ইসরায়েলকে ইরানের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কারণ পারমাণবিক চুক্তি ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে আলোচনা চলমান রয়েছে ও বিষয়টি সমাধানের কাছাকাছি পৌঁছেছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোর পরিকল্পনা আছে তাদের। তবে ইরানও পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে জানায়, হামলা হলে কঠোর জবাব দেওয়া হবে।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৮ মে) হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, আমি নেতানিয়াহুকে বলেছি, এখনই হামলা করা ঠিক হবে না; কারণ আমরা সমাধানের খুব কাছাকাছি চলে এসেছি।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান ও ইউরোপের দেশ ইতালিতে কয়েক দফা বৈঠকের পর এখন ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন করে চুক্তির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। রয়টার্সকে দুই ইরানি কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের জব্দ করা অর্থ ছেড়ে দিলে ও বেসামরিক উদ্দেশ্যে ইউরেনিয়াম পরিশোধনের অধিকার মেনে নিলে, আমরা এক বছরের জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ রাখতে পারি।
এদিকে, জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি জানান, ইরান-যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার ফল এখনো অনিশ্চিত। তবে আলোচনার অব্যাহত থাকা ইতিবাচক বিষয়। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, দুই পক্ষের মধ্যেই সমাধানে পৌঁছানোর ইচ্ছা রয়েছে।
এর আগে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হানার পরিকল্পনা করছে। এই সম্ভাব্য হামলা ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক আলোচনার অগ্রগতি ব্যাহত করতে পারে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা উদ্বিগ্ন যে ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে এতটাই আগ্রহী যে, তিনি হয়তো তেহরানকে তার পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ সুবিধাগুলো রাখতে দেবেন, যা ইসরায়েলের জন্য ‘লাল সংকেত’।
এদিকে, চলতি মাসে মধ্যপ্রাচ্য সফরে গিয়ে ইসরায়েলকে উপেক্ষা করেন ট্রাম্প, যা কূটনৈতিক মহলে বিস্ময় সৃষ্টি করে। এছাড়া ট্রাম্প একাধিক নীতিগত ঘোষণা দিয়েছেন, যা ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের গতানুগতিক চিন্তাধারাকে চ্যালেঞ্জ করেছে।
নেতানিয়াহুও এই বিষয়টি নিয়ে স্পষ্টভাবে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্কে কোনো ফাটল ধরেনি। একইসঙ্গে ট্রাম্পও এমন গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছেন।
তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনাপ্রবাহ মধ্যপ্রাচ্য ও আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক ক্ষেত্রে নতুন উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের ‘চুক্তিপ্রিয়তা’ ও ইসরায়েলের নিরাপত্তা উদ্বেগ একে অপরের মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বরাজনীতিতে স্পর্শকাতর বিষয় হিসেবে বিবেচিত, তাই এই আলোচনার ফলাফল শুধু যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েল নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপীয় নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন