amazon.com/ROAD-AMERICA-IMMIGRATION-HARDSHIP-ebook/dp/B0G1P4RC9N) ক্লিক করলেই বিশ্বের যে কোন স্থান থেকে কেনা যাচ্ছে হার্ড কভারের বইটি।এটর্নি মঈন চৌধুরীর বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাদিক,দর্শক শ্রোতাদের পক্ষ থেকে বেশীরভাগ বক্তৃতাই বারবার সামনের মঞ্চে গিয়ে অনুষ্ঠান চলাকালীন এটর্নি মঈন চৌধুরী সহ অতিথিদের সাথে হেডশেক করছেন।অনুষ্ঠানে এটর্নি মঈন চৌধুরীর জন্মদিনের একটি কেক কাটা হয় ।এটর্নি মঈন চৌধুরী উপস্থিত সাংবাদিক ও সুধীদের নাম ও পদবী লিখে একটি তালিকা উপস্থাপক শারমিন সিরাজ সুনিয়ার কাছে পৌঁছে দিলেও তিনি  কতিপয় সাংবাদিক দর্শকের নাম দুইবার করে বলেন । অথচ সিনিয়র সাংবাদিক ও সুধীজনের নাম বলেননি।যাছিল দৃষ্টি কটু ।অনুষ্ঠানে এটর্নি মঈন চৌধুরী অখ‍্যতদের তার বইটি উপহার হিসেবে বিতরণ করেছেন।অথচ সিনিয়র সাংবাদিক ও লেখক এরং কলামিস্টদের তার বইয়ের কপি উপহার দেননি ।অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে নৈশভোজে আপ্যায়ন করা হয়।

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন