গণবিক্ষোভের মুখে শেষ চার বছরে দক্ষিণ এশিয়ায় তিনটি দেশে সরকারের পতন ঘটেছে। ক্রমবর্ধমান দুর্নীতি ও বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের অভিযোগে ‘জেন-জি’ বিক্ষোভ আর সহিংসতার মধ্য দিয়ে পদত্যাগ করেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের মতো শ্লথ অর্থনীতি আর তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে আসা নিয়ে তীব্র অসন্তোষও নেপালে ছিল। দেশটিতে ২০০৪ সাল থেকেই বেকারত্বের হার ১০ শতাংশের ওপরে।
এই বেকারত্ব নেপালকে অতিমাত্রায় প্রবাস আয় ও বিদেশি সহায়তার ওপর নির্ভরশীল করে তোলে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী দ্য ডিপ্লোম্যাটের এক বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন বলছে, এসব সংকটের পেছনে বাইরের হাওয়ার প্রভাবও রয়েছে।
নেপালের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকট এই অঞ্চলের জটিল সমীকরণের একটা বহিঃপ্রকাশ। পাশের দেশ হিসেবে এই সংকটের প্রভাব ভারতে পড়বেই।
আরেক প্রতিবেশী চীনও প্রভাবের বাইরে থাকতে পারবে না।
গত দশকে উন্নয়ন আর অর্থায়নের নামে দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের সম্পৃক্ততা বাড়লেও এসব দেশের সংকট মোকাবেলায় বেইজিংয়ের কৌশলগত পদক্ষেপ খুব বেশি দৃশ্যমান হয়নি।
তবে নেপালের রাজনৈতিক সংকটে এবার চীনের প্রতিক্রিয়া বেশ নীরব ছিল। অতীতের মতো এবার তারা দেশটির রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ কিংবা মধ্যস্থতার চেষ্টা চালায়নি।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান নেপালের সর্বশেষ সরকারবিরোধী আন্দোলনকে মূল্যায়ন করেন ‘বিক্ষোভ’ হিসেবে। দেশটিতে শিগগিরিই ‘সামাজিক শৃঙ্খলা ও জাতীয় স্থিতিশীলতা’ ফিরে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এরপর অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুশীলা কার্কির নিয়োগের প্রতিক্রিয়ায় বেইজিং বলে, ‘চীন বরাবরই নেপালের জনগণের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানায়।’
এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার ভূ-রাজনীতি নিয়ে কাজ করা দ্য ডিপ্লোম্যাট বলছে, চীনের এই কূটনৈতিক অবস্থানকে দুইভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। চীন সরকারের বক্তব্যের জায়গা থেকে দেখলে প্রথম ব্যাখ্যাটা এমন হতে পারে যে, অন্য দেশের রাজনীতিতে বেইজিং হস্তক্ষেপ করে না।
কিন্তু গত কয়েক বছরে চীনের দূতাবাসগুলো এসব দেশের লক্ষ্য অর্জনে সিসিপির অভিজ্ঞতা ও চীনের আধুনিকায়ন পদ্ধতি প্রয়োগের চেষ্টা চালিয়েছে। কোনো কোনো দেশের ক্ষেত্রে চীন মধ্যস্থতাকারী হিসেবেও থাকার চেষ্টা করেছে।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন