ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধা ||
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এই হাসপাতালের নাম সুন্দরগঞ্জ হলেও এখানে নেই কোনো সৌন্দর্য। হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ দেখলে যে কারোই মনে হবে, যেন হাসপাতালটিই রুগ্ন।
আর এ কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন এখানে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা। চিকিৎসা সেবা নিতে এসে হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অনেকেই অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
সোমবার(৪ জুলাই) সরেজমিনে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, এই হাসপাতালে বেশ কিছু রোগী ভর্তি হয়েছেন। আবার অনেক রোগী নিয়ে আসছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ নাক চিপে ঢুকছেন। কেউ বা বমিও করছেন। কারণ এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রচণ্ড অভাব। প্রতিষ্ঠানটির সম্মুখভাগের সীমানা প্রাচীর ঘেরা জায়গাতেই আবর্জনার স্তূপ। চারদিকে ময়লার ডাগার। একটু বাতাসে দুর্গন্ধে পেটের নাড়িভুড়ি উল্টে আসে। এখানকার ব্যবহৃত ইঞ্জেকশনের এ্যাম্পুল, গজ, তুলাসহ অন্যান্য বর্জ্য পদার্থ যত্র-তত্র পড়ে রয়েছে। এছাড়া বারান্দায় ময়লা ফেলে রাখতে দেখা গেছে। ওষুধের বিভিন্ন ধরনের পরিত্যক্ত মোড়ক, পলিথিন, তুলা, টিস্যুসহ যতো প্রকারের উচ্ছিষ্ট রয়েছে সবই এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভেতরে ও বাহিরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। হাসপাতালে দায়িত্বরত কিংবা দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা ময়লার পাশ দিয়েই প্রতিদিন অফিসে আসা-যাওয়া করছেন কিন্তু তাদের এই ব্যাপারে কোনো দায় নেই।
শহিদুল ইসলাম নামের একজন রোগীর স্বজন বলেন, ‘চিকিৎসেবা নেওয়ার জন্য আমার ভাইকে নিয়ে আসছি। এই হাসপাতাল গেইটে ঢুকতে মারাত্বক দুর্গন্ধ নাকে এসেছে। এনম অবস্থায় এখানে ভালো মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়বে। কিন্তু এগুলো তো দেখার কেউ নাই।’
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক রোগী ও তার স্বজন বলেন, ‘বেশ-কয়েকদিন ধরেই এ আবর্জনাগুলো দেখছি এখানে। স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠানটি এখন আবর্জনায় ভরা। যার কারণে দুর্গন্ধে দাঁড়িয়ে থাকাও মুসকিল। এগুলা কেউ পরিষ্কারও করে না। যেন সবাই চোখ বুজে চলাফেরা করে।’
আজিরন বেওয়া নামে ভুক্তভোগী এক নারী বলেন, ‘দিনের পর দিন এই হাসপাতালে এমন অস্বাস্থ্যকর অবস্থা। রোগী নিয়ে থাকতে খুব কষ্ট হয়। এই বাজে গন্ধে আমার রোগী বমি করে। খেতেও পারে না। আমি নিজেও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা আর অবহেলার জ্বলন্ত প্রমাণ এটি।’
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ জানান, ক্লিনার সংকট থাকায় কিছু আবর্জনা জমেছে। সেই সঙ্গে কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণেও এমনটি হয়েছে। খুব দ্রুত এসব আবর্জনা অপসারণ করা হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন