স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে গুলির ঘটনায় এক কবির ২১ বছর কারাদণ্ড

gbn

গত বছর স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোকে গুলি করা পেনশনভোগীকে ‘সন্ত্রাসী আক্রমণ’-এর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বিশেষায়িত ফৌজদারি আদালত বানস্কা বাইস্ট্রিকার মঙ্গলবার ৭২ বছর বয়সী জুরাই সিনতুলাকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করে। আদালত জানায়, তিনি ‘সরকারের সুষ্ঠু কার্যকারিতা বন্ধ করার উদ্দেশ্য নিয়ে’ এই ‘বিশেষভাবে গুরুতর’ অপরাধ করেছেন।

পশ্চিম স্লোভাকিয়ার লেভিসের বাসিন্দা ও পেশায় কবি সিনতুলা, গত ১৫ মে ২০২৪ তারিখে ফিকো কেন্দ্রীয় স্লোভাকিয়ার একটি সরকারি বৈঠক থেকে বের হওয়ার সময় খুব কাছ থেকে তাকে চারবার গুলি করেন।

 

পরে সিনতুলা দাবি করেন, তিনি ‘নৈতিক হতাশা’ দ্বারা চালিত হয়েছিলেন। গুরুতর আহত হলেও ফিকো দুই মাস পর কাজে ফিরে আসেন।

এই গুলি এবং পরবর্তী বিচার ন্যাটো-সদস্য এই ছোট দেশটিকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী ফিকো, কোনো প্রমাণ ছাড়াই বারবার উদারপন্থী বিরোধী দল এবং গণমাধ্যমকে এই হত্যাচেষ্টার ইন্ধন জোগানোর জন্য অভিযুক্ত করেছেন।

 

প্রসিকিউটররা মূলত সিনতুলের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগ এনেছিলেন, কিন্তু পরে তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বিবেচনা করে এই গুলি চালানোকে ‘সন্ত্রাসী আক্রমণ’ হিসেবে পুনঃশ্রেণিবদ্ধ করেন।

সমালোচকরা বলছেন, গুলি চালানোর পর থেকে জনতুষ্টিবাদী ফিকো আরো বেশি বিভেদ সৃষ্টিকারী হয়ে উঠেছেন। তিনি স্লোভাকিয়ার বৈদেশিক নীতিকে রাশিয়ার সঙ্গে আরো দ্রুত সারিবদ্ধ করছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমালোচনা বাড়িয়েছেন এবং স্বৈরাচারী ও কট্টর রক্ষণশীল নীতি বাস্তবায়ন করছেন।

চলতি মাসের শুরুতে আদালতে তার সমাপনী বক্তব্য দেওয়ার পর সিনতুলা বের হওয়ার সময় স্থানীয় গণমাধ্যম তাকে উদ্ধৃত করে লিখেছে, তিনি চিৎকার করে বলেছিলেন, ‘এটা সার্থক ছিল।

 

ফাঁস হওয়া একটি ভিডিও অনুযায়ী, গুলি চালানোর পর সিনতুলা পুলিশকে বলেছিলেন, ফিকোর সরকার কর্তৃক যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে সামরিক সাহায্য বন্ধ করাসহ গৃহীত পদক্ষেপগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই তিনি এই হামলা চালান।

তিনি দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষতি করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাকে হত্যা করতে চাননি।

তার চূড়ান্ত বিচার বিবৃতিতে, দৃশ্যত আবেগাপ্লুত সিনতুলা আদালতকে বলেন, তিনি ‘নৈতিক হতাশায়’ আচ্ছন্ন ছিলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ‘ক্ষমতার অহংকারে মত্ত’ এবং ‘দেশের ক্ষতি করে এমন অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত’ নেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেন।

তিনি তার আত্মপক্ষ সমর্থনকে ‘একটি ইশতেহার...’ হিসেবে অভিহিত করেন, যা ‘সেই সমস্ত মানুষের জন্য যারা অনুভব করেন যে ক্ষমতার ঔদ্ধত্য, দুর্নীতি এবং মিথ্যা সেই দেশে থাকতে পারে না যেখানে আমাদের শিশুরা বড় হবে।

 

সিনতুলা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বছরের পর বছর ধরে জমা হওয়া হতাশা এবং মরিয়া অবস্থার প্রতীক ছিলেন।’

শুনানি শেষে সিনতুলের আইনজীবী নামির আলিয়াসরি সাংবাদিকদের জানান, তিনি এই রায়ের বিরুদ্ধে ‘সম্ভবত আপিল করবেন’।

প্রধানমন্ত্রী নিজে বিচারে উপস্থিত ছিলেন না এবং রায় নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি।

২০২৩ সালে ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে ফিকোর সরকার গণপ্রতিবাদ সত্ত্বেও অলাভজনক সংস্থা, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান এবং কিছু গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে দমনমূলক ব্যবস্থা শুরু করেছে, যাদেরকে তিনি ‘শত্রুতাপূর্ণ’ বলে মনে করেন।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন