হাকিকুল ইসলাম খোকন,
কোরআন পুড়িয়ে জাতীয়ভাবে আলোচনায় আসা রিপাবলিকান দলীয় কংগ্রেস প্রার্থী ভ্যালেন্টিনা গোমেজ এবার নিজেকে হুমকির মুখে মনে করছেন। চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ডের পর টেক্সাসের ৩১তম ডিস্ট্রিক্ট থেকে কংগ্রেসে লড়তে যাওয়া এই প্রার্থী এফবিআই ও শীর্ষ ট্রাম্প কর্মকর্তাদের ট্যাগ করে প্রকাশ্যে ফেডারেল সুরক্ষার আবেদন জানিয়েছেন।
২৬ বছর বয়সী গোমেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, ‘আমি আনুষ্ঠানিকভাবে ও প্রকাশ্যে সুরক্ষার আবেদন করছি।’ তিনি দাবি করেন, কার্ক হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তিনি একাধিক মৃত্যুর হুমকি পাচ্ছেন এবং আশঙ্কা করছেন, ‘পরবর্তী লক্ষ্য আমি হতে পারি।’ টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ-এর প্রতিষ্ঠাতা চার্লি কার্ক (৩১) গত বুধবার উটাহ ভ্যালি ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রদের উদ্দেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। ঘটনাস্থলের কাছ থেকে একটি বোল্ট-অ্যাকশন রাইফেল উদ্ধার করেছে ফেডারেল এজেন্টরা এবং সন্দেহভাজনের ছবি প্রকাশ করেছে। তবে হত্যাকারী এখনো ধরা পড়েনি।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে গোমেজ দাবি করছেন, তাঁর বিতর্কিত অবস্থান ও সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি মৃত্যুর হুমকি পাচ্ছেন।
ভ্যালেন্টিনা গোমেজ নিজেকে ‘আমেরিকা-ফার্স্ট গঅএঅ’ প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দেন। সম্প্রতি প্রচার অভিযানের অংশ হিসেবে তিনি একটি বিজ্ঞাপনে ফ্লেমথ্রোয়ার দিয়ে কোরআন পুড়িয়ে ‘ইসলামাইজেশনের বিরোধিতা’ করার বার্তা দেন। বিজ্ঞাপনটি একাধিক প্ল্যাটফর্ম থেকে নিষিদ্ধ হয় এবং নাগরিক অধিকার ও ধর্মীয় সংগঠনগুলো ব্যাপক নিন্দা জানায়।
এর আগেও তিনি আলোচনায় আসেন একটি গ্রাফিক ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে একটি ‘অভিবাসী ডামি’-র প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ডের ভিজ্যুয়াল দেখানো হয়। তিনি দাবি করেছিলেন, নির্বাসনের চেয়ে এটি সস্তা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। লাতিনো ও অভিবাসী সংগঠনগুলো এই ভিডিওকে উসকানিমূঔশ বলে নিন্দা জানিয়েছিল।
গোমেজ এর আগেও মিসৌরির সেক্রেটারি অব স্টেট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তবে তেমন কোনো সাফল্য পাননি। সমালোচকরা বলছেন, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে উসকানিমূলক বক্তব্য ও ভিডিওর মাধ্যমে প্রচারণা চালান, যা তাঁকে জাতীয় শিরোনামে নিয়ে আসে।
এফবিআই এখনো কার্ক হত্যার মূল আসামিকে খুঁজছে। কর্মকর্তারা ফরেনসিক প্রমাণ, জুতার ছাপ এবং একটি হাতের তালুর ছাপ বিশ্লেষণ করছেন। তারা জনসাধারণকে গুজব না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
এরই মধ্যে গোমেজের হুমকি প্রাপ্তির অভিযোগ নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেছে। একদিকে কোরআন পুড়িয়ে তিনি মুসলিম ও অভিবাসী সম্প্রদায়ের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন, অন্যদিকে কার্ক হত্যাকাণ্ডের পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সহিংসতার আশঙ্কা আরও বেড়ে গেছে।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন