মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুক, শিক্ষার্থীসহ অসহায় মানুষের বিপদের বন্ধু ছিলেন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লীরা তরফদার

বিশেষ প্রতিনিধি জিবি নিউজ ২৪ ||
মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুক, শিক্ষার্থীসহ অসহায় মানুষের বিপদের বন্ধু ছিলেন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লীরা তরফদার। কর্মস্থলে অসংখ্য গরিব দুঃখী ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
দক্ষতা ও সুনামের সাথে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সুযোগ পেলেই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। খবরের কাগজ বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো অসহায় মানুষের খবর আসলে ছুটে গিয়েছেন তাদের বাড়ি বা ডেকে এনেছেন তার কার্যালয়ে।
প্রশাসনিক উদ্যোগের পাশাপাশি অনেক সময় ব্যক্তিগত উদ্যোগ এবং নিজের অর্থে অনেকের পাশে থেকেছেন। অনেকে শিক্ষার্থীকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা করে লেখাপড়া করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন তিনি।
আবুল হাশেমের ভিক্ষুক পিতা আকতর আলী বলেন, টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারিনি, কখনো ভাবিনি সন্তান ভালো হবে। কালের কণ্ঠ পত্রিকার খবর আর স্যারের (ইউএনও) উসিলায় আমার একমাত্র ছেলে আজ ভালো হয়েছে।
কালাদহ ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম মাস্টার বলেন, ইউএনও স্যারের সরাসরি হস্তক্ষেপের কারণে দুঃখী মা-মেয়ে তাদের জমিজমাসহ সবকিছু ফিরে পেয়েছে। এখন তারা সুখে আছে। পৌর সদরের কাঁচা বাজারে এক বুদ্ধি ও বাক-প্রতিবন্ধী ঘুরে বেড়াত। রাতেও পড়ে থাকাতো এখানে-ওখানে। এই সুযোগ নেয় কোনো এক নরপশু। লালসার শিকার হয়ে সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়ে মেয়েটি। আবু বক্কর সিদ্দিক নামে এক চায়ের দোকানদার মেয়েটিকে চান্দের বাজারে তার বাড়ি নিয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবরটি জানতে পেরে লীরা তরফদার ছুটে যান আবু বক্কর সিদ্দিকের বাড়ি। বুদ্ধি ও বাক-প্রতিবন্ধীসহ তার নবজাতকের চিকিৎসাসহ সব দায়িত্ব নেন। মা-মেয়েকে চিকিৎসাসহ সুস্থ করে তোলেন। এর মধ্যে একাধিকবার নিজে গিয়ে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মা-নবজাতককে শিশু খাদ্য নিয়ে দেখে এসেছেন। সুস্থ হলে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মেয়েটি গাজীপুরে একটি আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠান আর কন্যা শিশুটিকে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে দত্তক দিয়ে দেন একজন সরকারি কর্মজীবীর কাছে।
আবু সিদ্দিক বলেন, ফুটপাতে চা বিক্রি করে নিজের সংসার চালাতে হিমশিম ক্ষেতে হয়েছে। তারমধ্যে শিশু সন্তানসহ এক মানসিক প্রতিবন্ধী লালন-পালন আমার পক্ষে সম্ভ হয়ে উঠতো না, যদি ইউএনও স্যার সবকিছু দিয়ে সহযোগিতা না করতেন।