ন্যায়ভিত্তিক সমাজে নির্যাতনের কোনো স্থান নেই: প্রধান উপদেষ্টা

gbn

ন্যায়ভিত্তিক সমাজে নির্যাতনের কোনো স্থান নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

জাতিসংঘ ঘোষিত ২৬ জুন আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী দিবস উপলক্ষে বুধবার (২৫ জুন) এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

 

ড. ইউনূস বলেন, নির্যাতন মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং মানুষের মর্যাদার ওপর সরাসরি আঘাত। এটি কোনো ন্যায়ভিত্তিক সমাজে স্থান পেতে পারে না এবং কোনো পরিস্থিতিতেই এটি বরদাশত করা উচিত নয়।

তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নির্যাতনের বীভৎসতার শিকার সাহসী ও দৃঢ় সারভাইভার্সদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

 

বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার একনায়কতান্ত্রিক শাসনামলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, ভিন্নমতাবলম্বী এবং দুর্বল জনগোষ্ঠীর ওপর দমন-পীড়নের হাতিয়ার হিসেবে নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনকে ব্যবহৃত করা হয়। আইন ও বিচার ব্যবস্থার অপব্যবহার, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গ্রেফতার ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতন সেসময় ছিল নিয়মিত ঘটনা, যা বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা, রাজনীতি এবং সমাজের ভিত নষ্ট করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, এই অন্তর্বর্তী সরকার নির্যাতনের এ সংস্কৃতি চিরতরে বিলুপ্ত করার দৃঢ় সংকল্প নিয়ে কাজ করছে। সরকারের তিনটি প্রধান লক্ষ্য—পূর্ববর্তী সরকারের অপরাধীদের বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন—এই দুঃসহ অতীত থেকে দেশকে পুনর্গঠনের রূপরেখা।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে মানবাধিকার ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র গঠনে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকার প্রথম যে আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোর একটি স্বাক্ষর করেছে তা হলো সব ব্যক্তির জবরদস্তিমূলক গুম থেকে সুরক্ষা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদ (আইসিপিইডি)। এটি জোরপূর্বক গুম বা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গোপন আটকের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিশ্রুতি স্পষ্ট করে।

 

এ সনদের স্বাক্ষর ভবিষ্যতে জাতীয় আইন প্রণয়নের জন্য পথপ্রদর্শক এবং নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমাদের আইনি অবস্থানকে সুদৃঢ় করে।

বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার জবরদস্তিমূলক গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন গঠন করেছে, যা নির্যাতন, গুম এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আটক সংক্রান্ত বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ তদন্তে স্বাধীনভাবে কাজ করবে। কমিশনের দায়িত্ব হলো সত্য উদঘাটন, দোষীদের শনাক্তকরণ এবং ক্ষতিপূরণের উপায় সুপারিশ করা।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, পুলিশ ও বিচার প্রশাসনে গভীর সংস্কার শুরু হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, কারা প্রশাসন এবং বিচারকদের জন্য মানবাধিকার, নৈতিকতা ও অহিংস তদন্ত পদ্ধতি বিষয়ক প্রশিক্ষণ চালু হয়েছে। আটকের পরবর্তী বিচারিক তদারকি জোরদার করা হয়েছে। এখন থেকে প্রতিটি হেফাজতে নেওয়া এবং জিজ্ঞাসাবাদের ঘটনা নথিভুক্ত করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, এই পদক্ষেপগুলো যাত্রার সূচনা মাত্র। আমাদের লক্ষ্য শুধু ভবিষ্যতের নির্যাতন রোধ করা নয়—মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা।

নির্যাতনের শিকার সব মানুষের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে তিনি বলেন, আমরা তাদের যন্ত্রণাকে স্বীকৃতি দিচ্ছি, বিচার প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করছি এবং দৃঢ়ভাবে বলছি—আর কখনো নয়।

তিনি আরও বলেন, এই দিন হোক একটি বাঁকবদলের সূচনা—বাংলাদেশের জন্য এবং বিশ্বের প্রতিটি দেশের জন্য যারা ন্যায়, মর্যাদা ও মানবিকতার ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার সংকল্প নিয়েছে।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন