ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে : যুক্তরাষ্ট্র

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান আসন্ন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে—যুক্তরাষ্ট্র মঙ্গলবার এমনটা জানিয়ে সতর্ক করে বলেছে, এমন আক্রমণের জন্য তেহরানকে ‘গুরুতর’ পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।

এই সতর্কবার্তা এমন সময় এলো, যখন ইসরায়েল লেবাননে ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে স্থল আক্রমণ শুরু করেছে বলে জানিয়েছে। হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহকে ইসরায়েলি বিমান হামলায় গত সপ্তাহে হত্যা করা হয়েছিল।

হোয়াইট হাউসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ইঙ্গিত রয়েছে, ইরান শিগগিরই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।

আমরা এই হামলা থেকে ইসরায়েলকে রক্ষার জন্য সক্রিয়ভাবে প্রতিরক্ষামূলক প্রস্তুতিতে সহায়তা করছি।’

 


 

এর আগে এপ্রিল মাসে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা থেকে ইসরায়েলকে রক্ষা করতে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা মিত্ররা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। সেই হামলা ছিল দামেস্কে অবস্থিত ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলের হামলার প্রতিশোধ হিসেবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের সরাসরি সামরিক হামলা হলে এর গুরুতর পরিণতি হবে।

 

যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবার্তার পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা এখন পর্যন্ত এ ধরনের হুমকি শনাক্ত করেনি। সামরিক মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা ইরান থেকে উড্ডয়ন করা কোনো বিমানের হুমকি শনাক্ত করছি না। আমরা আমাদের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উচ্চ সতর্কতায় রয়েছি এবং ইরানে চলমান ঘটনাবলির দিকে নিবিড়ভাবে নজর রাখছি।’


 

হাগারি বলেন, দেশের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত এবং যুদ্ধবিমানগুলো আকাশে প্যাট্রল চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা উভয়ই আক্রমণ ও প্রতিরক্ষায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতিতে রয়েছি। আমরা এর আগেও এই ধরনের হুমকি মোকাবেলা করেছি এবং এখনো তা মোকাবেলা করব।’

 

বিস্তৃত আঞ্চলিক সংঘাতের আশঙ্কা
এদিকে ইরান বলেছে, নাসরাল্লাহর হত্যার পর ইসরায়েলের ‘ধ্বংস’ হবে। তবে তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সেনা মোতায়েন করবে না। অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সোমবার ইরানকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে ইসরায়েল পৌঁছতে পারবে না।

 

 

ইসরায়েলের ওপর ইরান হামলা চালালে বিস্তৃত আঞ্চলিক সংঘাতের আশঙ্কা আরো বাড়বে, যা যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য বিশ্বশক্তি এড়াতে চায়। যুক্তরাষ্ট্র সতর্কতার সঙ্গে ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তে হিজবুল্লাহর আক্রমণের ক্ষমতা ধ্বংসের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করেছে। একই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন জানান, যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনাবলি খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করছে। তিনি মঙ্গলবার সকালে মরক্কোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাসের বোউরিতার সঙ্গে পররাষ্ট্র দপ্তরে বৈঠকের সময় বলেন, ‘ইসরায়েলের প্রতিরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’


 

এর আগে সোমবার যুক্তরাষ্ট্র জানায়, তারা মধ্যপ্রাচ্যে ‘কয়েক হাজার’ নতুন সেনা মোতায়েন করছে এবং ইতিমধ্যে মোতায়েন থাকা বাহিনীর মেয়াদ বাড়াচ্ছে। পাশাপাশি আরো যুদ্ধবিমানও পাঠানোর কথা জানিয়েছে পেন্টাগন। এ ছাড়া সোমবার রাতে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে হিজবুল্লাহর সীমান্তবর্তী সামরিক অবকাঠামো ধ্বংসে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন।


 

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে এক নজিরবিহীন আন্ত সীমান্ত হামলা চালায়। এর ফলে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বিধ্বংসী আক্রমণ শুরু হয়। অন্যদিকে হামলার পরের দিন হিজবুল্লাহ ইসরায়েলি সেনাদের ওপর স্বল্প মাত্রার হামলা শুরু করে। গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ চলাকালীন ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সীমান্ত বরাবর সংঘর্ষও চলতে থাকে।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন