আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর নিশ্চয়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই)।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেছে আইআরআইয়ের একটি প্রতিনিধিদল। এ সময় প্রতিনিধিদলটি নিশ্চিত করেছে, আইআরআই ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের জন্য কমপক্ষে ১০ জন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক পাঠাবে।
আইআরআইয়ের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ক্রিস্টোফার জে ফুসনার বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে আমরা শক্তিশালী নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ করব।
নির্বাচনী পর্যবেক্ষক মোতায়েন ভোটের সময় সহিংসতার সম্ভাবনা হ্রাস করতে সহায়তা করবে।’
সেন্টার ফর এ নিউ আমেরিকান সিকিউরিটির (সিএনএএস) সিনিয়র ফেলো এবং ইন্দো-প্যাসিফিক সিকিউরিটি প্রোগ্রামের পরিচালক লিসা কার্টিস, আইআরআইয়ের গণতান্ত্রিক নির্বাচন এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়া সম্পর্কিত প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞ জেসিকা কিগান, আইআরআইয়ের আবাসিক প্রোগ্রাম ডিরেক্টর স্টিভ সিমা এবং ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) প্রোগ্রাম ডিরেক্টর জেমি স্পাইকারম্যানও উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচনপূর্ব পরিবেশ মূল্যায়নের জন্য দলটি বর্তমানে বাংলাদেশ সফর করছে এবং সব প্রধান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।
বৈঠকে প্রতিনিধিদলটি তাদের পূর্ববর্তী নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে ধারণা ভাগ করে নেয় এবং নির্বাচনী সংস্কার সম্পর্কিত প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মতবিনিময় করে।
তারা বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে।
বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনের পরিবেশের প্রশংসা করেন ফুসনার। তিনি বলেন, ‘সব দলই নির্বাচন চায়। আগের নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা একটি ইতিবাচক পরিবেশ দেখতে পাচ্ছি, যা সত্যিই ভালো লাগছে।
আমরা আগের নির্বাচন এবং এই নির্বাচনের মধ্যে পার্থক্য বলতে পারি।’
প্রতিনিধিদলটি বলেছে, নির্বাচনকে আরো স্বচ্ছ করার জন্য সুশীল সমাজ যেমন ছাত্রসংগঠনের স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনের সময় ভুয়া তথ্যের বিপদ নিয়েও কথা বলেছেন তারা।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘ভুল তথ্য একটি গুরুতর সমস্যা। গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হচ্ছে ভুল তথ্য।
এটি সুপরিকল্পিত, সু-অর্থায়ন এবং তাত্ক্ষণিকভাবে উত্তেজনা তৈরি করে। সত্য বেরিয়ে আসতে আসতে ততক্ষণে মানুষ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।’
ক্রিস্টোফার জে ফুসনার ছবি তৈরি এবং জনমতকে হেরফের করার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার সম্পর্কেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের পথে রয়েছে। এটি অনেক তরুণের জন্য একটি আজীবন অভিজ্ঞতা হতে চলেছে। দেশের অর্ধেক জনসংখ্যা ২৭ বছরের কম। জীবনে প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন তারা। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে তারা সন্তুষ্ট। আমরা শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর ভোট গ্রহণ করব।’
দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রায় জুলাই সনদের একটি অনন্য মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দল সংস্কারের প্রতি তাদের অঙ্গীকার দেখিয়েছে। এটি আমাদের নির্বাচনের আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বেশির ভাগ দল সনদে সই করেছে এবং আশা করছি যে অন্যরা খুব শিগগিরই এটি করবে।’
আইআরআই প্রতিনিধিরা গত ১৫ মাস ধরে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
সভায় এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোর্শেদও উপস্থিত ছিলেন।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন