অক্সফোর্ডের টিকা নিরাপদ: ডব্লিউএইচও

জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা আবিষ্কৃত করোনাভাইরাস টিকা প্রয়োগ স্থগিত না করার আহবান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত টিকাটি রক্ত জমাট বাধঁতে সহায়তা করে, এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

 

ইউরোপের কয়েকটিসহ বেশ কিছু দেশ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়া স্থগিত করার সিদ্ধান্তের পর সংস্থাটির পক্ষ থেকে এমন আহবান আসলো।

সংস্থাটি বলছে, এ টিকার সাথে ব্লাড ক্লট বা রক্ত জমাট বাঁধার কোন প্রমাণ তারা পায়নি।

জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও স্পেনও তাদের পূর্বসতর্কতার অংশ হিসেবে এ টিকা প্রয়োগ স্থগিত রাখার কথা জানিয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার টিকা বিশেষজ্ঞরা মঙ্গলবার এ বিষয়ে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য আলাদাভাবে বৈঠকে বসবে ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সি (ইএমএ) এবং এ বিষয়ে বৃহস্পতিবারের মধ্যে একটি সিদ্ধান্ত তারা নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই কয়েকটি ঘটনার বাইরে সাধারণ মানুষের মধ্যে এ ধরণের রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনার আর কোন খবর পাওয়া যায়নি।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের প্রায় এক কোটি সত্তর লাখ মানুষ ইতোমধ্যেই অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা গ্রহণ করেছে।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলছে, এর মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা চল্লিশটিরও কম।

যে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে জার্মানির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সোমবার জানিয়েছে দেশটির ভ্যাকসিন কর্তৃপক্ষের পরামর্শ অনুযায়ী তারা তাৎক্ষণিকভাবে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়া বন্ধ করতে যাচ্ছে।

দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ সিদ্ধান্তের কারণ হলো সেরেব্রাল ভেইন থ্রমবোসিস-এর কয়েকটি খবর যার সাথে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার যোগসূত্র আছে’।

‘নতুন ঘটনা গুলোর প্রেক্ষাপটে পল এরলিখ ইন্সটিটিউট (জার্মানি ভ্যাকসিন কর্তৃপক্ষ) পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে টিকাদান স্থগিত রাখার সুপারিশ করেছে’।

তিনি বলেন এ সিদ্ধান্ত ‘রাজনৈতিক’ নয়।

‘আমরা সবাই এ সিদ্ধান্তের পরিণতি সম্পর্কে সচেতন এবং আমরা খুব সহজেই এ সিদ্ধান্ত নেইনি,’ তিনি বলছিলেন। এর পরেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ নতুন সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত টিকাদান স্থগিত ঘোষণা করেন।

অন্যদিকে ইতালি মেডিসিন এজেন্সি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার কয়েকটি ব্যাচের ওপর নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়েছে। আর স্পেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন তার দেশে টিকাদান অন্তত দু সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখবে।

এর আগে নেদারল্যান্ডও ২৯ মার্চ পর্যন্ত এ টিকা দেয়া স্থগিত করেছে। অস্ট্রিয়াসহ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ পূর্বসতর্কতার অংশ হিসেবে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার নির্দিষ্ট ব্যাচের টিকা দেয়া স্থগিত করেছে। তবে থাইল্যান্ড মঙ্গলবার থেকে এ টিকা দেয়া আবার শুরুর ঘোষণা দিয়েছে।

অন্যদিকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আশ্বস্ত করেছেন যে অ্যাস্ট্রাজেনেকাসহ যেসব টিকা সেখানে দেয়া হচ্ছে তার সবই নিরাপদ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যা বলছে সংস্থাটির মুখপাত্র ক্রিস্টিয়ান লিন্ডমেয়ার বলেছেন খবরগুলো তারা তদন্ত করেছেন।

তিনি বলেছেন তাদের সুপারিশ শিগগিরই জানানো হবে।

‘তবে আজ পর্যন্ত এসব ঘটনার সাথে টিকার কোন সম্পর্ক পাওয়া যায়নি এবং ভাইরাস থেকে গুরুতর রোগ থেকে রক্ষা ও জীবন বাঁচানোর জন্য টিকা দেয়া অব্যাহত রাখা গুরুত্বপূর্ণ’।

ওদিকে যুক্তরাজ্যের মেডিসিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা জনগণকে টিকা নেয়া অব্যাহত রাখতে অনুরোধ করেছে।

বাংলাদেশে চলবে বাংলাদেশের স্বাস্ব্য সচিব মোঃ আবদুল মান্নান বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ‘বাংলাদেশ আমরা টিকা স্থগিতের মতো কোন সিদ্ধান্ত পৌঁছেনি। যে পাঁচ-ছয়টি বা সাতটি দেশে তারা বন্ধ করেছে, তারা সন্দেহের বশবর্তী হয়ে সেটা করেছে। এখন পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা অন্য দেশগুলো থেকে লিখিতভাবে কোন বারণ করেনি।’

‘অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় যে উপাদানগুলো রয়েছে, রক্ত জমাট বাঁধার সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক নেই বলে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন। যেহেতু সম্পর্ক নেই, আমরা তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশে এই কার্যক্রম বন্ধ করতে পারি না। কারণ বাংলাদেশের মতো দেশগুলো শতভাগ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল মেনে চলেছে’, স্বাস্থ্য সচিব বলেন।

‘অক্সফোর্ডের যে টিকা আমরা নিয়ে এসেছি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যদি আনুষ্ঠানিকভাবে বলে যে, এটা দেয়া যাবে না, এটার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, আনুষ্ঠানিকভাবে যদি তারা আমাদের চিঠি দেয়, তাহলে তাহলে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। আমরা অপেক্ষায় আছি।’ বলছেন মি. মান্নান।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন