জিবি নিউজ প্রতিনিধি//
ডিলার জটিলতায় সিলেট মহানগরীর ২৬টি ওয়ার্ডের নিম্নবিত্তরা সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ওএমএস সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৬টিতেই বন্ধ রয়েছে ওএমএস কার্যক্রম।
স্বল্প মূল্যে চাল ও আটা কেনার আশায় প্রতিদিন নিম্নবিত্তরা ডিলারদের দোকানের সামনে ভিড় করে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে।
গত বছর ৫ আগস্টের পর নতুন করে ১৬ ওয়ার্ডে ডিলার নিয়োগ দেওয়া হলেও আদালতে মামলার কারণে ২৬ ওয়ার্ডে নতুন ডিলার নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। আদালত পুরনো ডিলারদের সময় বৃদ্ধি করলেও সেই আদেশ এখনো কার্যকর না হওয়ায় ওএমএস’র পণ্য উত্তোলন করতে পারছেন না তারা।
তবে খাদ্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, শিগগিরই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, গেল বছরের ৫ আগস্ট দেশের ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর অভিযোগ ওঠে ওএমএস এর ডিলার নিয়োগে আওয়ামী লীগের দলীয়প্রীতির। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের অক্টোবরে খাদ্য অধিদপ্তরের এক আদেশে সারাদেশের ওএমএস ডিলারদের লাইসেন্স বাতিল করে নতুন ডিলার নিয়োগের উদ্যোগ নেয়া হয়। এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে সিলেট মহানগরীর ২৫ জন ডিলার উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন (রিট নং ১২৬৯৩/২৪) দায়ের করেন। শুনানী শেষে আদালত ওই ২৫ জনকে লাইসেন্সের মেয়াদ পর্যন্ত ডিলারশিপের কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
চলতি বছরের জুন মাসে পুরনো ২৫ ডিলারের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হলে তারা ফের আদালতের শরণাপন্ন হন। ২৫ জন ডিলারের মামলা চলমান থাকায় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডগুলো বাদ দিয়ে খাদ্য অধিদপ্তর মহানগরীর পুরনো ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫, ১১, ১৩, ২১, ২২ ও নতুন ১৫ ওয়ার্ডের মধ্যে ২৮, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৩৯ ও ৪২নং ওয়ার্ডে ডিলার নিয়োগ দেয়।
এদিকে, পুরনো ডিলারদের রিটের প্রেক্ষিতে আদালত ফের আরও ৬ মাসের জন্য মেয়াদ বৃদ্ধি করে। কিন্তু জুলাই থেকে খাদ্য অধিদপ্তর ওই ২৬ ওয়ার্ডের ডিলারদের ওএমএস’র পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। ফলে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডগুলোর নিম্নবিত্ত লোকজন সরকারের এই খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।
ডিলাররা জানান, আগে প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন ২০০ নিম্নবিত্তকে পাঁঁচ কেজি করে চাল ও পাঁচ কেজি করে আটা দেওয়া হতো। প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকা ও প্রতি কেজি আটা ২৪ টাকা দামে বিক্রি করতেন ডিলাররা। কিন্তু গেল এক মাস ধরে ডিলাররা পণ্য না পাওয়ায় নিম্নবিত্ত লোকজন পড়েছেন বিপাকে। প্রতিদিন ডিলার পয়েন্টে এসে তারা খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন।
সিলেট জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া মোস্তফা সিলেটভিউ-কে জানান, মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে সিলেট মহানগরীর কয়েকটি ওয়ার্ডে ওএমএস’র পণ্য বিক্রি বন্ধ রয়েছে। পুরনো কয়েকজন ডিলারের রিট আবেদনের কারণে সকল ওয়ার্ডে নতুন ডিলারও নিয়োগ হয়নি। তবে শিগগিরই এই সমস্যা সমাধান হয়ে যাওয়ার কথা। কয়েক দিনের মধ্যেই মহানগরীর ৪২টি ওয়ার্ডের সবকটিতে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ওএমএস’র কার্যক্রম শুরু হবে।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন