ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘাত শুক্রবার (২০ জুন) দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়িয়েছে। এদিকে ইউরোপীয় কর্মকর্তারা ইরানকে আবারও আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনতে চাচ্ছেন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমেরিকা এই সংঘাতে যুক্ত হবে কিনা সে সিদ্ধান্ত আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে জানানো হবে।
গত শুক্রবার ইসরায়েল ইরানে হামলা শুরু করে দাবি করে যে তারা দীর্ঘদিনের শত্রু ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে রুখতে চায়। এর জবাবে ইরান ইসরায়েলের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। ইরান অবশ্য দাবি করেছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্টস নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইরানে এখন পর্যন্ত ৬৩৯ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীরাও রয়েছেন। অপরদিকে, ইরানি হামলায় অন্তত দুই ডজন ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।
ইসরায়েল মূলত ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা, ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা এবং সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সরকারকে দুর্বল করতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে পশ্চিমা ও আঞ্চলিক কর্মকর্তারা।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
ইরান জানিয়েছে, তারা শুধু ইসরায়েলের সামরিক ও প্রতিরক্ষা অবকাঠামোগুলো লক্ষ্য করছে।
ইসরায়েল বৃহস্পতিবার অভিযোগ করেছে, ইরান ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্য করে ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করেছে, যা বিস্ফোরণের সময় অনেক ছোট ছোট বোমা চারদিকে ছড়িয়ে দেয়। জাতিসংঘে ইরানের মিশন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই শুক্রবার জেনেভায় এক বৈঠকে বসছেন ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতির প্রধান, যেখানে অংশ নিচ্ছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বৈঠকের আগে বলেন, এখনই সময় মধ্যপ্রাচ্যের ভয়াবহ পরিস্থিতি থামানোর এবং একটি আঞ্চলিক যুদ্ধ প্রতিরোধের, যা কারও জন্যই মঙ্গলজনক হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বৃহস্পতিবার ল্যামির সঙ্গে বৈঠক করেন এবং অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স ও ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে আলাদা ফোনালাপ করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, আলোচনায় সবাই একমত হয়েছেন যে, ইরান কখনই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারবে না।
বিজ্ঞাপন
এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করে দ্রুত উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে ক্রেমলিন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাই এখনো অনিশ্চিত। ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গত সপ্তাহ থেকে আরাকচির সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে একটি জাতীয় নিরাপত্তা বৈঠকে অংশ নেবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি একদিকে যেমন ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, অন্যদিকে আবার পারমাণবিক আলোচনা পুনরায় শুরুর আহ্বানও জানিয়েছেন।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন