সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ও অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা যে আগ্রহ নিয়ে অর্থনীতির শ্বেতপত্র প্রণয়ন, টাস্কফোর্স গঠনসহ বিভিন্ন সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তা আশানুরূপ গতি পায়নি।’
তিনি বলেন, ‘সংস্কারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা তার সহযোগী ও আমলাতন্ত্র এগিয়ে নিতে পারেনি।’
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে সিলেটে সিপিডির উদ্যোগে নাগরিক প্ল্যাটফরমে প্রাক-নির্বাচনী আঞ্চলিক পরামর্শ সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘আগামী দিনের নির্বাচনী ইশতেহারে সেই প্রতিশ্রুতিগুলোকে স্থান দেওয়া প্রয়োজন, যার ধারাবাহিকতা নতুন সরকার রক্ষা করবে।
’
তিনি আরো বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ গড়তে এবং দেশকে মধ্যম আয়ের স্তরে নিয়ে যেতে এসব সংস্কার অপরিহার্য। সংস্কারবিরোধী জোট ভাঙতে হলে এ ধরনের পদক্ষেপ নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সব সংস্কার এক সরকার করতে পারবে না উল্লেখ করে ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘সরকারকে স্পষ্ট করতে হবে কতটুকু সংস্কার তারা সম্পন্ন করেছে এবং অবশিষ্ট মেয়াদে কতটুকু সম্পন্ন করতে পারবে। এর আলোকে অসম্পূর্ণ কাজগুলো এগিয়ে নেওয়ার বিষয়েও ইশতেহারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন।
’
এর আগে প্রাক-নির্বাচনী আঞ্চলিক পরামর্শ সভার মুক্ত আলোচনা পর্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতিনিধিরা নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘অতীতে এ দেশে কেবল দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে। স্কুল-কলেজের ভবন হয়েছে। কিন্তু শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
দেশে এমন একটি গোষ্ঠী গড়ে উঠেছিল, যারা দৃশ্যমান প্রকল্প নিতে সাহায্য করেছিল।’
বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক সমঝোতার প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই সমঝোতার জন্য সংস্কার এগিয়ে নিতে হবে। গতকাল থেকে দেখছি যে এই সরকারকে আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মুডে নিয়ে যেতে হবে। সেটাতে গেলে সংস্কারের কাজ আরও ঢিলা হয়ে যাবে।’
অতীতের সব সরকারের আমলে দেশে ‘চামচা পুঁজিবাদী’ অর্থনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই পুঁজিবাদে কিছু চামচা তৈরি হয়।
তারা দেশে লুটপাটতন্ত্র ও চোরতন্ত্রে পরিণত করেছে এবং রাষ্ট্রের কাঠামোকে এ কাজে ব্যবহার করেছে। তারা সব সময়ই সংস্কারবিরোধী।’
তিনি আরো বলেন, ‘সংস্কার প্রণয়ন করা যত সহজ, বাস্তবায়ন করা তত সহজ নয়। আগামী দিনে যারা দেশ পরিচালনা করবেন, তাদের এ ব্যাপারে আগ্রহী হতে হবে।’
ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘এখনকার সরকার অন্তর্বর্তীকালীন, কিন্তু সময়টা রূপান্তরকালীন। এই রূপান্তরের পথে আমাদের এগোতে হবে।’
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন