৫ রানে ৭ উইকেট খুইয়ে অবিশ্বাস্য হার বাংলাদেশের

gbn

এভাবেও ম্যাচ হারা যায়! লক্ষ্য খুব বড় নয়, ২৪৫ রানের। এমন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১ উইকেটেই বোর্ডে ১০০ রান। একটা সময় মনে হচ্ছিল, সহজ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়বে বাংলাদেশ। কে জানতো, সামনে এমন কিছু অপেক্ষা করছে?

১ উইকেটে ১০০ থেকে ৮ উইকেটে ১০৫ রান। ৫ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে অবিশ্বাস্য এক ধস বাংলাদেশের ইনিংসে। সেই ধস নিশ্চিত করলো বড় হার।

 

কলম্বোতে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার কাছে ৭৭ রানে হেরেছে নতুন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের দল। তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে লঙ্কানরা।

লক্ষ্য ২৪৫। পারভেজ হোসেন ইমন ওয়ানডে অভিষেকে শুরুটা ভালোই করেছিলেন। কিন্তু মাথা গরম ব্যাটিংয়ের অভ্যাস থেকে বের হতে পারলেন না। ফলে ১৩ রানেই থামতে হলো তাকে। ১৬ বল খেলে ৩টি বাউন্ডারি হাঁকান বাঁহাতি এই ওপেনার। ২৯ রানে ভাঙে ওপেনিং জুটি।

 

এরপর তানজিদ তামিম আর নাজমুল হোসেন শান্ত জুটি গড়েন। তাদের বল সমান ৭১ রানের জুটিটি ভেঙেছে শান্তর রানআউটে। ডিপমিডউইকেটে ঠেলে দুই রান নিতে গিয়ে ভুল করেন শান্ত, ২৬ বলে ২ চারে করেন ২৩।

শান্ত আউট হওয়ার পরই অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ধস। ব্যাটাররা কেবল এসেছেন আর হাজিরা দিয়ে চলে গেছেন। ৫ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যেন দেখিয়ে দিয়েছে, জিততে না চাইলে কোনোভাবেই জেতানো যায় না!

লিটন দাস ০ রানে হাসারাঙ্গার বলে এলবিডব্লিউ। দুই বল পরে সাজঘরে তানজিদ তামিমও। ৬১ বলে ৯ চার আর ১ ছক্কায় ৬২ রানের ইনিংস খেলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। কামিন্দু মেন্ডিসের বলে বোল্ড হন তাওহিদ হৃদয়। হাসারাঙ্গার ঘূর্ণিতে মেহেদী হাসান মিরাজ এলবি ০ রানেই।

 

ব্যাটারদেরই যখন এই অবস্থা। তানজিম সাকিব (১), তাসকিন আহমেদের (০) মতো লোয়ার অর্ডার আর টিকবেন কীভাবে! তানভীর ইসলাম করেন ৫ রান।

জাকের আলী একটা প্রান্ত ধরে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গেছেন। ফিফটিও করেন তিনি। শেষ ব্যাটার হিসেবে জাকের আউট হন ৬৪ বলে ৪টি করে চার-ছক্কায় ৫১ করে।

লঙ্কান লেগস্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ১০ রানে নেন ৪টি উইকেট। ৩ উইকেট পান কামিন্দু মেন্ডিস।

 

এর আগে চারিথ আসালাঙ্কার দায়িত্বশীল এক সেঞ্চুরির পরও ৪৯.২ ওভারে ২৪৪ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা।

আজ বুধবার কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেয় শ্রীলঙ্কা। শুরু থেকেই শক্ত হাতে বোলিং করতে থাকেন দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও তানজিম হাসান সাকিব। যে কারণে উইকেট পেতেও দেরি হয়নি তাদের।

টেস্টে বাংলাদেশকে ভুগিয়েছেন শ্রীলঙ্কার ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। এবার লঙ্কান ব্যাটারকে কোনো সুযোগই দেয়নি বাংলাদেশ। খালি হাতে তাকে ফিরিয়েছেন টাইগার পেসার তানজিম হাসান সাকিব। ৮ বলে ০ রানে সাজঘরে ফেরেন নিশাঙ্কা।

 

ইনিংসের চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে নিশাঙ্কাকে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের ক্যাচ বানান সাকিব। ব্যাক অব লেন্থের বলে কাট করতে গিয়েছিলেন লঙ্কান ওপেনার। কিন্তু ব্যাটের বাইরের পাশ ঘেঁষে বল চলে যায় লিটনের গ্লাভসে।

পরের ওভারে আরেক ওপেনার নিশান মাদুশকাকে বোল্ড করেন তাসকিন আহমেদ। ১৩ বলে ৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ১১ রানে ২ উইকেট হারায় লঙ্কানরা।

তাসকিন নিজের পরের ওভারে এসে কামিন্দু মেন্ডিসকেও আউট করেন। ইনিংসের সপ্তম ওভারের প্রথম বলে তাসকিনকে মিডঅফে মাথার ওপর দিয়ে মারতে চেয়েছিলেন কামিন্দু। কিন্তু বল সেভাবে ভাসেনি, সেখানে ফিল্ডিং করা মেহেদী হাসান মিরাজের নাগালের মধ্যে পড়ে যায়।

 

দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেননি মিরাজ। কামিন্দুর সহজ ক্যাচ তালুবন্দি করে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। দলীয় ২৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে শ্রীলঙ্কা। এরপর হাল ধরেন চারিথ আসালাঙ্কা আর কুশল মেন্ডিস। লঙ্কানদের অনেকটা পথ এগিয়ে দেন তারা।

বেশ ভালো টার্ন পাচ্ছিলেন তানভীর ইসলাম। বেশ কয়েকবার ব্যাটারকে পরাস্ত করেন। অবশেষে ওয়ানডে অভিষেকে দ্বিতীয় ওভারে উইকেট তুলে নেন বাঁহাতি এই স্পিনার।

তানভীরের ঘূর্ণিতে পা পেতে দিয়ে এলবিডব্লিউ হয়েছেন কুশল মেন্ডিস। বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলছিলেন তিনি। তবে ৪৩ বলে ৪৫ রানে থামতে হয়েছে তাকে। চারিথ আসালাঙ্কার সঙ্গে ৭৭ বলে ৬০ রানের জুটি ভাঙে তাতে। ৮৯ রানে ৪ উইকেটের পতন ঘটে শ্রীলঙ্কার।

 

জুটি গড়ে উঠছিল আবার। ৩২তম ওভারে পার্টটাইম অফস্পিনার নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে বল তুলে দিলেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম বলেই শান্ত হজম করেন বাউন্ডারি। তবে দুই বল পর এনে দেন উইকেট।

শান্তকে ডাউন দ্য উইকেটে হাঁকিয়ে লংঅনে তানজিম হাসান সাকিবের সহজ ক্যাচ হন জানিথ লিয়ানাগে। ৪০ বলে তিনি করেন ২৯ রান। আসালাঙ্কার সঙ্গে ৭৬ বলে ৬৪ রানের জুটি ভাঙে তাতে।

এরপর সেট হয়ে যাওয়া মিলান রথনায়েকেকে (২২) বোল্ড করেন তানজিম সাকিব। হাসারাঙ্গাকেও ব্যক্তিগত ২২ রানেই সাজঘরের পথ দেখান তাসকিন। একই ওভারে মাহিশ থিকশানাকেও (১) তুলে নেন এই পেসার।

তবে চারিথ আসালাঙ্কাকে ঠেকানো যায়নি। দেখেশুনে ঠাণ্ডা মাথায় খেলে ১১৭ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। এটি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি। ইনিংসের শেষ ওভারে তাকে ফেরান তানজিম সাকিব। ১২৩ বলে ১০৬ রানের ইনিংসে ৬টি চার আর ২টি ছক্কা হাঁকান আসালাঙ্কা।

 

 

 

তাসকিন আহমেদ ৪৭ রানে ৪টি এবং তানজিম সাকিব রানে নেন ৪৫ রানে নেন ৩টি উইকেট।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন