লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করলো কানাডা

gbn

ভারতীয় গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই ও তার গ্যাংকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে কানাডা সরকার। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কানাডার পাবলিক সেফটি মন্ত্রী গ্যারি আনন্দসাঙ্গারী এ ঘোষণা দেন। দেশটির ক্রিমিনাল কোড অনুযায়ী এই ঘোষণা কার্যকর হলো।

এর ফলে কানাডায় বিষ্ণোই গ্যাংয়ের যেকোনো সম্পদ- নগদ অর্থ, যানবাহন বা সম্পত্তি জব্দ বা বাজেয়াপ্ত করা যাবে। এছাড়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এখন গ্যাং সদস্যদের বিরুদ্ধে আরও কঠোরভাবে মামলা পরিচালনা করতে পারবে, বিশেষ করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়নের মতো অপরাধে। একই সঙ্গে সন্দেহভাজন গ্যাং সদস্যদের কানাডায় প্রবেশে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ বাধা দিতে পারবে।

 

সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়, কানাডায় সহিংসতা ও সন্ত্রাসের কোনো স্থান নেই, বিশেষ করে এমন কর্মকাণ্ড যেগুলো নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে ভয় ও আতঙ্কে রাখার উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়।

কানাডার আইনে এখন দেশটির নাগরিকদের জন্য বিষ্ণোই গ্যাংয়ের কোনো সম্পদ ব্যবহার বা নিয়ন্ত্রণ করা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এছাড়া এই গ্যাংকে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে কোনো সম্পদ দেওয়া কিংবা আর্থিক সুবিধা দেওয়াও অপরাধ।

 

এক মাস আগে কানাডার বিরোধী দলের এমপি ও শ্যাডো পাবলিক সেফটি মন্ত্রী ফ্রাঙ্ক ক্যাপুটো বিষ্ণোই গ্যাংকে সন্ত্রাসী হিসেবে ঘোষণা করার আহ্বান জানান। তিনি এক চিঠিতে গ্যারি আনন্দসাঙ্গারী লেখেন, এই গ্যাং কানাডার নাগরিকদের হত্যা, চাঁদাবাজি ও অন্যান্য অপরাধে জড়িত, যা রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও মতাদর্শগত উদ্দেশ্য পূরণে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ক্যাপুটোর পাশাপাশি আরও চারজন রাজনীতিক এই দাবি জানান। ব্রাম্পটনের মেয়র প্যাট্রিক ব্রাউন তাদের মধ্যে অন্যতম। ব্রাম্পটনে কানাডার শিখ জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ বসবাস করেন । এছাড়া ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার প্রিমিয়ার ডেভিড এবি, আলবার্টার প্রিমিয়ার ড্যানিয়েল স্মিথ ও সারে শহরের মেয়র ব্রেন্ডা লকও একই আহ্বান জানান।

অপরাধ জগতে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের ইতিহাস

 

কানাডার সরকার দীর্ঘদিন ধরেই বিষ্ণোই গ্যাংকে একটি বিপজ্জনক অপরাধী সিন্ডিকেট হিসেবে চিহ্নিত করে আসছে। এই গ্যাং হত্যাকাণ্ড, অস্ত্র ও মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত।

লরেন্স বিষ্ণোই জুন মাসে সহযোগী গোল্ডি ব্রারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। তার গ্যাংয়ের সঙ্গে একাধিক হত্যাকাণ্ডের যোগসূত্র পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে- ২০২২ সালের মে মাসে পাঞ্জাবি গায়ক সিধু মুসেওয়ালার হত্যা, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর রাজপুত নেতা সুখদেব সিং গোগামেদিকে হত্যা, ২০২৪ সালের অক্টোবরে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিবিদ বাবা সিদ্দিকীকে হত্যা, ২০২৫ সালের এপ্রিলে বলিউড অভিনেতা সালমান খানের বাড়ির বাইরে গুলি চালানো।

তবে ২০২৩ সালের জুনে কানাডার নাগরিক ও খালিস্তানপন্থি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারের হত্যাকাণ্ড এই গ্যাংকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচিত করে তোলে। নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের পর কানাডার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছিলেন, ভারত সরকার এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। ভারত এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানায়, ট্রুডো কেবল খালিস্তানি ভোটব্যাংকের তুষ্টির জন্য এমন মন্তব্য করেছেন। এই হত্যাকাণ্ড কেন্দ্র করেই ভারত-কানাডা সম্পর্ক গভীর সংকটে পড়ে।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন