যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

gbn

হাকিকুল ইসলাম খোকন, 

বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু-সহ প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার মানুষদের ওপর বর্বরোচিত হামলা, ধর্ষণ, বাড়ি-ঘরে আগুন, লুটতরাজসহ অফিস-আদালত থেকে বিতারণের প্রতিবাদ এবং এহেন জঘন্য আচরণে লিপ্তদের দমনে ড.মুহম্মদ ইউনূস সরকারের সীমাহীন কার্পণ্য এবং উদাসিনতার নিন্দা জানাতে যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।এসময় গত বছর ২০২৪ জুলাই থেকে সারাদেশে জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের লাগামহীন বর্বরতার তথ্য উপস্থাপনের পর এহেন আচরণ বন্ধে ন্যূনতম কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সমালোচনার পর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে তাদেরকে নিষিদ্ধের দাবি জানানো হয়।

গত ১৪ নভেম্বর ২০২৫ শুক্রবার নিউইয়র্ক শহরের ফ্লোরালপার্কে গোল্ডেন ইয়ার্স কম্যুনিটি সেন্টারে সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদের বার্ষিক সাধারণ সভায় সংখ্যালঘু নিরাপত্তায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতাও কামনা করা হয় বলে সংগঠনের  পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়। পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নবেন্দু দত্তের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক বিষ্ণু গোপের সঞ্চালনায় ১৫০ জনের অধিক সদস্য ও শুভানুধ্যায়ীদের উপস্থিতিতে পাঁচ ঘন্টা স্থায়ী এ সভায় মঞ্চে সভার সভাপতি ছাড়াও ছিলেন সংগঠনের তিন সভাপতি ডা. টমাস দুলু রায়, ড. দ্বিজেন ভট্টাচার্য্য ও রণবীর বড়ুয়া এবং ট্রাষ্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুশীল কুমার সাহা।
সংখ্যালঘু বলে নির্যাতনে নিহতদের উদ্দেশ্যে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের সঙ্গে “দেখ আলোয় আলো আকাশ” গানটি পরিবেশনের মাধ্যমে সভা শুরু হয়। এরপরই বাংলাদেশ থেকে সম্প্রতি আগত ভোরের কাগজের সিনিওর রিপোর্টার অভিজিৎ ভট্টাচার্য ও নারায়নগঞ্জের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর প্রদীপ ভৌমিক দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তাঁদের বক্তব্য শুরু হলে, ২০২৪ সালের ৪ আগষ্ট থেকে এ পর্যন্ত সংঘটিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনাবলীর বর্ণনা ও পরিসংখ্যান সম্বলিত ৬ পাতার একটি ব্রোশিয়ার সভায় বিলি করা হয়, যাতে নিহত-ধর্ষিতাদের সংখ্যা ছাড়াও অভয়নগর, গঙ্গাছড়া, হাজারি গল্লি, পার্বত্য চট্টগ্রামে গোটা বৌদ্ধপাড়া, ১০০ বাড়ি ও ক্রিসমাস ঈভে খৃষ্টান পাড়ার ১৭টি বাড়িকে অগ্নিসংযোগে ধ্বংস করা, ও গুইমা রায় নাবালিকা ধর্ষণের প্রতিবাদরত তিনজন মারমা আদিবাসীকে হত্যার বিশদ, সচিত্র বর্ণনা ছিল।
তারপর ইউনাইটেড হিন্দুজ অফ ইউ. এস. এ, বাংলাদেশ পূজা সমিতি, শ্রীকৃষ্ণ ভক্তসংঘ, গীতাসংঘ, রাধামাধব মন্দির, মহামায়া মন্দির, জগন্নাথ হল এলামনাই এসাসিয়েশন, হিন্দু হেরিটেজ অফ নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে আগত নেতৃবৃন্দ, এবং সমতল ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ, খৃষ্টান ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা প্রদানে ড. ই্উনূস সরকারের ব্যর্থতা ও অনীহার তীব্র নিন্দা করেন এবং গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাঁদের কয়েকজন দেশের সর্বশেষ পরিস্থিতির বর্ণনা করা ছাড়াও ২০০১ সালের অক্টোবর থেকে শুরু করে রামু, নাসিরনগর, মুরাদনগর, সাঁথিয়া, নানুয়ার দিঘীরপাড় সহ ভয়াবহ সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনাগুলো কারা ঘটিয়েছিল এবং তাতে কোন সরকারের কী ভূমিকা ছিল সে ইতিহাসও নতুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে তুলে ধরেন। বক্তাদের মধ্যে ছিলেন শিতাংশু গুহ, ড. জিতেন রায়, ড. সব্যসাচী ঘোষ দস্তিদার, রূপকুমার ভৌমিক, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তি,প্রদীপ মালাকার, তপন সেন, রীণা সাহা, পার্থ তালুকদার, সুভাষ সাহা, নির্মল পাল, রমেশ নাথ, রণবীর বড়ুয়া, ডা. টমাস দুলু রায়, ভজন সরকার, রামদাস ঘরামী, সুশীল সিনহা, নিতাই নাথ, বিশ্বজিৎ সাহা, রাজীব দে, এফ.শাওন দেবনাথ, এডওয়ার্ড হলসানা, অঞ্জন চক্রবর্তি প্রমুখ্। সভায় ২৬জন নবাগত তরুণ-তরুণী সদস্য-সদস্যাকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে তাঁদের অভিজ্ঞতা, আশা প্রত্যাশা ও অঙ্গীকার ব্যক্ত করতেও দেয়া হয়। এরপর, সাধারণ সম্পাদক বিগত এক বছরে দেশের বিপন্ন সংখ্যালঘুদের সাহায্য ও সুরক্ষার্থে গৃহিত উদ্যোগের বিবরণী দেন, এবং সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ ্চন্দন সেনগুপ্ত, গত এক বছরের আয়-ব্যায়ের হিসাব পেশ করেন,এবং বিপন্ন সংখ্যালঘুদের সাহায্যকারী ও নবাগত সদস্যদের ধন্যবাদ-অভিনন্দন জানান। এই পর্যায়ে সংগঠনের অন্যতম সভাপতি ড. দ্বিজেন ভট্টাচার্য্য সভার পক্ষ থেকে উত্থাপিত প্রস্তাবগুলো উপস্থাপনের পর সকলের মতামতের ভিত্তিতে তা গৃহিত হয়।

এতে রয়েছে জাতিহসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীকে নিষিদ্ধ করার দাবি। কারণ তারা ২০২৪ এর জুলাই থেকে শুরু হওয়া সংখ্যালঘু নির্যাতনের সাথে সরাসরি জড়িত রয়েছে।

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন