ডা. মুরাদ হাসানের যতো নোংরা কীর্তি

জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //

একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করে অবশেষে পদ হারিয়েছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। আগামীকালের মধ্যে তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

সোমবার রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ তথ্য জানিয়েছেন।

সম্পর্কিত খবর

ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ সন্ধ্যায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। আমি আজ রাত ৮টায় প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে বার্তাটি পৌঁছে দিই।

সম্প্রতি বিভিন্ন টকশো ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডা. মুরাদ হাসানের দেওয়া কিছু বক্তব্য ও কর্মকাণ্ড নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

অডিও কেলেঙ্কারি

ফোনালাপের শুরুতে ডা. মুরাদের দাবি করা কণ্ঠের অন্যপাশে চিত্রনায়ক ইমনকে কথা বলতে শোনা যায়। চিত্রনায়ক ইমন ডা. মুরাদকে জানান, তিনি বনানীর একটি রেস্তোরাঁয় রয়েছেন। কথা বলার একপর্যায়ে মাহিয়া মাহিও তার সঙ্গে রয়েছেন জানিয়ে ইমন ডা. মুরাদের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন।

ডা. মুরাদ মাহিয়া মাহিকে ফোনে পেয়ে বিভিন্ন অশ্লীল কথাবার্তা বলতে থাকেন। একপর্যায়ে ‘অশ্লীল ভাষায়’ দেখা করার জন্য ‘নির্দেশ’ দেন। প্রয়োজনে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পাঠানোরও হুমকি দেন তিনি। ওই কথোপকথনের দ্বিতীয় ধাপে আবার কথা হয় এই দুজনের। ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপটি ‘সঠিক’ বলে স্বীকার করেছেন চিত্রনায়ক ইমন। ঘটনাটি দুই বছর আগের দাবি করে ইমন জানান, একটি ছবির মহরত অনুষ্ঠানের আগের রাতে ফোন দেন প্রতিমন্ত্রী।

ইমন বলেন, ডিরেক্টর সুমন ভাইসহ (ওয়াজেদ আলী সুমন) আমরা মিটিং করছিলাম। তখন উনি (প্রতিমন্ত্রী) হঠাৎ ফোন দিয়েছেন। তিনি কিন্তু প্রথমেই বলেছেন, ‘তুই ফোন ধরস নাই কেন?’ পরে উনিই আবার ফোন দিয়েছেন। এটা ২০২০ সালের করোনারও আগের ঘটনা। একজন মন্ত্রী বারবার ফোন দিচ্ছেন, আমি কিন্তু বলেছি, ‘হ্যাঁ, ভাই আসতেছি। দেখছি ভাই’। তথ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ডা. মুরাদ যেকোনও আর্টিস্টকে ফোন দিতেই পারেন উল্লেখ করলেও চিত্রনায়ক ইমন মনে করেন, ‘এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য।’ তবে তিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন, তিনি নিজে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছেন মাত্র।

নারী এমপিকে ‘মানসিক রোগী’ বলা

শনিবার (৪ ডিসেম্বর) বেসরকারি একটি টেলিভিশনের টকশোতে প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান অপর আলোচক বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়ার সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী পাপিয়াকে ‘মানসিক রোগে আক্রান্ত’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি নিজে একজন ‘চিকিৎসক হিসেবে’ বিএনপির এই নেত্রীর (পাপিয়া) 'চিকিৎসা দরকার' মনে করেন বলেও মন্তব্য করেন। এ সময় দু’জনের মধ্যে তীব্র বাগবিতণ্ডা হয়।

খালেদার পরিবারের নারী সদস্যকে নিয়ে অশালীন বক্তব্য

ইউটিউবে প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারে খালেদা জিয়ার পরিবারের এক নারী সদস্যকে উদ্দেশ্য করে অশালীন বক্তব্য দেন ডা. মুরাদ হাসান। প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে হাস্যরস করতে করতে ওই নারীকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন তিনি। এসময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে নিয়েও ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করতে শোনা যায় তথ্য প্রতিমন্ত্রীকে।

রকস্টারের হয়ে নাচে-গান

অভিনয়শিল্পী সংঘের সাধারণ সভায় বক্তৃতা শেষে শুরু হয় সঙ্গীতানুষ্ঠান। মঞ্চে উঠলেন অভিনেত্রী তারিন ও প্রতিমন্ত্রী মুরাদ। দুজন কণ্ঠ মেলালেন একসঙ্গে। গাইলেন, ‘আমায় ডেকো না, ফেরানো যাবে না, ফেরারি পাখিরা...’। এরপর তিনি একা দাঁড়ালেন। কি বোর্ড, ড্রাম, প্যাড, লিড গিটার, বেজ গিটার চেক করে নিলেন। চলে এলেন মঞ্চের একেবারে সামনে, চিরপরিচিত রকস্টারের ভূমিকা অবতীর্ণ হলেন।

সংবিধান নিয়ে ভিন্ন কথা

এ বছরের অক্টোবরে মুরাদ হাসান তার এক বক্তব্যে বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন। তার ব্যক্তিগত মন্তব্যে তিনি সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ এবং ১৫তম সংশোধনী বাতিল করে ১৯৭২ সালের সংবিধান পুনর্বহাল রাখার ইচ্ছা পেশ করেন। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা উল্লেখ থাকায় এবং সকল ধর্মের প্রতি সমান মর্যাদা উল্লেখ থাকায় তার প্রস্তাবটি নেট দুনিয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হয়।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন