ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে সম্ভাব্য শান্তি চুক্তি নিয়ে যুদ্ধবিরতি আলোচনা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেইসঙ্গে বিতর্কিত দনবাস অঞ্চল এখনো সবচেয়ে বড় অমীমাংসিত ইস্যু বলে স্বীকার করেছেন তিনি। খবর আল জাজিরার।
স্থানীয় সময় রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো রিসোর্টে বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বক্তব্য দেন। দুই নেতা শান্তি আলোচনার সবচেয়ে বিতর্কিত দুটি বিষয়ে অগ্রগতির কথা জানিয়েছেন।
তারা জানান, শান্তি আলোচনার দুটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা এবং পূর্ব ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চল নিয়ে অগ্রগতি হয়েছে।
তবে উভয় নেতা চুক্তি চূড়ান্তের কোনো সময়সীমা জানাননি। ট্রাম্প বলেন, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বোঝা যাবে ইউক্রেন যুদ্ধ থামবে কিনা। তিনি উল্লেখ করেন, ভূখণ্ডসংক্রান্ত কিছু ইস্যু এখনো নিষ্পত্তির বাকি রয়েছে।
জেলেনস্কি দাবি করেছেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো গেছে। তবে ট্রাম্প কিছুটা সতর্ক অবস্থানে ছিলেন। তিনি বলেন, তারা এ বিষয়ে প্রায় ৯৫ শতাংশ অগ্রগতি অর্জন করেছেন এবং ইউরোপীয় দেশগুলো এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেবে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের সমর্থন দেবে।
ট্রাম্প ও জেলেনস্কির বৈঠকের পর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া এক পোস্টে জানান, নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে অগ্রগতি হয়েছে। তিনি বলেন, তথাকথিত ‘কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং’-এর দেশগুলো জানুয়ারির শুরুতে প্যারিসে বৈঠক করে তাদের ‘সুনির্দিষ্ট অবদান’ চূড়ান্ত করবে।
এদিকে রোববার জেলেনস্কির সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ফোনালাপের বিষয়ে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প বলেন, পুতিনের সঙ্গে তার আলোচনা ফলপ্রসূ ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রাশিয়ার সাবেক রাষ্ট্রদূত ইউরি উশাকভ জানান, রোববার ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে এক ঘণ্টা ১৫ মিনিটের ফোনালাপ হয়। আলোচনাকে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ, সৌহার্দ্যপূর্ণ এবং কার্যকর’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে দুই নেতা স্থায়ী শান্তিপূর্ণ সমাধানে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলেও জানান।
ইউক্রেন ও ইউরোপীয় মিত্রদের প্রস্তাবিত অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিরোধিতা করেন দুই নেতা। পুতিন ও ট্রাম্পের মতে, সাময়িক যুদ্ধবিরতি সংঘাত দীর্ঘায়িত করতে পারে এবং নতুন করে যুদ্ধ শুরুর ঝুঁকি তৈরি করবে। ফোনালাপে ট্রাম্পের প্রস্তাবে নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে কাজ করতে দুটি যৌথ ‘ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠনে সম্মত হন পুতিন। এছাড়া জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর আবারও কথা বলার বিষয়ে একমত হন দুই নেতা।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন