শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ ছিলেন একজন শিক্ষার্থী এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী। তিনি একজন মুক্তপেশাজীবী বা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতেন। আন্দোলনের সময় খাবার পানি এবং বিস্কুট বিতরণ করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন মুগ্ধ। মুগ্ধর মৃত্যু কোটা সংস্কার আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছে।
মুগ্ধর বাবার নাম মীর মোস্তাফিজুর রহমান, মায়ের নাম শাহানা চৌধুরী। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তিন ভাইয়ের মধ্যে মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ ও মুগ্ধ ছিলেন যমজ। মুগ্ধ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০২৩ সালে গণিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে এমবিএ করছিলেন। মৃত্যুর সময় তার গলায় বিইউপি আইডি কার্ডটি রক্তমাখা অবস্থায় ছিল।
তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ফাইভারে এক হাজারের বেশি কাজ সম্পন্ন করেন। ফ্রিল্যান্সিংয়ের পাশাপাশি তিনি একজন ভ্রমণপিপাসু, ফুটবলার, এবং বাংলাদেশ স্কাউটসের সদস্য ছিলেন।
ফাইভার ৩১ জুলাই ২০২৪ তারিখে এক ভেরিফাইড অফিশিয়াল পোস্টে জানায়, মুগ্ধ ছিলেন একজন প্রতিভাবান মার্কেটার। বিশেষ করে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবস্থাপনায় তার ছিল অসাধারণ দক্ষতা।
২০২৪ সালের ১৮ জুলাই সন্ধ্যায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ঢাকায় সংঘর্ষ চলাকালে মুগ্ধ গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর তার যমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ ফেসবুকে একটি ছোট ভিডিও পোস্ট করলে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ফাইভার তার মৃত্যুর পর সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক প্রকাশ করে।
শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনে শহীদ হওয়া সবাইকে উৎসর্গ করে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য বাংলা লেখার বিশেষ সফটওয়্যার "শহীদ মুগ্ধ কীবোর্ড" প্রকাশিত হয়।
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সহিংসতায় ১৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন। মুগ্ধর মৃত্যু এই আন্দোলনের অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয় এবং এটি সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোচনার জন্ম দেয়। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর বন্ধু জাকিরুল ইসলাম তাকে রাজধানীর ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নিয়ে যান, যেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউতে আয়োজিত একটি ড্রোন শোতে প্রদর্শিত মীর মুগ্ধের প্রতিকৃতি। ২০২৪ সালে ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত মুক্তমঞ্চের নাম পরিবর্তন করে তার স্মরণে মুগ্ধ মঞ্চ রাখা হয়। এর আগে, ২০২২ সালে এটি বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চ নামে পরিচিত ছিল।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন