সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে এবং তার সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামে যুক্তরাষ্ট্রে আটটি গাড়ির সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব সম্পদ জব্দে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সংস্থাটি।
এ বিষয়ে হাতে আসা এক নথিতে বলা হয়, এই গাড়িগুলো জয়ের মালিকানায় থাকতে পারে। এসব সম্পদ নতুন কিংবা পুরোনো হতে পারে। প্রকৃত মূল্যের পরিবর্তন হতে পারে।
কমিশনের বলছে, প্রায় ৬০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলার তদন্তে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
জয়ের বিরুদ্ধে রাজধানীর পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে মামলা করেছে দুদক।
দুদকের অভিযোগ, উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় জয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে হুন্ডি ও অন্যান্য অবৈধ উপায়ে অর্থপাচার করেছেন। পরে সেই অর্থে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে এসব গাড়ি ও দুটি বাড়ির মালিকানা অর্জন করেন। দুটি বাড়ির জন্য খরচ হয়েছে ৫৪ কোটি টাকার বেশি।
যেসব গাড়ির খোঁজ পাওয়া গেছে তার মধ্যে রয়েছে—২০১৫ সালের মার্সিডিজ-বেঞ্জ এস-ক্লাস, ২০১৬ সালের মার্সিডিজ-বেঞ্জ এসএল-ক্লাস, ২০১৫ সালের লেক্সাস জিএক্স ৪৬০, ২০১৬ সালের ল্যান্ড রোভার, ২০১৮ সালের ম্যাকলারেন ৭২০এস, ২০১৮ সালের মার্সিডিজ-বেঞ্জ এমজি জিটি এবং ২০০১ ও ২০০৩ সালের দুটি জিপ গ্র্যান্ড চেরোকি।
এসব গাড়ির আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯২৪ মার্কিন ডলার বা ৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা (১২১ টাকা ডলারের রেট ধরে)। এর মধ্যে লেক্সাস গাড়িটি নিবন্ধিত রয়েছে জয়ের সাবেক স্ত্রী ক্রিস্টিনা ওভারমায়ারের নামে।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত কর্মকর্তা প্রয়োজনে অভিযুক্তের যে কোনো সম্পদ জব্দ করতে পারেন। সে অনুযায়ী আদালতে আবেদন জানানো হবে এবং মামলার বিচার চলাকালে জব্দকৃত সম্পদ আলামত হিসেবে উপস্থাপন করা হবে।
দুদকের অভিযোগ, ২০০০ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ঘুষ, দুর্নীতি ও সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে জয় অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন এবং বিদেশে পাচার করেছেন।
গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান জোরদার করেছে দুদক। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার ছয়টি প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে এরই মধ্যে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, টিউলিপ সিদ্দিক, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। এসব মামলার মোট আসামির সংখ্যা ২৩।
এরই মধ্যে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের ১২৪টি ব্যাংক হিসাবে থাকা ৬৩৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা অবরুদ্ধ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন