জিবি নিউজ প্রতিনিধি//
সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্তজুড়ে জুলাই মাসজুড়ে চোরাচালানবিরোধী অভিযান চালিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত ১০টি পৃথক অভিযানে ২৫ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের ভারতীয় পণ্য, মাদকদ্রব্য এবং অবৈধভাবে উত্তোলন করা পাথর পরিবহনের নৌযান জব্দ করেছে সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮ বিজিবি)।
বিজিবি জানায়, প্রতিটি অভিযান চালানো হয় সীমান্তবর্তী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিওপি কেন্দ্র থেকে। এসব অভিযানে সংগ্রাম, প্রতাপপুর, বিছনাকান্দি, তামাবিল, সোনারহাট, বাংলাবাজার, সোনালীচেলা, কালাইরাগ, উৎমা, শ্রীপুর, মিনাটিলা, দমদমিয়া ও পান্থুমাই এলাকার সীমান্ত পয়েন্টগুলোতে তৎপরতা চালানো হয়।
অভিযানগুলোর মাধ্যমে জব্দ করা পণ্যের মধ্যে রয়েছে ভারতীয় শাড়ি, সানগøাস, স্কিন ব্রাইট ক্রিম, সুপারি, চিনি, বিড়ি, চকলেট, সনপাপড়ি, ফেসওয়াশ, হেয়ার অয়েল, মুভ ক্রিম, ডেরোবিন অয়েন্টমেন্ট, আইবল ক্যান্ডি, অলিভ অয়েল, সাবান, বডি স্প্রে, শ্যাম্পু, টায়ার, গরু ও মহিষসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য ও প্রসাধনী। পাশাপাশি, বাংলাদেশ থেকে পাচারের সময় রসুন ও শিং মাছ জব্দ করা হয়।
এছাড়াও, চোরাচালানপথে ব্যবহৃত ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও একাধিক বাংলাদেশি বারকী নৌকা আটক করা হয়েছে, যেগুলো অবৈধভাবে পাথর পরিবহনে ব্যবহৃত হতো। বিশেষ কিছু অভিযানে সেনাবাহিনীর সহায়তায় ফতেহপুর, লামাশ্যামপুর ও সারি নদীর পাড়ে পরিত্যক্ত গোডাউনে বিপুল পরিমাণ ফেয়ারনেস ক্রিম, জিলেট বেøড ও চা-পাতা উদ্ধার করা হয়।
এসব অভিযানের মধ্যে সবচেয়ে বড় চালানটি আটক করা হয় গত ১৮ জুলাই। ওই দিন ৬ কোটি টাকার পণ্য জব্দ করতে সক্ষম হয় সীমান্তের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বাহিনীটি। আর দ্বিতীয় বড় চালানটি ধরা পড়ে ২৪ জুলাই। সেখানে ছিলো ০৫ কোটি ১২ লাখ টাকার মালামাল। ৩ কোটি ২৬ লাখ টাকার আনুমানিক বাজারমূল্যের পণ্য গত শনিবার ২৬ জুলাই জব্দ করে বিজিবি। আর নতুন মাসের শুরুতেই আরো একটি অভিযানের খবর পাওয়া গেছে। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার জব্দ করা হয় ১ কোটি ৫৩ লাখ ৯৬ হাজার টাকার পণ্য।
তবে জুলাই মাসে কোন চোরাকারবারিকে আটক করতে পারেনি বিজিবি। অভিযান টের পেয়ে চোরাকারবারীরা পণ্য ফেলে পালিয়ে যায় বলে দাবি বিজিবির।
সিলেট ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজমুল হক বলেন, সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার, চোরাচালান প্রতিরোধ এবং মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিয়মিত টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি আরও শক্তিশালী করা হয়েছে। জব্দকৃত মালামালের বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সার্বিকভাবে জুলাই মাসজুড়ে পরিচালিত এ অভিযানে বিজিবির সক্রিয় উপস্থিতি এবং কার্যকর গোয়েন্দা নজরদারি সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন