হাফিজুল হক, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর সাপাহারে সহায় সম্বলহীন মানসিক ভারসাম্যহীন গীতা রানী (৫৫) নামে সেই নারীকে সুস্থ করে নিরাময় আশ্রমে পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন ইউএনও আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন।
২৮ জুলাই ২১ বৃহস্পতিবার সকালে সাপাহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন নিজ উদ্যোগে উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে নওগাঁ জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিরাময় আশ্রমে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। সুস্থ হয়ে বাকি জীবনের সময়টুকু সুস্থ ভাবে যাতে থাকতে পারেন সে ব্যবস্থা নিশ্চিত হলো গীতা রানীর।
উল্লেখ্য যে, গত ১০ জুলাই শনিবার দিবাগত রাত ১০ টার দিকে উপজেলার শিরন্টী ইউনিয়নের পাগলার মোড় নামক স্থানে মানসিক ভারসাম্যহীন বীভৎস অবস্থায় তিন দিন যাবত পড়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক সেখানে ছুটে গিয়ে সাপাহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন তাৎক্ষণিক বস্ত্রহীন অসুস্থ ওই মহিলাকে লকডাউনে দোকানপাট বন্ধ থাকায় নিজের সহধর্মীনির বস্ত্র দিয়ে ইজ্জত ঢাকানোর পর চিকিৎসার জন্য সাপাহার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির করেন এবং উদ্ধারকৃত অসুস্থ নারীকে দেখভালের জন্য স্থানীয় এক মহিলাকে নিজ খরচে নিয়োজিত করেন ও তার চিকিৎসার যাবতীয় খরচ নিজেই বহন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
দীর্ঘ ১৯ দিন চিকিৎসা সেবার পর সুস্থ হলে ওই বৃদ্ধা মহিলাকে নওগাঁ জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিরাময় আশ্রমে পাঠানোর হয়।
এই সময় উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবা কর্মকর্তা তৌফিকুর রহমান, জনসাস্থ উপ-প্রকৌশলী সন্তোষ উপজেলার অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ,স্থানীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মানিক, সিনিয়র সহ সভাপতি হাফিজুল হক, সাংবাদিক নাজমুল হক সনি ও মাহমুদুল হাসান, জবইবিল জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সমাজকল্যাণ সংস্থার সভাপতি সোহানুর রহমান সবুজ প্রমুখ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল্যাহ আল মামুন বলেন, একজন মানুষ হিসাবে একজন মানুষের পাশে দাঁড়ানো মানবিক দ্বায়িত্বের মধ্য পড়ে। আমি সেটাই প্রতিপালন করেছি। গাতী রানী সুস্থ্য হলে তাঁকে সেইফ হোমে পাঠানোর ব্যাবস্থা করতে পেরে পরম করুনাময় মহান আল্লাহর নিকট অত্যান্ত আনন্দিত।
কে এই গিতা রানি কি তার পরিচয়:
গীতা রানীর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানাযায়, প্রায় ৫ বছর আগে সাপাহার উপজেলা আসে এই নারী। মানসিক ভারসম্য হারিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াতেন। ২ বছর আগে ২ মাস থেকেছেন শিরন্টি ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ শ্রী যোগেশের বাড়িতে।
তখন তার ঠিকানা খুজে বের করে ওই গ্রামপুলিশ যোগেশ। তার নাম গীতা রানী। মান্দা উপজেলায় তার বাড়ি ছিল। সেখানে দেড় বিঘা জমি আছে। কিন্তু তার স্বজনেরা তাকে নিতে চাননা। কারণ হিসেবে তারা যোগেশকে জানান, হিন্দু থাকা অবস্থায় তার বিয়ে হয়ে ছিল। পরে স্বামী-সন্তান রেখে মুসলমান ধর্মান্তরিত হয়ে এক মুসলিম বিবাহিত যুবককে বিয়ে করেন। কিন্তু ওই যুবকের আগের স্ত্রী তাকে বাড়িতে উঠতে দেয়নি। এরপর কিছু দিন তারা আলাদা সংসার করে। এক সময় ওই স্বামী তালাক দিয়ে দেয় তাঁকে। এর পর থেকেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে দিক-বিদিক ঘুরে বেড়ান গীতা।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন