জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠ আশুলিয়ায় স্কাইল্যাক্স অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার মালিক প্রতি মাসে ৫০০ শ্রমিকের বেতন থেকে দুই হাজার টাকা কেটে নিতেন। কারণ হিসেবে জানিয়েছিলেন আর্থিক অনটনের কথা। দুই বছরে এভাবে প্রায় ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা জমা হয় তার কাছে। গত ১০ ডিসেম্বর সেই টাকা না দিয়েই সোয়েটার তৈরির কারখানাটি হঠাৎ বন্ধ করে দেন মালিক।
শুধু শ্রমিকদের পাওনা বিশাল অঙ্কের টাকা নয়, এক মাসের বেতন না নিয়েই চম্পট দিয়েছেন কারখানা মালিক নাছিরুল ইসলাম পান্না। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ও শিল্প পুলিশের কাছে এ নিয়ে আবেদন করেও সুরাহা পাননি হতদরিদ্র শ্রমিকরা।
শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর_ বেলা ১১টার দিকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাড়কের বাইপাইল এলাকায় বকেয়া বেতন ও পাওনা টাকার দাবিতে বিক্ষোভ করেন কারখানাটির শ্রমিকরা। পরে তারা আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। সমাবেশে শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, ‘মির্জানগর এলাকায় কারখানাটির মালিক পান্না ভারতে পালিয়ে গেছেন।’
কারখানার জ্যাকার্ড অপারেটর নাজমুল ইসলাম জানান, চার বছর ধরে তিনি সেখানে কাজ করছেন। ১০ ডিসেম্বর সকালে কাজে গিয়ে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখতে পান। তখন মালিক পান্নার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ট্রিমিং অপারেটর রুবি আক্তার বলেন, ‘আমাগো এত কষ্টের ট্যাকা না দিয়া পলায় গেছে মালিক। এখন মাস শেষে হয়ে আরেক মাস আইলেও আমরা বেতন পাই নাই। দুই হাজার করে প্রতি মাসে ট্যাকা কাইটা নিছে। হেই ট্যাকারও খোঁজ নাই।’
জাতীয় গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের আশুলিয়া থানা কমিটির সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো কারণ না দেখায় ফ্যাক্টরি বন্ধ করে মালিক ইন্ডিয়া পালাইছে। শ্রম আইনের ১৬, ২৫ ও ৩২ ধারা উল্লেখ করে নোটিশ টানাইছে। এই ধারায় কারখানা বন্ধ করার নিয়ম নাই।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, বিজিএমইএ ও কলকারখানা অধিদফতরে চিঠি দিছি। ১৭ ডিসেম্বর বিজিএমইএ শ্রমিকদের সাথে মিটিং করার কথা ছিল। মালিকের এক ভাগিনার সাথে মিটিংয়ে বসার দায়িত্ব বিজিএমইএ নিলেও, কেউ আসেনি।’
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘এর আগে ওই কারখানায় সমস্যা হয়েছিল। তখন এসপি সাহেবসহ আমরা ঠিক করে দিছিলাম। মালিক হুট করে গত সপ্তাহে কেন কারখানা বন্ধ করে দিছে আমরাও জানি না। ওনার না কি প্রচুর লস হইছে। একবার ৬ কোটি, একবার ১০ কোটি ও ২০ কোটি টাকার কথা বলেছিল। এটা তো আর আমরা জানি না।’

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন