কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং তার স্ত্রী সোফি গ্রেগরি ট্রুডো তাদের ১৮ বছরের বৈবাহিক জীবনের ইতি টানার ঘোষণা দিয়েছেন। দু’জনের মধ্যে ‘অর্থবহ ও কঠিন আলাপ-আলোচনার’ পর তারা এই ঘোষণা দেন বলে জানানো হয়েছে।
এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে এই দম্পতি জানিয়েছেন, বিচ্ছেদের পরও তারা ‘ঘনিষ্ঠ একটি পরিবারের মতো থাকবেন। আর এর ভিত্তি হবে ভালোবাসা ও সম্মান’।
তবে দীর্ঘ দাম্পত্যের পর স্ত্রীর সঙ্গে কানাডার জনপ্রিয় এই প্রধানমন্ত্রীর বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত বিশ্ব গণমাধ্যমে অনেকটা আলোড়ন তুলেছে। একে-অপরের সঙ্গ ছাড়ার কারণ ঠিক কী হতে পারে তা নিয়েও নিশ্চিত কোনও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।
এছাড়া বিচ্ছেদের ঘোষণার পর এই জুটির অতীতের নানা ঘটনাও সামনে আসছে। এর মধ্যে প্রথম দেখায় সোফিকে সেসময়কার তরুণ যুবক জাস্টিন ট্রুডো কী বলেছিলেন, তাদের বিয়ে, সন্তান, পারিবারিক ও রাজনৈতিক জীবন, দাম্পত্য জীবনের সংগ্রাম এবং গত বছরের বিবাহ বার্ষিকীর সময় ইনস্টাগ্রামে সোফির দেওয়া বার্তা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ২০০৫ সালে কানাডার মন্ট্রিয়লে বিয়ে করেন জাস্টিন ট্রুডো এবং সোফি গ্রেগরি। তবে ২০০২ সালে সোফিকে প্রথমবারের মতো দেখেছিলেন ট্রুডো। এরপর ২০০৩ সালে তারা দেখা করা শুরু করেন। সোফি তখন ছিলেন একজন টিভি প্রেজেন্টার। এছাড়া তখন মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে চ্যারিটিও করতেন তিনি।
২০১৫ সালে জাস্টিন ট্রুডো কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর এই দম্পতি ভোগ ম্যাগাজিনে একসঙ্গে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। সেই সাক্ষাৎকারে ট্রুডো বলেছিলেন, সোফি গ্রেগরির সঙ্গে তিনি যখন প্রথম দেখা করেছিলেন, তখন বলেছিলেন, ‘আমার বয়স ৩১ বছর এবং আমি ৩১ বছর যাবত তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।’
কিভাবে ট্রুডো-সোফির দেখা হয়েছিল
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে কয়েক বছর শিক্ষকতা করার পর ২০০২ সালে মন্ট্রিয়লে ফিরে আসেন জাস্টিন ট্রুডো।
এতে বলা হয়েছে, ‘২০০২ সালে জাস্টিন ট্রুডো মন্ট্রিয়লে ফিরে আসেন এবং সেখানে তিনি সোফির সাথে দেখা করেন। এরপর তারা ২০০৫ সালে বিয়ে করেন এবং বর্তমানে তারা জ্যাভিয়ার, এলা গ্রেইস এবং হ্যাড্রিয়েনের গর্বিত পিতামাতা।’
সেসময় তিনি আরও বলেন: ‘দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক অনেক দিক থেকেই চ্যালেঞ্জিং। দীর্ঘ সম্পর্কে অবিরাম কাজ, নমনীয়তা, আপস, ত্যাগ, নিষ্ঠা, ধৈর্য, প্রচেষ্টা এবং আরও অনেক কিছু থাকতে হয়। আমরা কেউই নিখুঁত নই এবং তাই কোনও নিখুঁত সম্পর্কও নেই, তবে ভালবাসা তখনই সত্য যখন এটি আপনাকে নিরাপদ রাখে, আপনাকে স্বাধীন করে এবং আপনাকে বেড়ে উঠতে দেয়।’
এছাড়া ২০১৪ সালে প্রকাশিত নিজের আত্মজীবনীতে বৈবাহিক জীবনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে লিখেছেন জাস্টিন ট্রুডো। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের বিয়ে পুরোপুরি ঠিক ছিল না। আমরা নানা রকম উত্থান-পতনের ভেতর দিয়ে গেছি। তারপরও সোফি আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু হিসেবে আছে, আমরা পার্টনার এবং সে আমার ভালোবাসা। আঘাত আসলেও আমরা একজন আরেকজনের প্রতি সৎ থেকেছি।’
৫১ বছর বয়সী ট্রুডো এবং ৪৮ বছর বয়সী সোফি গ্রেগরি ট্রুডোকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একসঙ্গে খুব কম গেছে। যদিও ট্রুডো-সোফি জুটিকে চলতি বছরের মে মাসের শুরুতে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে কিং চার্লসের রাজ্যাভিষেকে অংশ নিতে দেখা গিয়েছিল।
এছাড়া গত মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে কানাডায় স্বাগত জানানোর সময়ও তাদের একত্রে দেখা গেছে।
অবশ্য বিচ্ছেদ হলেও তাদের এখনও জনসমক্ষে একসাথে দেখা যাবে। ট্রুডোর অফিস থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘বিচ্ছেদের জন্য যেসব আইনগত এবং নৈতিক পদক্ষেপ প্রয়োজন, সেগুলো নিশ্চিত করতে তারা কাজ করছেন এবং সেগুলো চলমান রেখে তারা এগিয়ে যাবেন।’
আগামী সপ্তাহে তারা পরিবার হিসেবে ছুটি কাটাতে যাবেন ব
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন