যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আগামী ২১ নভেম্বর (শুক্রবার) সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত হবে। দিবসটি উপলক্ষে দেশের সব সেনানিবাস, নৌ ঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমানবাহিনী খাঁটির মসজিদসমূহে দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি, সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি এবং স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক পৃথক বাণী দেবেন।
১৯৭১ সালেম মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা শুক্রবার সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
এরপর সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এ ছাড়া তিন বাহিনী প্রধানরা সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এবং বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ঢাকা সেনানিবাসস্থ আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে নির্বাচিত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করবেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা ১০১ জন নির্বাচিত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উত্তরাধিকারীদের মধ্যে শুভেচ্ছা স্মারক বিতরণ ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক), প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ও নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং রোহিঙ্গা সমস্যা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টিটিভ), সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমানবাহিনী প্রধান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও), প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ অসামরিক ও সামরিক ঊর্ধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ২১ নভেম্বর বিকেল ৪টায় ঢাকা সেনানিবাসস্থ সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এ সংবর্ধনায় উল্লেখযোগ্য আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিরা, প্রাক্তন প্রধান উপদেষ্টারা, উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা পদমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা, বিচারপতিরা, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, মুখ্য সচিব, বাহিনীগুলোর প্রাক্তন প্রধানরা, প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তারা, স্বাধীনতাযুদ্ধের সব বীরশ্রেষ্ঠের উত্তরাধিকারীরা, স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে ঢাকা এলাকায় বসবাসরত খেতাবপ্রাপ্ত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা/তাদের উত্তরাধিকারীরা, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে সংঘটিত বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শহীদ সেনাসদস্যদের পত্নীরা/উত্তরাধিকারীরা, স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদক প্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা, ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা, উচ্চপদস্থ বেসামরিক কর্মকর্তারা এবং তিন বাহিনীর কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
ঢাকা ছাড়াও বরিশাল, কক্সবাজার, বগুড়া, সিলেট, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, যশোর, রংপুর ও খুলনা সেনানিবাস/খাঁটিতে সংশ্লিষ্ট এরিয়া সদর দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
এদিকে দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য সেনা গ্যারিসন, নৌ জাহাজ ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী খাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে। ঢাকা, খুলনা, চাঁদপুর, বরিশাল ও চট্টগ্রামে বিশেষভাবে সজ্জিত নৌবাহিনীর জাহাজসমূহ ২১ নভেম্বর দুপুর ২টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের দেখার জন্য নিকটস্থ ঘাটসমূহে অবস্থান/নোঙর করা অবস্থায় রাখা হবে।
২০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সশস্ত্র বাহিনী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর সশস্ত্র বাহিনীর পরিবেশনায় ‘বিশেষ অনির্বাণ’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে।
বাংলাদেশ বেতার ২১ নভেম্বর (শুক্রবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘বিশেষ দুর্বার’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। ‘বিশেষ অনির্বাণ’ অনুষ্ঠানটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলসমূহে পরে পর্যায়ক্রমে সম্প্রচারিত হবে।
দিবসটি উপলক্ষে ২১ নভেম্বর বাংলা ও ইংরেজি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকসমূহে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে। এ ছাড়া সশস্ত্র বাহিনীর পরিচালনাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন