ইউনিসেফ জানিয়েছে, গত অক্টোবরে গাজার ৯ হাজার ৩০০ শিশু তীব্র পুষ্টিহীনতায় আক্রান্ত হয়েছে, যাদের বয়স পাঁচ বছরের কম। শনিবার (২৯ নভেম্বর) সংস্থাটি এ তথ্য জানায়। তারা বলছে, তীব্র পুষ্টিহীনতা গাজার শিশুদের জীবন ও স্বাস্থ্যকে ক্রমেই ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। শীতের শুরুতে রোগের বিস্তার বৃদ্ধি পেয়েছে এবং গুরুতর অসুস্থ শিশুদের মৃত্যুঝুঁকি বেড়েছে।
ইউনিসেফের তথ্য মতে, গত মাসে পরিচালিত সংস্থাটি ও তাদের সহযোগীদের পুষ্টি পরীক্ষায় দেখা গেছে অক্টোবর মাসে পাঁচ বছরের চেয়ে কম বয়সী ৯ হাজার ৩০০ শিশু, যাদের বয়স পাঁচের নিচে তারা তীব্র পুষ্টিহীনতায় আক্রান্ত হয়েছে। গাজা সীমান্তে প্রচুর পরিমাণে শীতকালীন সরবরাহ আটকে আছে। সংস্থাটি এই অঞ্চলে মানবিক সহায়তার সরবরাহ নিরাপদ, দ্রুত ও অবাধ করার আহবান জানিয়েছে। তারা বলছে, শীতের আবহাওয়া চলে এসেছে।
কিন্তু এখনও হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত পরিবার অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে রয়ে গেছে। তাদের গরম পোশাক, কম্বল বা শীত থেকে আত্মরক্ষার মতো উপকরণ নেই। অন্যদিকে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে জনবহুল এলাকায় ময়লা-আবর্জনা ও ড্রেনের পানি ঢুকে গেছে।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিন রাসেল বলেছেন, অগ্রগতি সত্ত্বেও গাজায় পাঁচ বছরের কম বয়সী হাজার হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে।
অন্যদিকে আরও অনেকের সঠিক আশ্রয়, স্যানিটেশন ও শীতের বিরুদ্ধে সুরক্ষার অভাব রয়েছে। গাজায় বহু শিশু এখনো ক্ষুধা, অসুস্থতা ও ঠাণ্ডা তাপমাত্রার মধ্যে আছে, যা তাদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। এই শিশুদের রক্ষা করার জন্য প্রতিটি মিনিট গুরুত্বপূর্ণ।
রাসেল গাজা উপত্যকার সব ক্রসিং খুলে দেওয়ার আহবান জানান। তিনি বলেন, প্রক্রিয়াকে সরলীকরণ, দ্রুত ক্লিয়ারেন্স পদ্ধতি এবং মানবিক সরবরাহের প্রবেশের স্পষ্ট অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা প্রয়োজন।
পাশাপাশি মিসর, ইসরায়েল, জর্দান, পশ্চিম তীরসহ সব সম্ভাব্য সরবরাহ রুট দিয়ে মানবিক ত্রাণ পরিবহনের সুযোগ করে দেওয়া জরুরি।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, সাম্প্রতিক শীতকালীন ঝড়ে বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর আশ্রয় নেওয়া প্রায় ২২ হাজার তাঁবু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং দুই লাখ ৮৮ হাজারেরও বেশি পরিবার ঠাণ্ডা ও বৃষ্টিপাত থেকে সুরক্ষা পেতে ব্যর্থ হয়েছে। গাজার কর্তৃপক্ষ অনুমান করে যে দুই বছরের যুদ্ধে ইসরায়েল বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করার পর ফিলিস্তিনিদের জন্য সবচেয়ে মৌলিক আশ্রয়ের প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য তিন লাখ তাঁবু এবং প্রিফ্যাব্রিকেটেড আবাসন ইউনিটের প্রয়োজন।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় প্রায় ৭০ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে এক লাখ ৭০ হাজার ৯০০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছে এবং গাজা উপত্যকার বেশির ভাগ অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন