নজরুল ইসলাম তোফা||
বিভিন্ন পত্রিকার কার্ড ব্যবহার করে সাংবাদিক পরিচয়ের অন্তরালে নারায়ণগঞ্জে অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছে বাবুরাইল তাঁতি পাড়া এলাকার সিরাজুল হক'র ছেলে সেলিম আহমেদ ডালিম। তার অপরাধ জগতের মূল শেল্টারদাতা ছোট ভাই নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এড. আলী আকবর। এই অপরাধী চক্রের অপরাধমূলক কাজের প্রতিবাদ করলে অথবা স্থানীয় সাংবাদিকরা গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করলেই মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হয়। এই চক্রে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ জজ কোর্টের আরও কয়েকজন অসৎ আইনজীবী ও প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। ডালিম ও তার সঙ্গী শিরিন গংদের বিরুদ্ধে কয়েকজন ভুক্তভোগীদের মধ্য থেকে এমনটাই অভিযোগ উঠে এসেছে।
রবিবার (৩১ আগষ্ট) সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও র্যাব-১১ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন মোঃ মনির হোসেন দেওয়ান। অভিযোগে মনির হোসেন বলেন- তারা এলাকায় মাদক ব্যবসা ও বিভিন্ন ধরণের অনৈতিক কাজে জড়িত করেছে আমার কন্যা তামান্না দেওয়ান দোলাকে। তাদের প্ররোচনায় পড়ে আমার শিক্ষিত, ভদ্র, নামাজী মেয়ে তার ১০ বছরের সংসার ও শিশু কন্যাকে ছেড়ে নিজে মাদকাসক্ত হয়েছে এবং মাদক ব্যবসাসহ দেহ ব্যবসার মত জগন্য কাজ করছে। তিনি আরও বলেন- ২০২১ সালে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ফেসবুকে খানপুর এলাকার মোঃ আলী'র বখে যাওয়া কন্যা আসমা খাতুন শিরিনের সাথে দোলার পরিচয় হয়। শিরিন এলাকায় সমকামী নারী হিসেবে পরিচতি। তারই ইন্ধনে আমার মেয়ে দোলা এখন সমকামীতায় লিপ্ত হয়েছে। এছাড়াও দেহ ব্যবসা, মাদক বিক্রি সহ নানা ধরনের অপরাধমূলক ও অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত। এবিষয়ে আমি আমার কন্যা সন্তানকে সতর্ক করলে, উল্টো সে শিরিনের প্ররোচনায় তার স্বামী-সন্তান ও আমাদের সবাইকে ত্যাগ করে শিরিনের সাথে গিয়ে বসবাস করতে শুরু করে। শিরিনের তার সঙ্গ ফেরাতে গত ৭/৯/২০২১ইং ও ৯/৯/২০২১ইং তারিখে মেয়ে দোলার স্বামী মিজানুর রহমান ও আমি নিজে বাদি হয়ে ফতুল্লা থানায় পৃথক ২টি লিখিত অভিযোগ করি। কিন্তু তাতে কোন কাজ হয়নি। উল্টা নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এড. আলী আকবর ও তার ভাই সাংবাদিক পরিচয়দানকারী মাদক ব্যবসায়ী সেলিম আহমেদ ডালিমের প্ররোচনায় দোলা ফেসবুক লাইভ করে। ফেসবুক লাইভে এসে আমি ও আমার পরিবার এবং আমার অন্যান্য সন্তানদের বিরুদ্ধে মানহানীকর বক্তব্য প্রদান করে। যার ফলে আমি অসহায় হয়ে ২১/৯/২০২১ইং তারিখে আদালতে হলফনামার মাধ্যমে আমি ও আমার স্ত্রী নাছিমা দেওয়ান (৫৬), আমাদের মেয়ে তামান্না দেওয়ান দোলা'র সাথে পারিবারিক সম্পর্কচ্ছেদ করতে বাধ্য হই। তারপরেও সে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার পরিবারের সদস্যদের মিথ্যে মামলার আসামী বানিয়ে সামাজিকভাবে হেনস্থা করে যাচ্ছে। আমার বড় কন্যা সন্তান সোনিয়া দেওয়ান প্রীতি একজন সৎ ও সাহসী নারী সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী হিসেবে দেশব্যাপী ব্যাপক পরিচিত। দীর্ঘ ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে সে দক্ষতা ও সততার সাথে সাংবাদিকতা করতে গিয়ে সমাজের নানা অপরাধীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় কলম ধরেছে। সে কারণে ভুয়া সাংবাদিক পরিচয় দেয়া অপরাধীরা চক্রান্তে করে আমার মেয়েকেই আমাদের বিরুদ্ধে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।
এই চক্রটির দ্বারা নারায়ণগঞ্জের অনেক পরিবার ও ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সাংবাদিকতার কার্ড ব্যবহার করে নানা ধরনের অপরাধী কার্যক্রম পরিচালনা করা এই চক্রটি এতটাই শক্তিশালী যে, তাদের বিরুদ্ধে যারাই ইতিপূর্বে আওয়াজ তুলেছে, তাদেরকে মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি করা থেকে শুরু করে নানাভাবে তাদেরকে হেনস্থা করে যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও এক ভুক্তভোগির দেয়া তথ্যমতে, এই চক্রটি অবৈধ পথে অর্জিত বিপুল পরিমান অর্থ উপার্জন করেছে। এই চক্রের সাথে আইন পেশা ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন বেশকিছু অসৎ কর্মকর্তা সহ নারায়ণগঞ্জের একাধিক শীর্ষ সন্ত্রাসী জড়িত রয়েছেন। যাদের শেল্টারে এই অপরাধী চক্র সাধারণ মানুষের জীবন বিষিয়ে তুলছে। সম্প্রতি এ-ই ঘটনার বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ আদালতে ন্যায় বিচারের জন্য ১৪/০৮/২০২৫ইং তারিখে একটি মামলা দায়ের করা হয়ছে, যার মামলা নং- ১৯৫।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন