ছেলের শেষ ফোন: বাবা, আমার পা উড়ে গেছে, কলমা পড়িয়ে দাও

gbn

তিন মাস আগে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে চাকরিতে ঢোকেন মমিনুল হক (২৭)। শনিবার আগুন লাগার পরপরই রাত দশটার দিকে বাবাকে ফোন দেন তিনি। ফোন দিয়ে বলেন, ‘বাবা এখানে কিছুক্ষণ পরে পরে ব্লাস্ট হচ্ছে। সম্ভবত আমি মারা যাচ্ছি।’ এরপরই ফোন কেটে যায়। অনেক চেষ্টা করেও মমিনুলকে ফোনে আর পাচ্ছিলেন না বাবা ফরিদুল। এর ১০ মিনিট পরই আবার ফোন, তখনই শুনতে পেলেন ভয়াবহ কিছু।

শনিবার মাঝরাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) আহাজারি করতে করতে ছেলের সঙ্গে শেষ কথোপকথনের বিষয়ে ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘দ্বিতীয়বার ফোনে মমিনুল বলেন, ‘বাবা আমার একটা পা উড়ে গেছে। আমাকে কলমা পড়িয়ে মাফ করে দেন।’ তখনও ওপাশ থেকে ছেলের আর্তচিৎকার শুনতে পারছিলেন বাবা। পঞ্চাশোর্ধ ফরিদুল বলেন, হাতে ফোন রেখেই মমিনুল বলছিলেন, আমি মাটিতে পড়ে গেছি আমাকে কেউ একটু তুলে দাও’। এসময় কেটে যায় ফোনের লাইন। ওটাই ছিল ছেলের সঙ্গে শেষ কথা। কথাগুলো বলেই কান্নায় ভেড়ে পড়েন ফরিদুল।

বিএম কন্টেইনার ডিপোতে মাত্র তিন মাস আগে কাউন্টারে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকরি শুরু করেছিলেন মুমিনুল। শনিবার রাতে চট্টগ্রাম নগরী থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ২৪ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত বেসরকারি কন্টেইনার ডিপোতে আগুনের পর ভয়াবহ বিস্ফোরণে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে ও শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। তাদেরই একজন মমিনুল।

তার খালাতো ভাই তায়েব চমেক হাসপাতালে বলেন, তিন মাস আগে মহসিন কলেজ থেকে ইকোনমিক্সে অনার্স শেষ করে চাকরি শুরু করে মমিনুল। শনিবার রাত ৮টার দিকে ডিপোতে যান তিনি। ফরিদুল জানান, মমিনুলের সঙ্গে কথা শেষে তিনি চট্টগ্রাম শহরে থাকা নিজের স্বজনদের ফোন করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে যেতে বলেন। পরে তার চাচা খোরশেদ আলম হাসপাতালে এসে ভাতিজার লাশ দেখতে পান। পরিবারে দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে মুমিনুল মেজ।

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন