ছবিটিতে নেই সুপারস্টারের উপস্থিতি। তেমন কোনো ঝাঁকঝমক প্রচারণাও ছিল না। একদম নতুন দুই মুখ হাজির হয়েছেন এতে জুটি হিসেবে। তবুও এ সিনেমা কেন এত জনপ্রিয়তা পেল? কেন এভাবে বাজিমাত করলো বক্স অফিসে- সেই আলোচনা চলছে সর্বত্র।
নবাগত আহান পান্ডে ও অনীত পড্ডার অভিনয়ে মোহিত সুরির পরিচালনায় নির্মিত হয়েছে রোমান্টিক সিনেমা ‘সাইয়ারা’। ১৮ জুলাই মুক্তির পর থেকেই বলিউডজুড়ে আলোড়ন তুলেছে ছবিটি। মাত্র ১১ দিনেই ৪৫ কোটি রুপি বাজেটের এই ছবি আয় করে ফেলেছে রেকর্ড ৩৭৩ কোটি রুপি।
বলিউড যখন দক্ষিণী ছবির দাপটে ধুঁকছে, ঠিক তখনই দুই নতুন মুখ আর স্বল্প বাজেট নিয়ে নির্মিত এই ছবির অভাবনীয় সাফল্য অবাক করেছে সবাইকে। ‘সাইয়ারা’ এতটা জনপ্রিয় হলো কেন? কী এমন আছে সিনেমাটিতে?
সাধারণ গল্পের অসাধারণ উপস্থাপন
অনেকেই মনে করছেন, সাধারণ গল্পের অসাধারণ উপস্থাপন সিনেমাটিকে অনন্য মাত্রা দিয়েছে। দর্শকের কাছে উপভোগ্য করে তুলেছে। সিনেমাটির গল্প একেবারেই পরিচিত। তরুণ বয়সের প্রেম, আবেগ আর হৃদয়ভাঙা মুহূর্ত। কিন্তু মোহিত সুরির কৌশলী নির্মাণে তা হয়ে উঠেছে জাদুকরী। ‘সাইয়ারা’ প্রেমকে নতুন সংজ্ঞা দেয়নি, বরং চিরন্তন ভালোবাসার আবেগকে ছুঁয়েছে সহজ অথচ গভীরভাবে।
‘সাইয়ারা’ ভিন্নধর্মী কোনো থ্রিলার নয়, সুইস ভ্যালির রোমান্স কিংবা সুপারহিরো যুদ্ধও নয়। এটি দুই সাধারণ মানুষের ভালোবাসার গল্প, যারা শুধু ভালোবেসে বেঁচে থাকতে চায়। চরিত্র দুটো বাস্তব, তাদের স্বপ্ন-ভয়-ভাঙাগড়ার গল্পে নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন দর্শকরা।
সংগীতের জাদু
অনেকে দাবি করছেন, ‘সাইয়ারা’র সবচেয়ে বড় শক্তি এর সংগীত। নির্মাতা মোহিত সুরি প্রায় পাঁচ বছর সময় নিয়ে গানগুলো বেছে নিয়েছেন। প্রতিটি সুর যেন একটি করে কবিতার পঙ্ক্তি, যা দর্শকের মনে আবেগের ঢেউ তোলে। এ কারণেই সংগীতপ্রেমী দর্শক ছবির সঙ্গে গভীরভাবে একাত্মতা বোধ করছেন।
নতুন প্রজন্মের মন ছুঁয়েছে
এই সিনেমা জেনারেশন জেড অর্থাৎ বর্তমান তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে কথা বলে। ফোনে কনটেন্ট দেখা অভ্যস্ত তরুণরা বড় পর্দায় ফিরেছেন। শুধু প্রচারণায় নয়, বরং আবেগে টানেই তারা হলমুখী হয়েছেন। সিনেমাটি তাদের ট্রমা, ভালোবাসা ও জীবনের জটিল বাস্তবতাকে স্পর্শ করেছে।
রোমান্স, রোমান্টিকতা এবং বাজিমাত
বলিউড সবসময়ই রোমান্টিক ঘরনাকে দারুণভাবে গ্রহণ করেছে। এভাবেও বলা যায় রোমান্টিক গল্পে বলিউড অনেক বেশি সাফল্য পেয়েছে। শাহরুখ খানের মতো কিং খানেরও দেখা মিলেছে রোমান্টিক ধারাতেই। অনেকদিন পর বলিউড একটা নিটোলে প্রেমের গল্পে ফিরেছে ‘সাইয়ারা’ দিয়ে। ‘আশিকি’, ‘রকস্টার’, ‘বীর-জারা’, ‘সনম তেরি কসম’- এই ছবিগুলো বলিউডে প্রেমের ধারাকে প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেই ধারা অনেকদিন অনুপস্থিত ছিল। ‘সাইয়ারা’ সেই শূন্যস্থান পূরণ করেছে এবং দর্শক যেন আবার খাঁটি প্রেমের গল্পে ফিরে গেছেন।
সব মিলিয়ে ‘সাইয়ারা’ দেখিয়েছে যদি গল্প খাঁটি হয়, সংগীত হৃদয় ছুঁয়ে যায়, আর নির্মাণে আবেগ থাকে, তবে দর্শক তা সাদরে গ্রহণ করে। সম্ভবত এ কারণেই এত জনপ্রিয় হয়েছে ‘সাইয়ারা’।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন