অবশেষে মুক্তি, পুরনো ক্ষত নিয়ে ‘ওপেনহাইমার’ দেখল জাপানিরা

gbn

দীর্ঘ চড়াই-উতরাইয়ের পর অবশেষে জাপানে মুক্তি পেল গত বছরের সবচেয়ে আলোচিত ও অস্কাজয়ী চলচ্চিত্র ‘ওপেনহাইমার’। শুক্রবার (২৯ মার্চ) সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে জাপানে। বিশ্বব্যাপী মুক্তির ৮ মাসের বেশি সময় পর এটি দেখেছেন জাপানের নাগরিকরা। ওপেনহাইমার দেখে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে জাপানিদের মাঝে।

 

 

৭৯ বছর আগে আমেরিকান বিজ্ঞানী ওপেনহাইমারের পারমাণবিক অস্ত্র দিয়েই জাপানের দুটি শহর ধ্বংস করা হয়েছিল। হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে ফেলা পারমাণবিক বোমার সেই ক্ষত আজও বয়ে বেড়াচ্ছে জাপান। যার ফলে সিনেমাটি গত বছর বিশ্বব্যাপী মুক্তি পেলেও জাপানে এর মুক্তি আটকে যায়।

‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, তোশিউকি মিমাকি নামক ব্যক্তি যিনি মাত্র তিন বছর বয়সে হিরোশিমায় বোমা হামলা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন, তিনি এখন জাপান কনফেডারেশন অব এ-বোম্ব সারভাইভাল গ্রুপ নামক সংস্থার (বোমা আক্রান্তদের জন্য) চেয়ারপারসন।

তিনি একটি প্রিভিউ ইভেন্টে ‘ওপেনহেইমার’ দেখেন। সিনেমাটি দেখে তিনি জানান যে তিনি জে. রবার্ট ওপেনহাইমারের গল্প শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন। ওপেনহাইমার দেখেও তিনি সন্তুষ্ট। তোশিউকি বলেন, ‘জাপানিরা পার্ল হারবারে আক্রমণ চালিয়ে এমন একটি যুদ্ধ শুরু করেছিল, যা তারা কখনোই জয়ের আশা করতে পারে না।

 পুরো সিনেমা চলাকালীন, আমি হিরোশিমা বোমা হামলার দৃশ্যটি আসার জন্য অপেক্ষা করছিলাম, কিন্তু সেটি আসেনি। এটি অবশ্যই দেখার মতো চলচ্চিত্র।’

 

1

হিরোশিমায় পারমাণবিক আক্রমণে বেঁচে যাওয়া তোশিউকি মিমাকি

চলচ্চিত্রটি ব্যক্তি হিসেবে ওপেনহাইমার এবং তাঁর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে নির্মিত হয়েছে। সিনেমায় হিরোশিমা ও নাগাসাকির ওপর আক্রমণের দৃশ্য দেখানো হয়নি। বরং ওপেনহাইমারের বোমা আবিষ্কার ও পরবর্তী সময়ে পারমাণবিক বোমা ব্যবহারের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান ও জাতীয় ষড়যন্ত্রের বেড়াজালে পড়ে যাওয়ার ঘটনায় তৈরি হয়েছে।

 

জাপানে সিনেমাটির প্রদর্শনীর পর এর ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন অনেক দর্শক। শুক্রবার টোকিওর একটি থিয়েটার থেকে বের হওয়া একজন ব্যক্তি বলেন যে সিনেমাটি দুর্দান্ত ছিল। অপর এক দর্শক বলেন, ওপেনহাইমারের অভ্যন্তরীণ অশান্তিকে চিত্রিত করা দৃশ্যে তিনি হতবাক হয়েছেন। সোফিয়া ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক কাজুহিরো মায়েশিমা, যিনি মার্কিন রাজনীতির একজন বিশেষজ্ঞ, তিনিও সিনেমাটিকে ‘আমেরিকান বিবেকের অভিব্যক্তি’ বলে অভিহিত করেছেন। 

হিরোশিমার আরেক বাসিন্দা এগেমি কানেগা সিনেমাটি দেখে মিশ্র অনুভূতি জানিয়েছেন। তাঁর মতে, সিনেমাটি দেখার মতো ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ওপেনহাইমারের বিচার দেখে অস্বস্তিবোধ করেছেন তিনি।

এ বছর অস্কারজয়ী জাপানি চলচ্চিত্র ‘গডজিলা মাইনাস ওয়ান’-এর পরিচালক তাকাশি ইয়ামাজাকি এর আগে নোলানকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি জাপান থেকে ওপেনহাইমারের কাছে একটি উত্তর থাকা দরকার। এক দিন আমি সেই সিনেমাটি বানাতে চাই।’

ক্রিস্টোফার নোলান পরিচালিত ও সিলিয়ান মারফি অভিনীত ওপেনহাইমার গত বছর ছিল সবচেয়ে বড় হিট। সিনেমাটি অস্কারেও আধিপত্য দেখিয়েছে। জিতে নিয়েছে ৭টি অস্কার। বিশ্বব্যাপীও দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে ওপেনহাইমার। গত বছর ২১ জুলাই বিশ্বব্যাপী মুক্তির পর আগস্টে দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীনসহ অন্যান্য এশিয়ান বাজারেও মুক্তি পায় এটি। বক্স অফিসেও হিট হয়। কিন্তু এত দিন জাপানে মুক্তির জন্য কোনো তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি সিনেমাটির। দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে জাপানিরা দেখতে যাচ্ছে বছরের অন্যতম হিট চলচ্চিত্রটি।

জিবিডেস্ক //

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন