জিয়ানলুইজি দোন্নারুমা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি আর প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ে (পিএসজি) থাকছেন না। আজ বুধবার টটেনহ্যাম হটস্পারের বিপক্ষে উয়েফা সুপার কাপে স্কোয়াড থেকে বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে এই সিদ্ধান্ত নেন ২০২৪-২০২৫ মৌসুমে পিএসজিকে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতানো এই গোলরক্ষক।
ইতালির এই গোলরক্ষক ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘প্রিয় প্যারিস সমর্থকরা, প্রথম দিন থেকেই আমি মাঠের ভেতর ও বাইরে সবকিছু দিয়েছি আমার জায়গা অর্জন করতে এবং প্যারিস সেন্ট-জার্মেইনের গোলপোস্ট রক্ষা করতে। দুর্ভাগ্যবশত কেউ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আমি আর দলের অংশ হতে পারবো না এবং দলের সাফল্যে অবদান রাখতে পারবো না। আমি হতাশ ও মনঃক্ষুণ্ণ।’
এর আগে পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে বলেন, এই কঠিন সিদ্ধান্তের ১০০ শতাংশ দায় তার। তিনি স্কাই ইতালিকে বলেন, ‘দোন্নারুমা বিশ্বের সেরা গোলরক্ষকদের একজন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। ব্যক্তি হিসেবেও সে অসাধারণ। কিন্তু এটাই শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলারদের জীবনের বাস্তবতা। এই ধরনের সিদ্ধান্ত সহজ হলে যে কেউ নিতে পারতো। সিদ্ধান্ত এ কারণে নেওয়া হয়, দলের জন্য যে ধরনের গোলরক্ষকের প্রোফাইল দরকার।’
গত শনিবার লিলে থেকে গোলরক্ষক লুকাস শেভালিয়েকে কিনেছে পিএসজি। যার ট্রান্সফার ফি ছিল ৪ কোটি ইউরো (৪৭ মিলিয়ন ডলার) এবং সম্ভাব্য ১ কোটি ৫০ লাখ ইউরো (১৭ মিলিয়ন ডলার) বোনাস। সূত্রে জানা গেছে, শেভালিয়েকে মূলত নতুন নাম্বার ওয়ান গোলরক্ষক হিসেবেই দলে আনা হয়েছে।
ক্লাব এখন দোন্নারুমাকে রাখতে চায় না। এই মৌসুমে তাদের স্কোয়াডে দুইজন শীর্ষ গোলরক্ষক রয়েছে। সূত্রের দাবি, চেলসি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও ইন্টার মিলান ইতোমধ্যে দোন্নারুমার এজেন্ট এনজো রাইওলার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
২৬ বছর বয়সী দোন্নারুমা চেয়েছিলেন চুক্তি নবায়ন করতে। কারণ তার বর্তমান চুক্তির মেয়াদ মাত্র এক বছর বাকি ছিল। কিন্তু কোনো সমঝোতা হয়নি। ইতালিয়ান এই গোলরক্ষক মাসে ৮ লাখ ৫০ হাজার ইউরো বেতন পেতেন, যা স্কোয়াডের মধ্যে সর্বোচ্চ বেতনের একটি।
উচ্চ স্যালারি হলেও সেটি আরও বৃদ্ধির দাবি করেছিলেন দোন্নারুমা। গত দুই বছর ধরে স্পোর্টিং ডিরেক্টর লুইস কামপোস যে নতুন বেতন কাঠামো (বেসিক স্যালারি কম, পারফরম্যান্সভিত্তিক ইনসেনটিভ বেশি) চালু করেছেন, সেটিও মেনে নিতে রাজি হননি তিনি।
গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ে দোন্নারুমা পিএসজির হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। লিভারপুল, অ্যাস্টন ভিলা ও আর্সেনালের বিপক্ষে দারুণ সেভ করে দলকে প্রথমবারের মতো ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন বানান।
তবে কোচ লুইস এনরিকে এমন একজন গোলরক্ষক চেয়েছেন, যিনি বল বিতরণে (ডিস্ট্রিবিউশন) ভালো এবং পায়ে বল রেখে স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে পারেন। শেভালিয়ের মধ্যে সেটি তিনি দেখতে পেয়েছেন।
দোন্নারুমা সমর্থকদের উদ্দেশে আরও লেখেন, ‘আশা করি, পার্ক দে প্রিন্সেসে একবার হলেও চোখে চোখ রেখে আপনাদের বিদায় জানাতে পারবো। যদি তা না হয়, তবুও আপনারা জানবেন যে আপনাদের সমর্থন ও ভালোবাসা আমার কাছে পৃথিবীর সবকিছুর চেয়েও মূল্যবান এবং আমি তা কখনো ভুলবো না। আপনাদের দেওয়া আবেগ, জাদুকরী রাত আর আপনাদের কাছ থেকে পাওয়া আপনজনের অনুভূতি সবসময় মনে রাখবো।’
তিনি যোগ করেন, ‘আমার সতীর্থদের, আমার দ্বিতীয় পরিবারকে ধন্যবাদ প্রতিটি লড়াই, হাসি ও মুহূর্তের জন্য। তোমরা সবসময় আমার ভাই হয়েই থাকবে। এই ক্লাবের হয়ে খেলা এবং এই শহরে বসবাস করা ছিল বিরাট এক সম্মান। ধন্যবাদ, প্যারিস।’
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন