মোদীর পর এবার পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীকে আক্রমণ করলেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দুদিনের সফরে পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন তিনি। রোববার (১ জুন) বিজেপি কর্মীদের নিয়ে কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামের সাংগঠনিক সভা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের বিরুদ্ধে তুষ্টিকরন, সন্ত্রাস, অবৈধ অনুপ্রবেশ, দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন অমিত শাহ।
এদিনের সভা থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বক্তব্য শুরু করার আগেই বিভিন্ন মনীষীদের প্রণাম জানান। এরপরই কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বকে। বলেন, কমিউনিস্ট সরকারের পতনের পরে বাংলার মানুষ ভেবেছিল পরিবর্তন আসবে। কিন্তু তৃণমূল এসে বাংলার মাটি আরও অপবিত্র করেছে। মা-বোনের সম্মান রাখতে পারেনি। এই সরকারের আমলে হরিলুট হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভোটব্যাংকের রাজনীতি করে মমতা ব্যানার্জী তুষ্টিকরণের সীমা ছাড়িয়েছেন। কিন্তু এখন গুলির জবাব গুলিতে দেওয়ার সময় এসেছে।
এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে তিনি বলেন, অপারেশন সিঁদুর এখনো শেষ হয়নি। পহেলগামের বদলা নিয়েছি আমরা। অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে সরাসরি সন্ত্রাসবাদকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু সন্ত্রাসবাদীদের মারলে দিদির পেটে ব্যথা হয়। যখন বাংলার পর্যটকদের ওখানে হত্যা করা হচ্ছিল, তখন এই যন্ত্রণা হলে ভালো হতো। তখন কিছু বলেননি।
‘নরেন্দ্র মোদী অপারেশন সিঁদুরের পর বাংলায় এলে আপনি (মমতা) নিচুস্তরের রাজনৈতিক বক্তব্য রেখে অপারেশন সিন্দুরের বিরোধিতা করেছেন। আমি দিদিকে বলতে চাই, আপনি অপারেশন সিঁদুরের বিরোধিতা করেননি, দেশের কোটি কোটি মা-বোনের আবেগের সঙ্গে খেলেছেন। আমি বাংলার মায়েদের কাছে আবেদন করতে চাই, আগামী নির্বাচনে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে প্রশ্ন তোলায় মমতা ব্যানার্জীকে এর অর্থ বুঝিয়ে দেবেন।’
এরপরই বিজেপি কর্মীদের হত্যার অভিযোগ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই বাংলায় ভোটের পরে বিজেপি কর্মীদের রক্ত ঝরেছে। খুন করা হয়েছে। কতদিন লুকিয়ে রাখবেন এই অপরাধ? সময় শেষ দিদি। ২০২৬ সালের বিদায়। বাংলায় বিজেপি সরকার গঠন করতেই হবে। দুর্নীতি রুখতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে রিগিংয়ের অভিযোগ করে অমিত শাহ বলেন, দিদি হিম্মত থাকলে হিংসা, রিগিং বাদ দিয়ে ভোট করে দেখুন আপনারও জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে।
এরপর বিজেপির কর্মীদের লক্ষ্য করে তিনি বলেন, চিন্তা করবেন না, আমি কথা দিচ্ছি- বিজেপি ক্ষমতায় এলে তৃণমূলের এই গুন্ডাদের দরকার হলে কবর খুলে তুলে এনে শাস্তি দেবো।
অনুপ্রবেশ ও সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ তুলে অমিত শাহ আরও বলেন, সীমান্ত এলাকায় হিন্দুদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। আমি বলে যাচ্ছি, কারও নাম যদি ভোটার তালিকা থেকে বাদ যায়, সঙ্গে সঙ্গে নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে আবেদন জানাবেন। সব হিন্দু শরণার্থীকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র এই সফর নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই সভাতে তিনি মূলত দলীয় নেতাকর্মীদের জন্য ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি করে দিয়ে গেলেন। তার এই রণকৌশল নির্ধারণ রাজনৈতিকভাবে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন