সাব-জেলে যেভাবে রাখা হয়েছে সেনা কর্মকর্তাদের

gbn

গত সরকারের আমলে সেনাবাহিনীতে তারা ছিলেন প্রভাবশালী কর্মকর্তা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটে দাপটের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। কেউ কেউ ছিলেন গোয়েন্দা সংস্থার নিয়ন্ত্রকও। যাদের নির্দেশে অনেকে কারাগারে গিয়েছিলেন—দিন বদলে এখন তারাই গুম, খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কারাবন্দি। 

তিনটি মামলায় গ্রেফতার হওয়া ১৫ জন শীর্ষস্থানীয় সেনা কর্মকর্তা বর্তমানে অবস্থান করছেন সেনানিবাসে অবস্থিত সাব-জেলে। বুধবার (২২ অক্টোবর) ছিল তাদের প্রথম দিন। সেদিনই তারা স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পান। সাক্ষাতের সময় সাব-জেল এলাকায় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। 

সাক্ষাতের সময় সব আসামির পরিবারের সদস্য উপস্থিত ছিলেন। কারা সূত্র জানায়, স্বজনদের কেউ কেউ বাসা থেকে রান্না করা খাবার নিয়ে এলেও সেগুলো ভেতরে নিতে দেওয়া হয়নি। আসামিদের দেওয়া হয়েছে কারা কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত খাবার।   

 

প্রথম দিনের সাক্ষাতের জন্য নির্ধারিত ছিল আধা ঘণ্টা সময়, তবে স্বজনদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় প্রত্যেককে ২০ মিনিট করে সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দুইজন এআইজি (প্রিজন্স) ও তিনজন ডেপুটি জেলারসহ জ্যেষ্ঠ কারা কর্মকর্তা। কারা কর্তৃপক্ষের ধারণা ছিল, সাক্ষাতের সময় আবেগপ্রবণ বা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। এজন্য আগেই পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রাখা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সাক্ষাৎ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়।

কারাবিধি অনুযায়ী, প্রথম সাক্ষাতের ১৫ দিন পর আবারও স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন তারা। বুধবারের সাক্ষাতে শুধু স্ত্রী ও সন্তানরাই দেখা করেছেন। পরবর্তী সাক্ষাৎ হবে ৫ নভেম্বর, যেদিন কিছু আসামিকে আদালতে হাজির করা হবে।

এক কারা কর্মকর্তা জানান, সকালে আসামিরা রুটি ও সবজি খেয়েছেন। দুপুরে ছিল ডাল, ভাত, সবজি এবং পছন্দ অনুযায়ী মাছ বা মাংস। রাতের মেন্যু ছিল দুপুরের মতোই। কারও পছন্দ অনুযায়ী মাছ বা মাংস দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, সাব-জেলে তাদের সময় কাটছে বেশ শান্ত পরিবেশে। বেশির ভাগ সময় তারা শুয়ে-বসে বা বই-পত্রিকা পড়ে সময় কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ টেলিভিশন দেখছেন ও নামাজ-কালাম পড়ছেন। তাদের সহায়তায় কয়েকজন সেবকও নিয়োজিত আছেন। 

 

 

গ্রেফতার সেনা কর্মকর্তাদের আদালতে হাজির করার জন্য প্রসিকিউশন পক্ষ সেনাবাহিনীর কাছে গাড়ি চেয়েছিল। তবে ‘বিতর্কের আশঙ্কায়’ সেনাবাহিনী তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে কারা কর্তৃপক্ষ একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আধুনিক সবুজ প্রিজন ভ্যান প্রস্তুত রাখে এবং সেই গাড়িতেই তাদের আদালতে আনা-নেওয়া করা হয়।

প্রত্যেক সেনা কর্মকর্তাকে সাব-জেলে পৃথক কক্ষে রাখা হয়েছে। সেখানে মোট ১৬টি কক্ষ রয়েছে। তবে নতুন আসামি এলে এক কক্ষে দুই-তিনজন করে রাখা হতে পারে।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার বলেন, সাব-জেলটি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অধীনে হলেও সব বিধিবিধান ও নিয়মকানুন অন্যান্য কারাগারের মতোই মানা হচ্ছে।

তিনি বলেন, বুধবার আমি সাব-জেলে গিয়েছিলাম। আসামিদের কিছুটা বিমর্ষ মনে হয়েছে। তারা কী করবে বুঝে উঠতে পারছে না। তবে কেউ অস্বাভাবিক আচরণ করেনি। আমি তাদের বলেছি— সাব-জেলে থাকা অবস্থায় অবশ্যই কারাবিধি মেনে চলতে হবে।

তিনি আরও জানান, আসামিরা বিধি মেনে চলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন