৯ শীর্ষ জেনারেলকে বরখাস্ত করল চীনের কমিউনিস্ট পার্টি

gbn

চীনের কমিউনিস্ট পার্টি একযোগে দেশটির নয় শীর্ষস্থানীয় জেনারেলকে বরখাস্ত করেছে। একই সঙ্গে তাদের সামরিক বাহিনী থেকে পদচ্যুত করা হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি কয়েক দশকের মধ্যে চীনের সামরিক বাহিনীতে সবচেয়ে বড় ঘটনাগুলোর একটি।

চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই ৯ কর্মকর্তা গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট অপরাধের অভিযোগে সন্দেহভাজন।

এদের অধিকাংশই তিন তারকা জেনারেল এবং কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। সেখানে দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সামরিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

 

বিবৃতিতে এ পদক্ষেপকে দুর্নীতি দমন অভিযানের অংশ হিসেবে উল্লেখ করা হলেও, অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন এটি রাজনৈতিক শুদ্ধিকরণের অংশও হতে পারে। বিশেষ করে আসন্ন কেন্দ্রীয় কমিটির পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের আগে এমন একটি পদক্ষেপ রাজনৈতিক বার্তা বহন করছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

 

শুধু সামরিক কর্মকর্তাই নয়, বেসামরিক পদেও বেশ কিছু পরিবর্তন হয়েছে। বিশেষ করে ২০২৩ সালে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কি গ্যাংয়ের হঠাৎ নিখোঁজ হওয়া এবং তার উত্তরসূরি লিউ জিয়ানচাউয়ের সাম্প্রতিক অনুপস্থিতি রাজনৈতিক অস্থিরতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

চীনা রাজনীতি বিশ্লেষক ও এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের ফেলো নেইর থমাস বিবিসি চাইনিজকে বলেন, ‘শি চিনপিংয়ের শুদ্ধিকরণ মূলত তার ক্ষমতা প্রদর্শনের অংশ। তিনি দুর্নীতিগ্রস্ত ও অবিশ্বস্ত ক্যাডারদের বাদ দিতে চান, যেন পার্টি নিজের ভেতর থেকে পরিশুদ্ধ হয় এবং দীর্ঘ সময় ধরে শাসনক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে।

’ তার মতে, এই শুদ্ধিকরণ চীনের শাসনব্যবস্থাকে আরো কঠোর ও নিয়ন্ত্রণকেন্দ্রিক করে তুলবে।

 

বরখাস্ত হওয়া ৯ জেনারেলের নাম হলো:

১. হি ওয়েইডং – সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের (সিএমসি) ভাইস চেয়ারম্যান
২. মিয়াও হুয়া – সিএমসির রাজনৈতিক বিভাগের পরিচালক
৩. হে হংজুন – সিএমসির রাজনৈতিক বিভাগের নির্বাহী উপপরিচালক
৪. ওয়াং জিউবিন – সিএমসির জয়েন্ট অপারেশন কমান্ড সেন্টারের নির্বাহী উপপরিচালক
৫. লিন জিয়াংইয়াং – ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডার
৬. কিন শুতং – সেনাবাহিনীর রাজনৈতিক কমিশনার
৭. ইয়ুআন হুয়াজি – নৌবাহিনীর রাজনৈতিক কমিশনার
৮. ওয়াং হৌবিন – রকেট ফোর্স কমান্ডার
৯. ওয়াং চুনিং – আর্মড পুলিশ ফোর্স কমান্ডার

এই তালিকার মধ্যে হি ওয়েইডং চীনের সামরিক বাহিনীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্মকর্তা, প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের পরই যার অবস্থান। গত মার্চের পর থেকে তাকে জনসম্মুখে দেখা যায়নি, যা নিয়ে অনেকদিন ধরেই জল্পনা চলছিল। এবার সেটি সত্যে রূপ নিলো। তিনি শুধু সিএমসিরই নয়, কমিউনিস্ট পার্টির সর্বোচ্চ ফোরাম পলিটব্যুরোর সদস্যও ছিলেন।

ফলে তিনি প্রথম পলিটব্যুরো সদস্য হিসেবে এ ধরনের তদন্তের মুখোমুখি হচ্ছেন।

 

চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই ৯ ব্যক্তি দলের শৃঙ্খলা মারাত্মকভাবে লঙ্ঘন করেছেন এবং দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট গুরুতর অপরাধে জড়িত থাকার সন্দেহ রয়েছে।’ তাদের সামরিক বিচার প্রক্রিয়ার আওতায় আনা হচ্ছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এই শাস্তি চীনের সামরিক বাহিনীর দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবে বিবেচিত হবে। এর আগেও চীন সীমিত পরিসরে সামরিক শুদ্ধি অভিযান চালিয়েছে। এর মধ্যে দুই সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই ফেংঘে ও লি শাংফুওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি রকেট ফোর্সের শীর্ষ কর্মকর্তারাও একইভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন