এক পর্যায়ে এমন হয়েছিল, বাংলাদেশের ব্যাটারদের আউটের বিবরণ লিখে শেষ করা যাচ্ছিল না, একের পর এক আউট। এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতল আফগানিস্তান।
রিশাদ হোসেনকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে বাংলাদেশের ইনিংসের ইতি টেনেছেন রশিদ খান। আফগান এ লেগ স্পিনার ১৭ রান খরচ করে নিয়েছেন ৫ উইকেট।
আর বাংলাদেশ ওয়ানডেতে টানা চতুর্থ সিরিজ হারল। যে ধারাবাহিকতার শুরু গত বছর আমিরাতে আফগানদের কাছে হেরেই। এ নিয়ে ওয়ানডে আফগানদের কাছে টানা তৃতীয় সিরিজ হারল বাংলাদেশ।
১৯১ রানের লক্ষ্য ছুঁতে নেমে ২৮.৩ ওভারে ১০৯ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ।
যা ওয়ানডে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন। রান তাড়ায় বাংলাদেশের মাত্র চার ব্যাটসম্যান দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন। সর্বশেষ ১১ ওয়ানডের ১০টিতেই হারা বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২৪ রান করেছেন তাওহিদ হৃদয়।
রান তাড়ায় শূন্য রানেই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকলেও এক পর্যায়ে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৯৯/৫। কিন্তু ৯৯ রানে দাঁড়িয়েই ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১০০ রানে যায় নবম উইকেট। এরপর ১০৯ রানে অলআউট।
গাজানফারের পর দ্বিতীয় আফগান বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫ উইকেট পেলেন রশিদ খান।
গত বছর শারজায় ২৬ রানে ৬ উইকেট পেয়েছিলেন গজনফর।
এর আগে আফগানিস্তান টসে জিতে ওপেনিংয়ে নামার পর থেকেই বাংলাদেশকে কষ্ট দিচ্ছিলেন ইব্রাহিম জাদরান। তার সতীর্থরা আসা-যাওয়ার মিছিলে যোগ দিলেও যে আফগানিস্তান ব্যাটার নিজের সহজাত খেলাটা খেলে যাচ্ছিলেন।
তাতে সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তেও পৌঁছান জাদরান। পরিকল্পনা করেছিলেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে রানের গতি বাড়াবেন। কেননা অপর প্রান্তে সঙ্গীর অভাব পড়ছিল। সে হিসাব কষেই হয়ত মেহেদী হাসান মিরাজের করা ৪৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ডাউন দ্য উইকেটে আসলেন। যেন ছক্কায় সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে পারেন।
সজোরে ব্যাটটা চালালেনও জাদরান। কিন্তু ডিপ মিডউইকেটে দারুণ এক ক্ষিপ্রতায় বল বাউন্ডারি লাইন পার হওয়ার আগেই ক্যাচটা তালুবন্দি করলেন রিশাদ হোসেন। বাংলাদেশি অলরাউন্ডার ক্যাচ ধরতেই জাদরানের মুখ কালো হয়ে আসে। আসারই কথা ছক্কাটা হলেই যে ১০১ রান হয়ে যেত তার। আফগানিস্তানের হয়ে ‘নিঃসঙ্গ শেরপার’ মতো লড়ে যাওয়া ইনিংসটিও পূর্ণতা পেত।
কিন্তু ৯৫ রানে হতাশ হয়ে মাঠ ছাড়তে হলো জাদরানকে। সেই হতাশা ছড়িয়ে পড়ল আফগানদের ড্রেসিংরুমে। রিশাদ ক্যাচ ধরতেই আফগান কোচসহ খেলোয়াড়রা মাথায় হাত দেয়। যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না বাংলাদেশি লেগস্পিনার ক্যাচটা এভাবে লুফে নেবেন। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৯৫ রানে যখন মাঠ ছাড়ছিলেন জাদরান তখন মনে হচ্ছিল বাংলাদেশকে দেওয়া দ্বিগুণের বেশি কষ্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ছেন তিনি।
আফগানিস্তানের ইনিংস বলতে জাদরানের একার লড়াই। কেননা নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো আফগানদের অর্ধেক রানই যে করেছেন তিনি। ৯ উইকেটে ১৯০ রানে ইনিংস শেষ হয় তাদের। রহমত শাহ চোট নিয়ে শেষ ব্যাটার হিসেবে আবার নামলেও এক বল খেলেই হুইলচেয়ারে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।
জাদরানের বাইরে ২২ রানের দুটি ইনিংস খেলে অবদান রেখেছেন মোহাম্মদ নবী ও এএম গাজানফার। যা-ই হোক, ম্যাচ শেষে দলকে টেনে নেওয়ার স্বীকৃতি পেলেন ইব্রাহিম জাদরান। ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ হলেন তিনি।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন ১ মেডেন দেওয়া অধিনায়ক মিরাজ। দুটি করে পেয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব ও রিশাদ হোসেন।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন