জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-জয়ী গায়িকা নাজমুন মুনিরা ন্যান্সির জন্মদিন রোববার (১৩ ডিসেম্বর)। তার বয়স ২৩ বছর পূর্ণ হলো! না, সরাসরি ২৩ নয়, উল্টো করে পড়তে হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পোস্টে বিশেষ এই দিনের প্রথম প্রহরে কেক কাটার ছবি শেয়ার করেন ন্যান্সি। সঙ্গে আছে তার দুই মেয়ে। সেখানেই খোলাসা করলেন বয়স উল্টো করে বলার বিষয়টি।
ন্যান্সি লিখেন, চলতি বছরের মার্চ মাসের শুরুতে কিছ পুরোনো জনপ্রিয় গান পুনরায় রেকর্ড করার বিষয়ে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান অনুপম মিউজিকের কর্ণধার আনোয়ার ভাইয়ের সাথে আমার প্রথম পরিচয়। ভদ্রলোক সদা হাস্যোজ্জ্বল এবং ভীষণ রকমের প্রাণখোলা মানুষ। উনার মিশুক স্বভাব, সেইসাথে কাজের সূত্রে আমার সাথে উনার একটা সখ্যতা তৈরি হয়। একদিন আলাপ করতে করতে উনি বলে বসলেন, ‘আপনার মেয়ে রোদেলা তো মাশাআল্লাহ বেশ বড় হয়ে গেছে। আপনার হাতে সময় আছে মাত্র দুই বছর, এর মধ্যে যা ভালো ভালো কাজ করার করে নিন’।
আমি বললাম, ‘দু বছর সময় আছে মানে?’ আনোয়ার ভাই বললেন, ‘দুই বছর পরে আপনার গানের চাইতে রোদেলার গানই মানুষ বেশি শুনতে চাইবে’। আমি কিন্তু মনে মনে বেশ খুশিই হলাম। সন্তানের উত্থান কোনো বাবা-মায়ের ভালো না লাগে!
এরপর থেকে আনোয়ার ভাইয়ের সাথে কথা হলেই উনি কথা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আপা আপনার হাতে সময় কিন্তু মাত্র দুই বছর’। বরাবরের মতো আমি শুনে হাসি। বয়স বাড়ছে তা নিয়ে আমি কখনই চিন্তিত ছিলাম না। সময়ের সাথে বয়স বাড়বে সেটাই তো প্রকৃতির নিয়ম। কাকতালীয় ব্যাপার হচ্ছে, হঠাৎ করে আমি খেয়াল করলাম রোদেলার জন্য বেশিরভাগ মানুষ আমায় আন্টি ডাকে। আমি কৌতূহলবশত আনোয়ার ভাইয়ের কাছে জানতে চাইলাম, ‘আপনি কি দুই বছর সময়ের কথা বললেন, আমার বয়স বেড়ে যাচ্ছে বলে?’ উনি বললেন, ‘সেটাও একটা কারণ!’ এই প্রথম আমি বয়স বেড়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত হলাম।
আনোয়ার ভাইয়ের ব্যাপারে আরেকটি কথা বলা হয়নি। সেটা হলো পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষটি এখনো নিজেকে মানসিক ও শারীরিকভাবে চল্লিশের ঘরে আটকে রেখেছেন! আমি নিজেই নিজেকে বোঝালাম, আনোয়ার ভাইয়ের মতো শারীরিকভাবে না হলেও মানসিক দিক দিয়ে আমি এখনো নিজেকে তরুণীই মনে করি। তাই ভাবলাম এ বছর বয়সের সংখ্যাটাকে ওলোটপালোট করে দেই। তাতে করে আমার বয়স বত্রিশের বদলে দাঁড়ালো তেইশের ঘরে।
এদিকে আমার প্ল্যান অগ্রিম জানতে পেরে আমার বন্ধু আমাকে সতর্ক করে দিয়ে বললো, ‘এ বছর সংখ্যা আগ-পিছ করেছো কিন্ত সামনের বছর থেকে আর এমনটা করতে যেও না’। আমি না বুঝেই খানিকটা মন খারাপ করলাম। বেচারা বুঝতে পেরে আমায় কাগজে কলমে সরল অংকটা করে দেখিয়ে দিলো। ৩৩-৩৩ সামনের বছর সংখ্যা উল্টে দিলেও ফলাফল একই থাকছে অর্থাৎ বয়স না কমলেও অন্তত বাড়ছে না। বিপত্তি ঘটছে পরের বছর থেকে। ৩৪-৪৩, ৩৫-৫৩, ৩৬-৬৩, ৩৭-৭৩, ৩৮-৮৩, ৩৯-৯৩... মানে হলো সংখ্যা উল্টালে প্রতি বছর আমার ১০ বছর করে বয়স বাড়বে! কি ভয়ংকর! আবার বয়স চল্লিশ হলে সেটা উল্টে দিলে বয়স হবে চার..! বিষয়টা বাড়াবাড়ি হয়ে যায়।
তাই ঠিক করলাম, যদি আগামী আট বছর বেঁচে থাকি তাহলে আমার বয়স ২৩’র ঘরে ফিক্সড করলাম, বাড়াবোও না কমাবোও না। এক দেশ, এক জবান।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন