এক্স-রে টেবিল-এনবিএ তারকা-মাফিয়া : হলিউডকে হার মানানো জুয়ার প্রতারণায় গ্রেপ্তার ৩০

gbn

খেলাটা ছিল টেক্সাস হোল্ড’এম পোকার। আলো ঝলমলে টেবিলে সেলিব্রেটি, ক্রীড়াবিদ, ধনী ব্যবসায়ীরা বসেছিলেন জয়ের আশায়। কিন্তু টেবিলের নিচে চলছিল এমন এক খেলা, যা কেউই টের পাননি।

প্রসিকিউটরদের ভাষায়, এটি ছিল ‘হলিউড সিনেমার মতো’ এক প্রতারণা।

গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে চালানো ফেডারেল অভিযানে ভেঙে দেওয়া হয়েছে সেই জুয়ার চক্র। গ্রেপ্তার হয়েছেন ৩০ জনের বেশি।

 

গ্রেপ্তারদের মধ্যে আছেন পোর্টল্যান্ড ট্রেইল ব্লেজার্সের প্রধান কোচ চ্যান্সি বিলাপস, এনবিএর মায়ামি হিটের খেলোয়াড় টেরি রোজিয়ার ও সাবেক খেলোয়াড় ডেমন জোন্স, এমনকি ইতালীয় মাফিয়া পরিবারের সদস্যরাও। 

এই প্রতারণার গল্প যেন সিনেমার কাহিনি।

টেবিলটা ছিল এক্স-রে প্রযুক্তিযুক্ত, যা উল্টে রাখা কার্ডও ‘পড়তে’ পারত।

 

চিপ ট্রের ভেতরে ছিল বিশ্লেষক যন্ত্র, শাফলিং মেশিনও ছিল ফিক্স করা। আর খেলোয়াড়দের চোখে ছিল বিশেষ ধরনের সানগ্লাস ও কনট্যাক্ট লেন্স, যা প্রতিপক্ষের কার্ড দেখতে পারত!

প্রতিটি গেমে ‘টার্গেট’ করা হতো ধনী ও বিখ্যাত খেলোয়াড়দের। আর তাদের বলা হতো ‘ফিশ’।

আর যাদের হাতে এসব প্রযুক্তি, তারা ছিল মাফিয়া পরিবারের নিয়ন্ত্রণে থাকা ‘পেশাদার প্রতারক’।

 

ফেডারেল তদন্ত বলছে, পুরো খেলাটা নিয়ন্ত্রণ করত দুইজন—একজন ‘অপারেটর’, যিনি দূর থেকে তথ্য দিতেন, আরেকজন ‘কোয়ার্টারব্যাক’, যিনি টেবিলে বসে সংকেত পাঠাতেন বাকিদের।

ওয়্যারলেস সিগন্যালের মাধ্যমে মুহূর্তেই জানা যেত কার হাতে কী কার্ড, কাকে হারাতে হবে, কখন ফোল্ড করতে হবে। তাদের লক্ষ্য একটাই, ফিশ খেলোয়াড়ের হার।

প্রসিকিউটরদের হিসাবে, এই স্কিমে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে হাতানো হয়েছে কমপক্ষে ৭ মিলিয়ন ডলার! 

প্রতারণা থেকে পাওয়া অর্থ পরে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে সরানো হতো ক্রিপ্টোকারেন্সি, শেল কোম্পানি আর নগদ লেনদেনের জটিল পথে।

 

এই অর্থের বড় অংশ চলে যেত বনানো, গ্যাম্বিনো, লুচেসে ও জেনোভিজ নামের ইতালীয় মাফিয়া পরিবারগুলোর তহবিলে।

প্রতারণায় ‘ফেস কার্ড’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল সাবেক ও বর্তমান এনবিএ তারকাদের। তাদের উপস্থিতি দিয়েই ধনী খেলোয়াড়দের ফাঁদে ফেলা হতো।

বিলাপসকে গ্রেপ্তারের পর পোর্টল্যান্ড ট্রেইল ব্লেজার্স জানিয়েছে, তারা তারা প্রধান কোচের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে অবগত এবং ‘পূর্ণ সহযোগিতা করছে’। এনবিএ কর্তৃপক্ষ তাকে অস্থায়ী ছুটিতে পাঠিয়েছে।

আরেক প্রান্তে, ডেমন জোন্স ও মায়ামি হিটের টেরি রোজিয়ারের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে ওয়্যার ফ্রড ষড়যন্ত্র ও মানি লন্ডারিং–এর অভিযোগ।

এফবিআইয়ের নিউ ইয়র্ক অফিসের সহকারী পরিচালক ক্রিস্টোফার রায়া বলেন, ‘এই স্কিম যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। কেউ তার খ্যাতি, কেউ তার অর্থ ব্যবহার করে অপরাধ চক্রকে শক্তিশালী করেছে।’

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন