জিবি নিউজ প্রতিনিধি//
সিলেটের পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুছ চৌধুরী পিপিএমকে ফোন দিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। তিনি নিজেকে তৃণমূল আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসাবে পরিচয় দিয়ে তার সঙ্গে অনেক কথা বলেন।
এরপর সেই রেকর্ডকৃত ফোনালাপের অংশবিশেষ কেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সারাদিন সিলেটের সর্বত্র চলেছে তুমুল আলোচনা।
তবে কে বা কারা বিষয়টি ভাইরাল করেছে, তাদের উদ্দেশ্য কী, সে ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দিহান সিলেট মহানগর পুলিশ।
পুরো বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছেন বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মো. সাইফুল ইসলাম।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ওই ফোনালাপটি নিয়ে গত বুধবার থেকে সিলেটজুড়ে চলে তুমুল আলোচনা চলছে।
ফোনালাপে শোনা যায়, এক ব্যক্তি এসএমপি কমিশনারকে কল দিয়ে জানতে চেয়েছেন, ১৬ বছর তারা আপনার (এসএমপি কমিশনারের) কি ক্ষতি করেছেন যে, প্রতিদিন দু’জন করে আওয়ামী লীগ কর্মী ধরার নির্দেশ দিলেন? পুলিশ হত্যার বিচার না চেয়ে তাদের পেছনে লেগে থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেছেন, আমরা কি ক্ষতি করেছি?
কয়েকদিন আগে সিলেট মহানগর এলাকায় আওয়ামী লীগের লোকজন যেন থাকতে না পারে- এসএমপি কমিশনারের এমন এক ‘নির্দেশনা’ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পরে সেটিকে ‘শব্দগত’ ভুল বলে সংশোধিত একটি নির্দেশনা দেওয়া হলেও আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মী পরিচয়ে এসএমপি কমিশনারকে কল ওই নির্দেশনার প্রেক্ষিতে।
বিষয়টি নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা। এ প্রসঙ্গে সিলেটভিউর সাথে আলাপ হয় মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) মো. সাইফুল ইসলামের।
তিনি বলেন, যেকোনো নাগরিক পুলিশ কমিশনারকে ফোন দিয়ে নিজেদের সমস্যার কথা বলতেই পারেন। ওই ব্যক্তিও ফোন দিয়েছিলেন এবং কমিশনার স্যার তার সঙ্গে কথাও শুনেছেন। এখন কে বা কারা সেই ফোনালাপের অংশ বিশেষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করেছে, তাদের উদ্দেশ্যই বা কী, বিষয়টি সন্দেহজনক।
তিনি আরও বলেন, আমরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। অবশ্যই এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ করা প্রয়োজন, গত সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মহানগর পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুছ চৌধুরী স্বাক্ষরিত একটি নির্দেশনার বিশেষ অংশ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, ‘চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সিলেট মহানগর এলাকায় কোনো আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের লোকজন প্রকাশ্যে যাতে এলাকায় না থাকতে পারে, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সব অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) নির্দেশনা প্রদান করা হলো। এসি, এডিসি ও ডিসিরা এ বিষয়ে তদারকি করবেন।’
পরে অবশ্য বিষয়টি নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে মহানগর পুলিশ মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকালে সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন।
কমিশনারের নির্দেশনা নিয়ে ফেসবুকে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- সম্প্রতি বিভিন্ন ব্যক্তি ফেসবুকে পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের নির্দেশনা বলে একটি বক্তব্য লিখে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছেন। প্রকৃত তথ্য হলো- পুলিশ কমিশনার অফিসারদের অভ্যন্তরীণ সভায় বলেছেন- ‘নিষিদ্ধ ঘোষিত দলের কার্যক্রম নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে। তারা প্রকাশ্যে যাতে কোনো মিছিল-মিটিং করতে না পারে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেওয়া হয়।’

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন