দোহায় হামাস নেতৃত্বের ওপর ইসরায়েলের হামলা

gbn

কাতারের রাজধানী দোহায় মঙ্গলবার বিস্ফোরণ দেখা ও শোনা গেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এগুলো ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের নেতা ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের হত্যাচেষ্টার ফল।

ইসরায়েল প্রথমবার কাতারে এ ধরনের হামলা চালাল। দেশটি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন যুদ্ধবিরতির আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা রাখে।

পাশাপাশি এই অঞ্চলের বৃহত্তম মার্কিন সামরিক ঘাঁটি আল উদেইদ বিমান ঘাঁটির অবস্থানও কাতারে। অন্যদিকে গাজা, লেবানন, ইয়েমেন ও সিরিয়ায় বোমাবর্ষণ চালাচ্ছে ইসরায়েল। পাশাপাশি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড পশ্চিম তীরে প্রতিদিন হামলা চালাচ্ছে।

 

হামাসের একটি সূত্র আলজাজিরাকে বলেছে, এ হামলা হামাসের আলোচনাকারী দলকে লক্ষ্য করে করা হয়েছে।

হামাসের আলোচনাকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত সর্বশেষ শান্তি চুক্তি বিবেচনা করতে বৈঠক করার সময় এ হামলা হয়।

 

এ ছাড়া ইসরায়েলি সেনাবাহিনী মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) ও শিন বেট সম্প্রতি বিমানবাহিনীকে ব্যবহার করে সন্ত্রাসী সংস্থা হামাসের শীর্ষ নেতৃত্বের ওপর লক্ষ্যভিত্তিক হামলা পরিচালনা করেছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, যেসব নেতার ওপর হামলা চালানো হয়েছে, তারা বছরের পর বছর সন্ত্রাসী সংগঠনের কার্যক্রমের নেতৃত্ব দিয়েছে এবং ৭ অক্টোবরের হত্যাযজ্ঞ চালানোর ও ইসরায়েল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর জন্য সরাসরি দায়ী।

সেনাবাহিনী বলেছে, হামলার আগে ‘অপ্রাসঙ্গিক ব্যক্তিদের ক্ষতি কমাতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে সুনির্দিষ্ট অস্ত্র ব্যবহার ও অতিরিক্ত গোয়েন্দা তথ্য অন্তর্ভুক্ত’।

 

অন্যদিকে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারি এক বিবৃতিতে বলেছেন, দেশটি এই হামলাকে ‘সবচেয়ে কঠোর ভাষায় নিন্দা জানাচ্ছে’, যা হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর কয়েকজন সদস্যের আবাসিক ভবনে চালানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই অপরাধমূলক হামলা সব আন্তর্জাতিক আইন ও নীতিমালার স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং কাতারিদের ও কাতারে বসবাসকারী লোকদের নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি।

মাজেদ আল আনসারি আরো জানিয়েছেন, এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে কাতার রাষ্ট্র জোর দিয়ে বলছে, এটি কোনোভাবেই ইসরায়েলের এই বেপরোয়া আচরণ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার সঙ্গে এর অব্যাহত হস্তক্ষেপ সহ্য করবে না, পাশাপাশি এর কোনো কার্যক্রম, যা কাতারের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বকে লক্ষ্য করবে, তাও মেনে নেবে না। সর্বোচ্চ স্তরে তদন্ত চলছে এবং আরো তথ্য পাওয়া গেলে তা সঙ্গে সঙ্গে জানানো হবে।

আবাসিক এলাকায় হামলা
এদিকে আলজাজিরা আরবি প্রতিবেদক সুহাইব আল-আসা জানিয়েছেন, দোহায় হামলার স্থান একটি আবাসিক এলাকার কাছে, কোনো পৃথক এলাকা নয়।

নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের প্রাথমিক অগ্রাধিকার হামলাস্থল নিরাপদ করা এবং ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের তথ্য সংগ্রহ করা।

 

তিনি আরো বলেন, ‘নিরাপত্তা প্রক্রিয়াগুলো খুবই জটিল। কারণ আমরা একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল স্থানের কথা বলছি, যা আবাসিক ভবনের ও মানুষের ঘরের খুব কাছে।’

গাজার গণহত্যায় ‘প্ররোচিত’
দোহায় এই হামলার দুই সপ্তাহের কম সময়ের আগে ইসরায়েলের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির তার শীর্ষ কমান্ডারদের সঙ্গে পরিস্থিতি মূল্যায়ন বৈঠকের পর ঘোষণা করেছিলেন, তারা হামাসের নেতাদের ওপর যেকোনো আন্তর্জাতিক স্থানে হামলা করবে।

জামির ৩১ আগস্ট বলেছিলেন, ‘হামাসের অধিকাংশ নেতৃত্ব বিদেশে আছে এবং আমরা তাদের কাছেও পৌঁছব।’

আলজাজিরা প্রতিবেদক নিদা ইব্রাহিম বলেন, দোহায় এই অভূতপূর্ব হামলা, যেখানে গাজার সম্ভাব্য শান্তি চুক্তি আলোচনা হচ্ছে, প্রমাণ করে যে ইসরায়েল ‘গণহত্যা চালিয়ে ও দণ্ডমুক্ত থেকে’ কতটা প্ররোচিত হয়েছে।

জর্দানের আম্মান থেকে আলজাজিরার হামদাহ সালহুত বলেন, তৃতীয় দেশে এই হামলা হামাসের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়ার তেহরানে হত্যার সঙ্গে তুলনীয়।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন