মিসরে শান্তি আলোচনার মাঝে ট্রাম্প জানালেন, গাজা চুক্তির সম্ভাবনা ‘খুবই ভালো’

gbn

ফিলিস্তিন ও মিসরীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমান আলোচনা একটি সম্ভাব্য বন্দি বিনিময়ের জন্য পরিবেশ তৈরির চেষ্টা চলছে। যেখানে ইসরায়েলি সব বন্দি মুক্তি পাবে এবং বিনিময়ে ফিলিস্তিনের একাধিক বন্দি মুক্তি পাবে। গত শনিবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বন্দিদের মুক্তির ঘোষণা আশা করা হচ্ছে।’

এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমাদের চুক্তি করার একটি বড় সুযোগ আছে এবং এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী চুক্তি হবে।

’ হামাস তাদের পক্ষ থেকে শান্তি পরিকল্পনার কিছু অংশে সম্মতি জানিয়েছে। তবে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্তে এখনো তাদের প্রতিক্রিয়া আসেনি। যেমন— হামাসের অস্ত্র সমর্পণ এবং গাজায় ভবিষ্যতে সরকারের কোনো ভূমিকায় তাদের অংশগ্রহণ না করা।

 

এই আলোচনা গতকাল সোমবার শুরু হয়।

এদিকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে দক্ষিণ ইসরায়েলে আক্রমণের দ্বিতীয় বার্ষিকী আজ মঙ্গলবার। ওই আক্রমণে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত এবং ২৫১ জন ইসরায়েলি নাগরিককে বন্দি করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায়, ইসরায়েল গাজায় অভিযান শুরু করে। এখন পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলার ফলে ৬৭ হাজার ১৬০ জন নিহত হয়েছে।

নিহতদের মধ্যে ১৮ হাজার শিশু। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে। 

 

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা একটি সুযোগ সৃষ্টি করেছে, যা এই দুঃখজনক সংঘাতের সমাপ্তি ঘটানোর জন্য কাজে লাগানো উচিত।’ ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমারও এই পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন এবং বলেন, ‘আমরা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির জন্য মার্কিন উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। আমাদের সরকার সব প্রচেষ্টা করবে যেন ইসরায়েলের প্রতিটি শিশু শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ফিলিস্তিন প্রতিবেশীদের সাথে নিরাপদ ও শান্তিতে বসবাস করতে পারে।

 

এই আলোচনা যুদ্ধের শুরু থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে এবং এটি এই সংকটের সমাপ্তির দিকে পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ তৈরি করতে পারে। মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ, ট্রাম্পের জামাই জ্যারেড কুশনা এবং কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি হামাস গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় মেনে নিয়েছে এবং আমি মনে করি আমরা একটি চুক্তি করতে সক্ষম হব।’

এক প্যালেস্টাইনি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, প্রথম সেশন সোমবার রাতে শেষ হয়েছে এবং মঙ্গলবার আরো আলোচনা হবে। ট্রাম্প ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সম্মত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনায় যুদ্ধবিরতি এবং ৪৮ জন বন্দির মুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে মাত্র ২০ জন জীবিত আছেন। বিনিময়ে গাজার শতাধিক বন্দি মুক্তি পাবে। এই পরিকল্পনায় উল্লেখ করা হয়েছে, দুই পক্ষ যদি প্রস্তাবে সম্মত হয়, তবে গাজার দিকে মানবিক সহায়তা পাঠানো হবে।

তবে পরিকল্পনা ঘোষণার পর নেতানিয়াহু ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়নি এবং আমরা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিরোধিতা করব।’ শুক্রবার হামাস তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, তারা ‘ট্রাম্পের প্রস্তাবিত বিনিময় সূত্র অনুযায়ী সব ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে সম্মত’, তবে শর্ত সাপেক্ষে।

হামাসের অন্যতম প্রধান পৃষ্ঠপোষক ইরান এখন ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনাকে সমর্থন জানিয়েছে। এদিকে ইসরায়েলি হামলা এখনো গাজার বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান রয়েছে, যেখানে ইসরায়েল বন্দিদের মুক্তির জন্য অভিযান চালাচ্ছে। গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৯৬ জন আহত হয়েছে। এ ছাড়া, ইসরায়েলি সেনারা গাজায় মানবিক সহায়তার ট্রাক প্রবেশে বাধা দিচ্ছে এবং গাজার বাসিন্দাদের নিরাপদ এলাকায় চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছে।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন