রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের হাওয়ায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) বদলে গেছে। সভাপতির চেয়ারে নাজমুল হাসানের জায়গায় বসেছেন ফারুক আহমেদ। আরো অনেক কিছুই বদলানোর অপেক্ষায়। তবে একটি ব্যাপার এখনো ঠিক আগের মতোই।
অনেক কিছু নিয়েই আলোচনা হচ্ছে, কিন্তু এর কেন্দ্রবিন্দুতে বরাবরের মতো একজনই। তিনি সাকিব আল হাসান। আগে এই অলরাউন্ডারকে নিয়ে প্রশ্নে সংবাদ সম্মেলনের বড় একটি সময় চলে যেত নাজমুলের। এবার ফারুকও সে পথেই হাঁটলেন বলে! গত ২১ আগস্ট বিসিবি সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার দিনই তেমন পূর্বাভাস পেয়ে যাওয়ার কথা তার।
রবিবার পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ। খুশিতে ক্রিকেট বোর্ডে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। অথচ এই আনন্দে মজে থাকার সুযোগ পাননি নতুন বিসিবি সভাপতি। ম্যাচ শেষ হতেই যে সংবাদমাধ্যমের ফোনে জর্জর তিনি।
পরের টেস্টে খেলবেন তো সাকিব? একজন হত্যা মামলার আসামিকে পরের টেস্টে খেলানো হবে কি না, তা নিয়ে কৌতূহলী জিজ্ঞাসার ঝড়ই যেন বয়ে যাচ্ছে তার ওপর দিয়ে। গতকাল সন্ধ্যায়ও তাকে বলতে শোনা গেল, ‘এটি নিয়ে পরে কথা হবে। যা জানানোর, বোর্ড থেকেই (বিবৃতির মাধ্যমে) জানিয়ে দেওয়া হবে।’
ফারুকের সঙ্গে একই দিনে বিসিবির নতুন পরিচালক হিসেবে মনোনীত হন নাজমুল আবেদীন ফাহিম। গতকাল মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে তাকেও প্রশ্নবাণে জর্জরিত হতে হলো, যার বেশির ভাগজুড়েই রইলেন সাকিব।
তবে এই ক্রিকেট কোচ ও বিশ্লেষক পরিষ্কার করে দেন, পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের পর তার সঙ্গে বাঁহাতি অলরাউন্ডারের কথা হয়েছে বটে, তবে সেটি ভিন্ন পরিচয়ে, ‘এখন ওর সঙ্গে (কথা বলায়) আমার দুটি পরিচয়। তবে আমি বোর্ডের পক্ষ থেকে কোনো কথা বলিনি। আমি ওর মেন্টর ও কোচ হিসেবে কথা বলেছি। ওর পারফরম্যান্স নিয়ে, ওর ব্যাটিং নিয়ে কথা বলেছি। সেটির সঙ্গে বোর্ডের কোনো সম্পর্ক নেই। ও কিভাবে কী করলে ভালো করবে, সেটিই ওকে বলার চেষ্টা করেছি।’
পাকিস্তানের মাঠে ১০ উইকেটের দাপুটে জয়ে বল হাতে উজ্জ্বল ছিলেন সাকিব। পেসারদের জন্য সহায়ক উইকেটে প্রথম ইনিংসে ১ উইকেট পেলেও দ্বিতীয় ইনিংসে নেন গুরুত্বপূর্ণ ৩ উইকেট। এর মধ্যে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সউদ শাকিলের উইকেটটির কথা আলাদা করে বলতে হবে। সউদকে এগিয়ে এসে খেলতে বাধ্য করা বলে দারুণ টার্নে বাঁহাতি ব্যাটারকে পরাস্ত করেন সাকিব। স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়ে ফিরতে বাধ্য হন আগের ইনিংসে ১৪১ রান করা ব্যাটার।
অথচ ম্যাচ-আপের হিসাবে পটু সাকিব সামনে বাঁহাতি ব্যাটার থাকলে অনেক সময়ই বোলিং করতে চান না। নাজমুল আবেদীনও একই কথা বললেন, ‘সাকিব যখন বাঁহাতি ব্যাটারের বিপক্ষে বোলিং করে, তখন কিন্তু স্বস্তি অনুভব করে না।’ এ জন্য সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুযোগ থাকলেও সব ম্যাচে নিজের কোটা শেষ করেননি সাকিব। কিন্তু পাকিস্তান টেস্টে অভিজ্ঞ এ ক্রিকেটারকে ভিন্ন রূপেই আবিষ্কার করেছেন তাঁর কোচ, ‘একজন যথার্থ টেস্ট বোলার যেভাবে বোলিং করে, সেভাবেই সে বোলিং করেছে। বোলিংয়ে তার নিজের ওপর যে আস্থা আছে, সেটি নিয়েই কিন্তু বোলিং করেছে। ডানহাতি-বাঁহাতি, সবার বিপক্ষেই বোলিংয়ের প্রস্তুতি ওর ছিল। মনে হয়েছে যখনই তাকে বল দেওয়া হয়েছে, উইকেট নেওয়ার জন্য বোলিং করছে সে।’
এভাবেই নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে বছরের পর বছর আলোচনায় থেকেছেন সাকিব। একইভাবে আলোচনা উসকে দিয়েছেন মাঠের বাইরের কর্মকাণ্ডেও। এবার সঙ্গে যোগ হয়েছে হত্যা মামলাও!
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন