যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় পরিবহন ইউনিয়নের সদস্যরা লন্ডনে ধর্মঘটে নেমেছেন। টিউব পরিষেবা স্থগিত থাকায় শহরের পাতাল ট্রেন ব্যবস্থা কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।
ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব রেল, মেরিটাইম অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স (আরএমটি) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রবিবার রাতে প্রায় ১০ হাজার সদস্য কর্মবিরতিতে গেছেন। পাঁচ দিনের এই ধর্মঘটের মূল দাবি কাজের সময় কমানো ও মজুরি বৃদ্ধি।
দৈনিক আনুমানিক ৫০ লাখ যাত্রী বহন করা লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ড তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, শহরের সব টিউব লাইন স্থগিত বা আংশিক স্থগিত হয়েছে। একমাত্র নতুন নির্মিত এলিজাবেথ লাইন চালু রয়েছে, যেখানে বিকল্প পথ খোঁজা যাত্রীরা ভিড় জমায়। এ কারণে প্ল্যাটফরমে ভিড় বেড়ে যায় এবং ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডনের (টিএফএল) ওয়েবসাইট চাপ সামলাতে গিয়ে অচল হয়ে পড়ে।
এলিজাবেথ লাইন স্টেশনের বাইরে লম্বা লাইন তৈরি হয়, আর শহরের প্ল্যাটফরমগুলোতে প্রচুর ভিড় ছিল।
তবে লন্ডনের বাকি পরিবহনব্যবস্থা ও জাতীয় রেলসেবা ধর্মঘটের প্রভাব থেকে মুক্ত।
বিবিসি একটি ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে লন্ডনের উত্তর-পশ্চিমে নিসডেন ট্রেন ডিপোতে ডজনখানেক টিউব বগি স্থির অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
স্থানীয় সময় রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। ইউনিয়ন জানিয়েছে, টিএফএলের প্রস্তাবিত বার্ষিক ৩.৪ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি তারা প্রত্যাখ্যান করেছে।
আরএমটি কাজের সময় সপ্তাহে ৩৫ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৩২ ঘণ্টা করারও দাবি জানাচ্ছে।
আরএমটির এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমাদের ধর্মঘট ছোট ব্যবসা বা জনসাধারণকে ভোগান্তিতে ফেলার জন্য নয়। টিএফএল ব্যবস্থাপনা অনমনীয় অবস্থান নিয়েছে এবং শিফটের কারণে দীর্ঘ মেয়াদে ক্লান্তি ও স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানোর জন্য সামান্য সময় কমানো নিয়েও আলোচনা করতে রাজি নয় তারা।’
এক্সে দেওয়া এক পোস্টে আরএমটি জানিয়েছে, মহামারির আগে যে সংখ্যক কর্মী ছিল এখন তার তুলনায় দুই হাজার কম কর্মী দিয়ে টিউব চালাতে হচ্ছে। ফলে ‘ক্লান্তিকর শিফটে (ভোর ৪টায় শুরু, রাত ১টায় শেষ) লন্ডন সচল রাখতে হচ্ছে’, যা ক্লান্তি ও জনবল সংকটের মারাত্মক সমন্বয় সৃষ্টি করছে।
এদিকে লিভারপুলের বামপন্থী সংসদ সদস্য কিম জনসন আরএমটির প্রতি সংহতি প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘কোনো শ্রমিককে ক্লান্তি ও ক্লান্তিকর শিফট রোটেশনের কারণে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা উচিত নয়।’
অন্যদিকে টিএফএল জানিয়েছে, কাজের সময় কমানো ‘অসাধ্য ও অবাস্তব’। তবে লন্ডনের মেয়র সাদিক খান এক্সে এক পোস্টে টিএফএল ও আরএমটিকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘কেউ ধর্মঘট চায় না—এটি লন্ডনের নাগরিক, ব্যবসা ও দর্শনার্থীদের জন্য মারাত্মক ভোগান্তি তৈরি করে।’
বর্তমানে আরএমটি ও টিএফএলের মধ্যে কোনো আলোচনার সময়সূচি নির্ধারিত নেই। গত বুধবার তাদের সর্বশেষ বৈঠকও ভেস্তে যায়।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন