রোহিঙ্গা সঙ্কটের বোঝা ভাগ করে নেয়ার আহ্বান বাংলাদেশের

জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //

রোহিঙ্গা দায়িত্ব ভাগ করে নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘বিশেষ অর্থনৈতিক সহায়তাসহ জাতিসংঘের মানবিক ও দুর্যোগ-ত্রাণ সহায়তার সমন্বয় জোরদার করা’ শীর্ষক সাধারণ বিতর্কে এ আহ্বান জানায় বাংলাদেশ। আজ শনিবার জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট দীর্ঘায়িত প্রকৃতির একটি সংকট বিধায় আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহকে এর দায়ভার ও দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নিতে প্রচেষ্টা আরও বৃদ্ধি করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

 

জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের যে মানবিক সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে, তা তুলে ধরে রাবাব ফাতিমা মিয়ানমার পরিস্থিতির ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও বেশি মনোযোগ বাড়ানোর অনুরোধ জানান। যাতে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গার নিজ ভূমি মিয়ানমারে নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়। রোহিঙ্গা সংকটের ফলে এই অঞ্চলে ইতিমধ্যে যে জটিল রাজনৈতিক ও মানবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে, সংকট দীর্ঘায়িত হলে তা আরও জটিলতর পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে মর্মে উল্লেখ করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত মানবিক পরিস্থিতিতে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস, প্রতিরোধ, অভিযোজন, প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য অর্জন, ত্রাণ ও প্রশমনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে উত্তম অনুশীলন এবং বিশেষ বিনিয়োগ করে যাচ্ছে, তা উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তিনি বলেন, ‘আমরা ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ গ্রহণ করেছি, যা আমাদের জলবায়ু নাজুক পরিস্থিতি থেকে জলবায়ুর প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য অর্জন ও সমৃদ্ধিপূর্ণ পরিস্থিতির দিকে ধাবিত করতে সাহায্য করছে।’

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়ার ক্রমবর্ধমান ঘটনা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাস্তুচ্যুতদের মানবিক চাহিদা মেটাতে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহ ও অন্যান্য অংশীজনদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয় বৃদ্ধি করা অত্যন্ত প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে তিনি প্ল্যাটফর্ম অন ডিজাস্টার ডিসপ্লেসমেন্টের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন।

জলবায়ু পরিবর্তনে জরুরি সাড়াদান পর্যায় থেকে প্রস্তুতি ও প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম পর্যায়ে উত্তরণের ক্ষেত্রে জাতীয় অগ্রাধিকার ও মাঠপর্যায়ের বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই মানবিক সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাস ও প্রতিকূলতা মোকাবিলায় সক্ষম সমাজ বিনির্মাণের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। যেকোনো মানবিক সংকটে নারীরাই প্রথম সাড়া দেয় এবং কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে মর্মে উল্লেখ করে তিনি দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও প্রশমনের ক্ষেত্রে লিঙ্গ-সংবেদনশীল নীতি জোরদার কারার আহ্বান জানান।

সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে মানবিক সহযোগিতার প্রবেশাধিকার না দেওয়া এবং মানবাধিকার কর্মী ও মানবিক সাহায্যের স্থাপনা ও সরঞ্জামাদির ওপর নির্বিচারে সশস্ত্র হামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। এ ধরনের সহিংসতার দায়বদ্ধতা নিরূপণের গুরুত্বের ওপর জোর দেন তিনি।

সাধারণ বিতর্কের পর সাধারণ পরিষদে জাতিসংঘের মানবিক ও দুর্যোগ-ত্রাণ সহযোগিতার সমন্বয় শক্তিশালীকরণ-বিষয়ক চারটি রেজল্যুশন গৃহীত হয়। এর মধ্যে ‘গ্রুপ-৭৭ ও চীন’-এর পক্ষে প্রাকৃতিক দুর্যোগ-বিষয়ক রেজল্যুশনটি গ্রহণের ক্ষেত্রে সমন্বয় করে বাংলাদেশ।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন