উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে সামরিক বাহিনীর সাথে দেশটির আধা-সামরিক বাহিনীর সংঘাতে ১৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দারফুর অঞ্চলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘাতের সময় প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।
রোববার (২৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দারফুর অঞ্চলে সুদানের সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে রকেট গোলাবর্ষণে কমপক্ষে ১৬ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
আল জাজিরা বলছে, দক্ষিণ দারফুর প্রদেশের রাজধানী নিয়ালা শহরে বেসামরিক প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটেছে বলে শনিবার দেশটির একটি স্থানীয় আইনজীবী ইউনিয়ন জানিয়েছে। দারফুর বার অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, লড়াইয়ের ফলে ১৬ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একটি পরিবারের একজন ছাড়া সবাই নিহত হয়েছেন। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিটিও আঘাত পেয়ে আহত হয়েছেন।
খার্তুম থেকে আল জাজিরার হিবা মরগান বলেছেন, ‘হাজার হাজার মানুষ পশ্চিম দারফুর অঞ্চল থেকে পালিয়ে যাচ্ছে এবং প্রতিবেশী চাদের সীমান্ত পার হওয়ার চেষ্টা করছে। এছাড়া সহিংসতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আমরা পশ্চিম দারফুর থেকে চাদে শরণার্থীদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে দেখেছি। তারা বলেছেন, জাতিসত্তার ভিত্তিতে আরএসএফ সংশ্লিষ্ট মিলিশিয়ারা তাদের ওপর হামলা করেছে।’
গত ১৫ এপ্রিল সুদানে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে লড়াই শুরু হয় এবং ওই একই মাসের শেষের দিকে দারফুরে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘাতে এখন পর্যন্ত সুদানজুড়ে কমপক্ষে ৩ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আল জাজিরা বলছে, দারফুর অঞ্চলটি আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফের শক্তিশালী ঘাঁটি। সম্প্রতি নিয়ালা শহরের চারপাশে যুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করেছে এবং এল-জেনিনাতে ভয়াবহ সংঘর্ষের পর সেখানে নৃশংসতার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘ।
এছাড়া সুদানের রাজধানী খার্তুম এবং এর আশপাশের অঞ্চলেও যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে। এখানকার বাসিন্দারা গেজিরা প্রদেশের উত্তরাঞ্চলীয় গ্রামগুলোতে শনিবার সেনাবাহিনীর বিমান হামলার কথা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ক্ষমতার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের জেরে গত ১৫ এপ্রিল থেকে সংঘর্ষ বাঁধে সুদানের সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে। দু’পক্ষের এই সংঘাতে ইতোমধ্যেই হাজারও মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।
যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ইতোমধ্যেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। অবশ্য ‘সম্ভাব্য যেকোনো যুদ্ধবিরতির কথা’ গত শুক্রবার অস্বীকার করেছে খার্তুমের সরকার।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন