মৌলভীবাজার প্রতিনিধি \ মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন পত্রিকা ও টেলিভিশনে কর্মরত সাংবাদিকদের প্রেসক্লাবে সহযোগী সদস্য ও প্রাথমিক সদস্য করে রাখা, তাদের স্থায়ী সদস্য না করা ও ভোটাধিকার না দেয়া। তাদের পরে আসা এমন বেশ কয়েকজনকে সারাসরি প্রাথমিক সদস্য করে তরিগরি করে স্থায়ী সদস্য ও ভোটার করে নেয়া। সাংবাদিকতার সাথে জড়িত রয়েছেন নতুন করে সদস্য হতে ইচ্ছুক এমন নবীণদের সদস্য না করা। করলেও গোপনে প্রেসক্লাবের বিতর্কিত সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুবলীগ সহ-সভাপতি পান্না দত্ত তাদের পাল্লা ভারী রাখতে পছন্দের সাংবাদিককে দ্রæতারসহিত স্থায়ী সদস্য ও ভোটার করে নেন। তাদের এমন সেচ্ছাচারীতা, নানা অনিয়ম ও বৈষম্যের কারণে ২১ আগষ্ট মৌলভীবাজর প্রেসক্লাবে এক তলবি সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সিনিয়র সাংবাদিক বকসি ইকবাল আহমদ। সভায় সর্বসম্মত ভাবে ৭ সদস্য বিশিষ্ট এডহক (আহবায়ক) কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির আহবায়ক করা হয় বকসি ইকবাল আহমদ (সম্পাদক দৈনিক বাংলার দিন), সদস্য সচিব শেখ সিরাজুল ইসলাম সিরাজ (সম্পাদক, মৌমাছি কন্ঠ/নিউজ টুয়েনটিফোর)। সদস্য-এস এম উমেদ আলী (এনটিভি/দৈনিক ইনকিলাব), মোঃ আজাদুর রহমান (দৈনিক সংগ্রাম), নজরুল ইসলাম মুহিব (দৈনিক ইত্তেফাক/নিউনেশন), মোঃ মাহবুবুর রহমান রাহেল দৈনিক আমার সংবাদ/মৌলভীবাজার টুয়েনটিফোর), মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ দৈনিক যায়যায়দিন/জালালাবাদ)। নতুন করে সদস্য গ্রহন ও যাচাই বাছাই উপ-কমিটিতে যারা আছেন-সৈয়দ হুমায়েদ আলী শাহীন (দৈনিক জনকন্ঠ/বাংলাভিশন), বকসি মিছবাহ-উর রহমান (দিপ্তটিভি), মু. ইমাদ উদ-দীন ( দৈনিক মানব জমিন)। ৪ আগষ্ট ২০২৪ মৌলভীবাজার শহরের চৌমুহনা এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সন্ত্রাসী ও স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগের গুন্ডা হেলমেট বাহিনীর হাতে প্রেসক্লাবের কয়েক জন সদস্যসহ অন্তত ১০ জন সাংবাদিক মারধরের স্বীকার ও লাঞ্ছিত হন। ছিনিয়ে নেয়া হয় মুঠোফোন। ভাংচুর করা হয় কয়েকটি মটরবাইক। এ ঘটনায় প্রেসক্লাব কোন প্রকার নিন্দা বা প্রতিবাদও করেনি। বিগত দিনেও সাংবাদিক নির্যাতনে নিন্দা বা প্রতিবাদ না জনিয়ে প্রেসক্লাব নিরব ছিল। প্রেসক্লাব দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ রেখে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। সভাপতি ও সম্পাদকের প্রয়োজনে মাঝে মধ্যে ক্ষণিকের জন্য প্রেসক্লাব খুলে আবার বন্ধ করে চলে যান। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাধারণ সভা ও কার্যনির্বাহী কমিটির সভা হয়নি। করলেও তা গোপনে করে সভাপতির বাসায় ডেকে নিয়ে রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর নেয়ার ঘটনা দীর্ঘদিনের। সভাপতির এ অনৈতিক কাজে তাকে সহযোগিতা করেন সাধারণ সম্পাদক পান্না দত্ত। এক নারী সাংবাদিককে অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে বিতর্কিত সভাপতি এম এ সালাম ও পান্না দত্ত প্রভাব খাটিয়ে ক্রিয়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদ থেকে বহিস্কার করেন। ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ১০ জন সাংবাদিককে পরিচয় পত্র না দেয়ার পেছনে তাদের ইঙ্গিত ছিল। বিগত সময়ে বিভিন্ন সেমিনার, ওয়ার্কসপ, অরিয়েনন্টেশন সভায় সভাপতি ও সম্পাদকের পছন্দের ৫-৭ জনকে সবসময় পাঠানো হত। এম এ সালাম দীর্ঘ ২ যোগ থেকে সভাপতি অথবা নির্বাহী কমিটির ১ নং সদস্য হিসেবে রয়েছেন। সভায় বসলে তার প্রস্তাব অনুযায়ী সকল সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে বাধ্য করেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ আগষ্ট ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গেলে ছাত্র-জনতা শহরের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায় ও শেখ হাসিনার ছবি, আওয়ামী লীগ নেতার ছবি ও বিভিন্ন স্থাপনা ভাংচুর করে। ওইদিন রাতে প্রেসক্লাকে শেখ হাসিনার ছবি ভাংতে প্রেসক্লাবে আম-জনতা হামলা চালায়। ওই সময় প্রেসক্লাবের কয়েকজন সদস্য প্রেসক্লাব ভবনের অন্যান্য ক্ষতি থেকে রক্ষা করেন। জেলা পর্যায়ে একমাত্র প্রেসক্লাবের ভেতর ও বাহিরে পরিবেশ অত্যন্ত নোংরা। ২০০৬ সালে প্রেসক্লাবের দ্বিতল ভবন নির্মানে তৎকালিন সংসদ সদস্য প্রথম ধাপে ১৬ লক্ষ টাকার অনুদান দিয়েছিলেন। জেলা পরিষদ টেন্ডার আহবায়ন করে ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজও শুরু হয়। পরে বিতর্কিত ব্যক্তি এম এ সালাম কাজে বাঁধা দিয়ে উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে দেন। জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সভায় সভাপতি হিসেবে এম এ সালাম কখনও উপস্থিত হননি। যে কারণে জেলার আইনশৃঙ্খলার কোন বিষয় উপস্থাপন হয়নি।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন