রাকিব রুহেল || জিবি নিউজ ||
আমরা অনেক সময় শুনি দেয়ালে পিঠ লেগে গিয়েছে! কিছুই করার নেই, কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা; চতুর্দিকে অন্ধকার! ঠিক সেই সময়টা অর্থাৎ কঠিন সময়, সেটাকে উত্তরণ কীভাবে করব, এই ভেবে অনেকে ব্যর্থ হয়ে আত্বহননের পথ বেছে নেন,
আবার কেউ বৈরাগী হয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। ঠিক ঐ সময়টাতে আরাবিয়ান গল্পের সেই আলাউদ্দিনের দৈত্য যদি সামনে এসে বলে যে, তুমি কি চাও? যা চাবে তা পাবে! তখন কি সেই ব্যক্তি আর গুমরো মুখে থাকবে? না থাকবে না। মুহূর্তে মলিন মুখখানা পূর্ণিমা চাঁদের মত হাস্যোজ্জ্বল হয়ে ওঠবে। একটা ম্যাসেজ, একটা আশা মুহূর্তে যেভাবে মানুষকে বদলে যাওয়া জীবনের স্বপ্ন দেখাতে পারে, তেমনি একটা সঠিক সিদ্ধান্ত পাল্টে দিতে পারে মানুষের জীবনের সাফল্যের প্রথম সোপান!
আসলে আমরা জানি না যে, আমাদের মধ্যে কতটুকু অসীম প্রতিভা আছে। কিন্তু সে প্রতিভাকে কাজে লাগানোর জন্য আমরা কজনইবা চেষ্ঠা করি! একান্ত আলাপ চারিতায় কথাগুলো বলছিলেন বাংলাদেশের এর প্রথম Incridble You (ICF) Certified Coach জনাব ইয়াছীন আহমেদ চৌধুরী লায়েক।
তিনি আরো বলেন ‘ আমার এখনো মনে আছে যে, কীভাবে জীবনের প্রথম একটা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছিলাম আর সেটাই আমার জীবনের সফলতার প্রথম বীজ বপন। নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে এতটাই ঝুঁকে গিয়েছিলাম যে, নিজের পড়ালেখার অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গিয়েছিল। ফলে বাৎসরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারি নি। লেখাপড়ার কি এখানেই সমাপ্তি! তাহলে তো আর কলেজে পড়তে পারব না, সভা সমিতিতে বক্তব্য দিতে পারব না! আচ্ছা আমি কি জুনিয়রদের সাথে একই ক্লাসে আবার পড়ব! কিন্তু সেটা কিভাবে সম্ভব! ঐ সময় সিনিয়র-জুনিয়রিটি একটা বড় ফ্যাক্ট ছিল। তবে আমাকে তো বড় হতে হবে কিন্তু কি করবো? ভেবে পাচ্ছিলাম না।
হঠাৎ পরিচয় হলো একজন প্রবীণ শিক্ষকের সাথে। যিনি সদ্য অবসর গ্রহণ করে নিজের বাড়ীতে ফিরে এসেছেন। তাঁর অনুপ্রেরণায় আবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম। শুরু হলো বদলে যাওয়া জীবনের নতুন অধ্যায়। পরের দিন স্কুলে গেলাম। ক্লাস নাইনে আমাকে দেখে সদ্য নবম শ্রেনীতে উত্তীর্ণ নতুন সহপাঠীরা একে অপরের সাথে ইশারা-ইঙ্গিতে আমাকে নিয়ে নানা কথা বলছিল। আবার সাহসও পাচ্ছিল না যে কিভাবে আমার সাথে কথা বলা শুরু করবে। আমি সবাইকে জড়ো করে বললাম, ‘ভাইয়েরা! আমি তোমাদের সহপাঠী, এখন সিনিয়র না, চল; আজকে টিফিনের ছুটিতে আমরা একসাথে কোথাও চা খাই‘। সবাইকে বুরুঙ্গা বাজারের সুজিত কাকার দোকানে নিয়ে চা চক্র করলাম।
অতঃপর তাদের তেরো জনের হাত আমার হাতের উপর রেখে বললো, ‘তুমি আমাদের বন্ধু, আর আমরা সবাই চেষ্টা করব যেন ভালো লেখাপড়া করতে পারি।‘ শুরু হল পথ চলা। সেই প্রবীন শিক্ষক দায়িত্ব নিলেন আমাকে পড়ানোর। তিনি আমার সমস্যা পুরোপুরি অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। এবং ৭ম শ্রেনীর গণিত ও ইংরেজি দিয়ে পড়ানো শুরু করেছিলেন। আসলে তিনিই ছিলেন আমার জীবনের প্রথম কোচ। আমি অত্যন্ত শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি প্রয়াত আমার সেই শিক্ষক জনাব আব্দুল মন্নান স্যার কে। ‘আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাতের উচ্চ স্থানে আসীন করেন।‘
আমি সব সময় চিন্তা করি যে, নতুন কিছু করার। আমার ইংরেজি শিক্ষক শ্রী নিভাস চক্রবর্তী বলতেন, ‘আমার লায়েক Innovative boy‘। বিলেতে আছি প্রায় কুড়ি বছর। সংসার ও কর্মজীবনের পাশাপাশি এগারো বছর কলেজ ইউনিভার্সিটিতে পড়েছি। কার্ডিফ ইউনিভার্সিটির ২০১৫-১৬ সেশনে প্রসপেকটাসের প্রথম পৃষ্ঠায় আমার ছবি ছাপা হয়। তাছাড়া কলেজ Glen Hafren এর Prospectus-এও আমার ছবি ছাপা হয় একবার।
আসলে এই যে পড়া-লেখা, সেটা কিন্তু নিজেকে বদলানোর এক কঠিন সীদ্ধান্ত।
লায়েক ভাই আমাকে জিজ্ঞেস করলেন,
‘আচ্ছা আপনি নিজেকে কতটুকু চিনেন?’ আসলেতো জানিনা লায়েক ভাই, আপনি বলেন। ‘আমি ৪২ বছর পরে নিজেকে জানতে পেরেছি! যদি আরো আগে জানতে পারতাম তাহলে ব্যর্থতার ঝুলি এত ভারী হত না। আমাদের Incredible you coaching program- এর একটা টুলস আছে, যেটাকে বলে Personality assessment test-। আপনি বিশ্বাস করতে পারবেন না যে, কিভাবে টেস্টটা আপনার সম্পর্কে পুরোপুরি হুবহু তুলে ধরবে!
আমরা জীবনে বড় কোন সীদ্ধান্ত নিতে হলে কার পরামর্শ নেই? সাধারণত বন্ধু-বান্ধব বা পরিবারের গুরুজনের কাছ থেকে। কিন্তু তারা কি ঐ বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখেন। তারা কি জীবনে সফল! আমার আম্মাকে এরকম কিছু জিজ্ঞেস করলে বলেন, ‘দোয়া করি বড় হও, তবে ভালকরে খোঁজ খবর নাও এবং এ বিষয়ে যারা সফল, তাদের সংস্পর্শে গিয়ে আরো ভাল করে জান।
আমাদের প্রত্যেকের জীবনে কোচিং দরকার। আমরা ঐ Incredible you coaching program-এ প্রথমে নিজের ভেতরের Inner DNA তে কাজ করি, পরে Integrated power code-এ এভাবে দশ সপ্তাহের কোচিং সেশনে আপনি নিজেকে পুরোপুরি জানতে পারবেন, ভাংগতে পারবেন দুর্দশাগ্রস্ত জীবনের বৃত্ত।
সঠিক master mind group যে কত গুরত্বপূর্ণ সেটার সুফল হলো আমি নিজের একটা বই লিখতে পেরেছি এবং আরেকটি বইয়ের co- author-। গত মাসের ১৪ই ফেব্রুয়ারি বোম্বেতে আমার মেন্টর জনাব আরফিন খান ভারচুয়াল কনফারেন্সে বিশ্বের ৬ হাজার লাইভ দর্শকের সামনে আমাদের বইটির মোরক উন্মোচন করেন। বইটির নাম হলো “Rise and kick it” Arfeen khan বিশ্বের বিশটিরও বেশী দেশে ৬ লক্ষ মানুষের জীবনে প্রভাব রাখেন। তাঁর couch to fortune program এর লক্ষ্য মানুষের জীবনে transformation হয়। প্রায় দশ হাজার advanced train coach তাঁর প্রতিষ্ঠানে certified হয়েছেন।
আপনারা শুনলে খুশী হবেন যে,সেদিন আরফিন খান আমাদের master mind live zoom meeting এ surprise দেন ।তিনি সাধারণত এরকম আসেন না ।যেহেতু এত কাঁচ থেকে পেয়েছি তখন আলাপচারিতায় বললেন ,"আমিই প্রথম বাংলাদেশী এমনকি বৃটিশ বাংলাদেশী যে প্রথম কোচ। তিনি আরো বলেন প্রায় ২৫০ বাংলাদেশী অংশগ্রহণ করেন তবে কেউই সফল হতে পারেন নি। তিনি আরো বলেন ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় তাঁর আব্বা লন্ডনে চলে আসেন আর চাচা বাংলাদেশে ।তাঁর দাদার বাড়ী ছিল কলকাতায়।
আসলে আমি এদেশে বাংগালী যত ব্যবসা করে ,সবই করেছি ,সফলও হয়েছি আবার অনেক ব্যর্থতাও আছে। আমার ব্যবসার জার্নি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমার business root বইটিতে। আমি সব সময় নতুন কিছু করার চেষ্টা করি সেজন্য হয়ত আমার স্যার আমাকে innovative বলতেন। আসলে কপি করার মধ্যে কোন আনন্দ নেই তবে আমরা সফল মানুষদের মডেল হিসেবে দেখতে পারি। আমরা incredible you coaching program এ প্রথমে একজন মানুষের inner dna তে কাজকরি। আমরা বিশ্বাস করি অন্যকে বদলানোর আগে নিজেকে বদলাতে হবে। আল্লাহ বলেন সুরা রাদের ১১নং আয়াতে যে আমি ততক্ষণ পর্যন্ত কোন জাতিকে বা মানুষকে বদলাই না যতক্ষন পর্যন্ত সে নিজে নিজেকে না বদলায়। অর্থাৎ দৃষ্টিভঙ্গি বদলালে জীবন বদলে যাবে।
আমরা কোচিং এ inner DNA তে কাজ করে মূলত সে জিনিসটাকে তুলে আনি। জীবনের অনেক তুচ্ছ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক N-code সৃষ্টি হয় এবং সেটা জীবনকে hell করে ফেলে কিন্তু আনন্দের বিষয় হলো সেটাকে আপনি পরিবর্তন করে নিতে পারবেন E-code এর মাধ্যমে। আমাদের NLP tools really very smart । আমি বলব প্রত্যেককেই এই কোচিংটা নেওয়া দরকার।। আপনার সামান্য সিদ্ধান্তে পরিবর্তন হতে পারে সারাটা জীবন।বিলেতে এরকম ১০ সপ্তাহের কৌচিং মিনিমাম চার্য হলো £৩০০০ কিন্তু বাংলাদেশীদের জন্য খুবই কম নামমাত্র মূল্যে করি।
উল্লেখ্য, ইয়াছীন আহমেদ চৌধুরী লায়েক সিলেট জেলার ওসমানীনগর থানার নিজ বুরুঙ্গা গ্রামের পণ্ডীত পাড়ার বাসিন্দা জনাব গৌছুল আলম চৌধুরী আব্দাল মিয়ার ১ম পুত্র। তিনি কার্ডিফ সিটির বাসিন্দা ধনকুবের জনাব আব্দুল আহাদ চৌধুরীর আপন বড় ভাইয়ের ছেলে। লায়েক চৌধুরী দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন