সুনামগঞ্জে একদিনে ৪ জনসহ ৬ জনের মৃত্যু

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জে একদিনে ৪ জনসহ ৩দিনে ৬জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ পৃথক স্থান থেকে মৃতদের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানোসহ ২জনের লাশ পরিবারের নিকট হস্থান্তর করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে- আজ বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় জেলার তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত নদী যাদুকাটার বালুর ভিতর থেকে শাকিবুল ইসলাম (৮) নামের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের মোদেরগাঁও গ্রামের হারুন মিয়ার ছেলে। গতকাল বুধবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় লাউড়গড় সীমান্তে যাদুকাটা নদী ও বারেকটিলা এলাকা দিয়ে চিনি, পেয়াজ, মদ, গাঁজা, ইয়াবা, গরুসহ কয়লা ও পাথর পাচাঁর করতে গিয়ে শিশু শাকিবুল ইসলাম নিখোঁজ হয়ে যায়। অন্যদিকে গতকাল বুধবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাক ইউনিয়নের তেরহাল গ্রামের হাঁসের ধান খাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এঘটনায় প্রতিপক্ষের কিলঘুষিতে নোয়াব আলী (৫৮) নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে গত মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাতে তাহিরপুর উপজেলার টেকেরঘাট সীমান্তের বুরুঙ্গাছড়া এলাকা থেকে চোরাকারবারী রমিজ মিয়া (৫২) এর রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে ওইদিন রাতে মর্গে পাঠায় পুলিশ। সোর্স পরিচয়ধারী আক্কল আলী ও তার ছেলে রুবেল তাদের লোক দিয়ে প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চুনাপাথর ভাংগে। তাদের সাথে রমিজের ছেলে সাইদুল ও জড়িত। ভারত থেকে অবৈধ ভাবে পাচাঁরকৃত সেই চুনাপাথর বড়ছড়া শুল্কস্টেশনের কাঠের ব্রিজের পাশে নিয়ে মজুত করে। এছাড়া চাঁনপুর ও টেকেরঘাট সীমান্ত দিয়ে অবাধে কয়লা পাচাঁর করে বিভিন্ন ডিপুতে নিয়ে তারা মজুত করে। এরপর পুলিশ ও সাংবাদিকদের নামে ১টন চোরাই কয়লা থেকে ১হাজার টাকা, বিজিবির নামে ৭টাকাসহ ১ ঠেলাগাড়ি (৫ ফুট) চুনাপাথর থেকে ৩টাকা চাঁদা তুলে সোর্স আক্কল আলী। তার কথা মতো চাঁদা না দিলে ঘটে নানান বিপত্তি, চোরাকারবীদেরকে করা হয় হয়রানী। এব্যাপারে মৃত রমিজের স্ত্রী জোসনা বেগম বলেন-সোর্স আক্কল আলীর কথা মতো চাঁদা না দেওয়ার কারণে সে সন্ধ্যা ৭টায় টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ এএসআই জিয়াউর রহমানকে দিয়ে আমার স্বামীকে আটক করে। আমার স্বামী তাদের প্রতিবাদ করার করণে আক্কল আলী ও এএসআই জিয়া লাটি পেটা করাসহ কিলঘুষি মারে। এঘটনায় রমিজ মিয়ার নাক মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সোর্স আক্কল আলী পুলিশ নিয়ে মোটর সাইকেল যোগে পুলিশ ফাঁড়িতে চলে যায়। পরে রক্তাক্ত রমিজকে গুরুতর অবস্থায় স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষনা করে। এব্যাপারে টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই জিয়াউর রহমান সাংবাদিকদের জানান- রমিজ মিয়া একটি মামলার ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামী। সে আমাদের আসার খবর পেয়ে পালিয়ে যায়। সে পালানোর পর আমরা তাকে আর ধরতে পারিনি। কিছু সময় খোঁজাখুজি করে আমরা চলে আসি। তাকে মারধর করার প্রশ্নই উঠে না। অন্যদিকে এদিন রাত ১০টায় জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালি ইউনিয়নের কলকতখাঁ গ্রামে মায়ের নামের জমির দখল নিয়ে ছোট ভাইয়ের ঘুষিতে আপন বড় ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। মৃত ভাইয়ের নাম- হাফিজ উল্লাহ (৩০)। অপর দিকে সন্ধ্যায় পাশের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া ইউনিয়নের মধুরাপুর গ্রামের মালেক নূর (৪৫) ও আব্দুন নূর (৪০) বজ্রপাতের শিকার হয়ে মৃত্যু বরন করেন। তারা হাওরে ধান মাড়াই করার সময় বজ্রপাতের শিকার হয়ে আহত হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষনা করেন। জামালগঞ্জ থানার ওসি দিলীপ কুমার, দিরাই থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী, তাহিরপুর থানার ওসি নাজিম উদ্দিন ও শান্তিগঞ্জ থানার ওসি কাজী মোক্তাদির হোসেন পৃথক ঘটনায় ৬জনের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন